4:06 pm , May 11, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হারিছুর রহমান হারিছের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছে অপর তিন প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, দলের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি, টর্চার সেলে নিয়ে ত্যাগী নেতাদের মারধর, ছাত্রলীগ নেতার হত্যাকারীকে দলে যোগদান করানো সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
বরিশাল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গৌরনদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন মিয়ার লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, হারিছুর রহমান কোনদিন ছাত্রলীগের রাজনীতি করে নাই। ছাত্র জীবনে সে ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। ২০০১ সালের পরে সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপনের হাতধরে বিএনপিতে যোগদান করতে যায়। কিন্তু বিএনপি তাকে গ্রহন করেনি। ২০০৬ সালে হারিছুরের বড় ভাই কুয়েত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমানের বিশেষ সুপারিশে গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হিসেবে পদায়ন করা হয়। ২০১১ সালে প্রথম মেয়র এবং ২০১২ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ পেয়ে যায়। এরপর আর তাকে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। পৌর মেয়র ও একাধারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় গৌরনদীতে একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। ফলশ্রুতিতে টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, বাড়ি দখল, নদীর বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি ও সংখ্যালঘু নির্যাতন সহ নানাবিধ অপকর্মের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্তের মালিক বনে গেছে। এ কারনে সে (হারিছুর) আওয়ামী লীগের ত্যাগি নেতাকর্মীদের সহ্য করতে পারেনা। নিজ বাড়িতে টর্চার সেল তৈরি করে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে গৌরনদীর প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা কালিয়া দমন গুহ’র বড় ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুকে দুইবার এবং ছোট ছেলে যুবলীগ নেতা সলিল গুহ পিন্টুকে তিনবার হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে হারিছুর রহমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হাওলাদারকে অপহরণ চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে হারিছ বাহিনী। ২০০১ সালে ছাত্রদলের চিহ্নিত ক্যাডার নয়ন প্যাদা সহ তার সহযোগিরা সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের তৎকালীণ প্রচার সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বুলেটকে হত্যা করে। হারিছুর রহমান ছাত্রলীগ নেতা বুলেটের সেই হত্যাকারী নয়ন প্যাদাকে আওয়ামী লীগে যোগদান করিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের লাঞ্চিত-অপমানিত করে বেড়াচ্ছে। হারিছুরের এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ আওয়ামী আদর্শের তার অন্য ভাইয়েরা করলে তাদেরকেও বাড়ি থেকে বিতারিত করেছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরে জুতা ও মূলা নিক্ষেপকারীদের সন্তানদের হারিছুরের নির্দেশে উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ দেওয়ারও অভিযোগ করা হয়। আবেদনে হারিছুরের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের তদন্ত করে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
হারিছুর রহমানের আপন ভাই বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তার ভাই হারিছুর রহমান গৌরনদীর দানব। আমাদের বাড়িটিকে চর্টার সেল বানিয়েছে। সেখানে এখনো রাতের বেলায় মানুষদের ধরে এনে অত্যাচার নির্যাতন করা হয়। তার (হারিছ) অপকর্মের জন্য আমরা বাড়িতে থাকিনা। আমাদের দক্ষিণবঙ্গের রাজনৈতিক অভিভাবককে বিতর্কিত করার জন্য সাবেক মেয়র (হারিছ) তার দুর্নীতি-অপকর্মকে চরিতার্থ করতে তার (আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ) নাম ভাঙ্গিয়ে গৌরনদীতে একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মানুষকে বিভ্রান্তর মধ্যে রেখেছে। উপজেলা নির্বাচনে সে (হারিছ) কাউকে সেন্টারে যেতে দেবেনা বলে ঘোষনা দিয়েছে। তার (হারিছ) সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পিটিয়ে জয়লাভ করবে। আমরা দানব মুক্ত গৌরনদী চাই। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত হারিছুর রহমানের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।