4:33 pm , May 8, 2024

সালাহ উদ্দিন রিপনের চমক
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সদর উপজেলায় চমক দেখিয়েছেন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা সালাহ উদ্দিন রিপন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এসআর সমাজ কল্যান সংস্থার চেয়ারম্যান সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হলেও উপজেলা নির্বাচনে তার চাচা আব্দুল মালেককে কাপ-পিরিচ প্রতীকে নির্বাচিত করতে কোন ধরনের বেগ পেতে হয়নি। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনায় তার কোন অস্তিত্ব না থাকলেও ভোটের মাঠে শেষ খেলায় তার চাচাকে বিজয়ী করে উপজেলাবাসীকে চমকে দিয়েছেন। সেই সাথে চমক দেখেছেন বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদরাও। আব্দুল মালেক একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। একই সাথে শিক্ষকদের কল্যানে বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নেন।
নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকে সেভাবে প্রচার-প্রচারনায় দেখা মেলেনি কাপপিরিচ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মালেকের। তবে তিনি প্রচার চালিয়েছেন ধীরগতিতে। প্রচার শুরুর পর থেকেই আলোচনায় ছিল আনারস, মোটরসাইকেল, ঘোড়া ও দোয়াতকলম। কাপপিরিচের কথা কারো মুখ থেকে সেভাবে শোনা যায়নি। প্রচার-প্রচারনায় ১০ ইউনিয়ন মাতিয়েছেন তারা। গতকাল নির্বাচনের দিনও ওই সকল প্রার্থীদের মধ্যে কে বিজয়ী হবে তা নিয়ে চলছিল চুলচেরা বিশ্লেষন। ফলাফল ঘোষনার পর জানা গেলো যাকে বিজয়ীর কাতারে কোনভাবেই আনা হয়নি সেই মালেকই হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এতে করে ওই সকল প্রার্থীদের পিছনে যে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিরা কাজ করেছেন তারা চমকে গেছেন। কোনভাবে তারা মানতে পারছেন না এ বিজয়।
দৈনিক পরিবর্তনের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে নবনির্বাচিত আব্দুল মালেক বলেন, সালাহ উদ্দিন রিপনের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। একই সাথে আমি ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকেও একই ধরনের সংগঠন পরিচালনা করে আসছি বছরের পর বছর ধরে। তবে আমি নির্বাচন করবো এ ধরনের কোন চিন্তা ছিল না। উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর রিপন আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলে। কিন্তু আমি কোনভাবেই রাজী হচ্ছিলাম না। তখন রিপন রেগে গিয়ে বলে তাহলে আমি দরিদ্রদের জন্য যে কাজ করে যাচ্ছি তা বন্ধ করে দেবো। এটা তার রাগের কথা ছিল। তাছাড়া আমার বয়স হয়েছে, সে কারনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পিছুপা হয়েছিলাম। কিন্তু কোনভাবে রিপন আমাকে ছাড় দিতে চায়নি। সে কারনে আমার উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি¦তায় আসা। আর আমার বিজয়ীদের নায়ক হচ্ছে সালাহ উদ্দিন রিপন। এখানে আমার তেমন কোন কৃতিত্ব নেই বলে দাবি করেন সাবেক এ প্রধানশিক্ষক। উপজেলাবাসী সংসদ নির্বাচনে সালাহ উদ্দিন রিপনকে বিপুল ভোট দিয়েছেন। আবার একইভাবে আমাকেও ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন। এ জন্য বরিশাল সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নবাসীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার প্রধান কাজ হবে ১০ ইউনিয়নবাসীর জন্য সমানভাবে কাজ করা। সরকার থেকে পাওয়া উন্নয়ন বরাদ্দ এবং আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকেও উন্নয়ন করা হবে। বিশেষ করে এসআর সমাজকল্যান সংস্থা থেকে হতদরিদ্রদের জন্য যে সকল কর্মসূচী চালু রয়েছে তা বলবৎ থাকবে। এছাড়াও হতদরিদ্রদের জন্য আরো কাজ করা হবে। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের আর্থিক উন্নয়ন এবং একই সাথে এলাকার উন্নয়ন করার চেষ্টা থাকবে। সরকারের বরাদ্দের একটি টাকাও লুটপাটের সুযোগ থাকবে না। আমি ১০ ইউনিয়নবাসীর প্রতি কমিটেট। এ কারনে আমার দায়িত্ব আরো বেশী।
বিজয়ের ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এসআর সমাজকল্যান সংস্থারন চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন রিপন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল নগরী থেকে শুরু করে সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নবাসীর সাথে রয়েছি। তাদের বিপদেআপদে কাছে থাকছি। তাদের চিকিৎসা থেকে শুরু করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় কোন বাধা সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছি। এভাবে তাদের সাথে গড়ে ওঠে সখ্যতা। নিজেদের মানুষ হিসেবে গ্রহন করেছেন তারা। আর তাদের অনুরোধ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। তারা চেষ্টা করেছে আমাকে নির্বাচিত করার। ভোট হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার একটি মাঠ। এখানে একজন বিজয়ী হবে। সেই বজয়ী না পেলেও আগামীতে আশা করছি বরিশালবাসী আমাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবে। আর ১০ ইউনিয়নবাসীর অনুরোধেই আমার চাচা আব্দুল মালেককে উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী করি। সে রাজী না হলেও পরবর্তীতে জোর করেই তাকে প্রার্থী করা হয়। আমাদের তেমন প্রচার-প্রচারনা না থাকলেও সাবেক শিক্ষক হিসেবে আমার চাচার বেশ নামডাক রয়েছে। সরকার কেন কোন ব্যক্তির কাছ থেকে আমাদের পরিবার কোনদিন একটি টাকাও নেয়নি। তাছাড়া আমাদের পরিবার সবসময় দরিদ্র মানুষের পাশে থাকে। দরিদ্রদের কাছে থেকে তাদের সকল সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে। যা উপজেলাবাসী প্রত্যক্ষভাবে দেখেছেন। এ কারনেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিয়ে আব্দুল মালেককে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। আমার চাচা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই সরকারি অনুদান আসুক আর নাই আসুক আমাদের নিজস্ব অর্থে এলাকার উন্নয়ন চলতে থাকবে।