4:12 pm , April 30, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নির্বাচন বয়কট করলেও বরিশাল সদর উপজেলার ভোটের মাঠে সক্রিয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পদধারী নেতাকর্মীরা কৌশলে তাদের অনুসারীদের বিভিন্ন প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারনায় নামিয়েছে। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছে, তাদের কোন নেতা কর্মী নির্বাচনে কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে জনসাধারনকে সম্পৃক্ত করতে লিফলেট বিতরন, বিএনপি নেতা কর্মীদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়া, কোন প্রার্থীকে সমর্থন না দেয়াসহ সার্বিকভাবে নির্বাচনী কর্মকা- থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠন এর কেউ নির্বাচনী কর্মকা-ে যুক্ত থাকার প্রমান পাওয়া গেলে তাহার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের এক বিএনপি নেতা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পদধারীর নেতারা প্রকাশ্যে কেউ নামেনি। কিন্তু তাদের অনুসারীরা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা করছে।
তার মতে পদবিধারী নেতাদের দলের প্রতি কোন দায় নেই। পদ নিয়ে নানা বানিজ্য করাই তাদের মুল উদ্দেশ্যে থাকে। তাই যে যেভাবে পারে বানিজ্য করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা জানিয়েছেন, সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সিংহভাগ নেতাকর্মীরা নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করছেন। গোপনে অনেক পদবিধারীর নেতারা বিভিন্ন প্রার্থীদের সাথে সভা করেন। প্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাদের সহায়তার আশ্বাস দিচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন নান্নুর বিরুদ্ধে সদর উপজেলার এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেয়া এবং সরাসরি কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যেই তার অনুসারীদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন এমন অভিযোগ এখন অনেকটাই সত্য বলে প্রমানিত হয়েছে। জেলা বিএনপির বেশির ভাগ নেতারাই এই বিষয়টি স্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, বিএনপির যে সব নেতৃবৃন্দ কাজ করছে তারা প্রতিদিনই নগদ টাকা নিয়েই কাজ করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সদর উপজেলার টুঙ্গীবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক হেলাল সিকদার লাল এক প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম করছেন। ইতিমধ্যে তিনি ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডে এক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন।
চাঁদপুরা ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক জব্বার সিকদার অন্তরালে থেকে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারনার জন্য তার অনুসারীদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, কোন নেতাকর্মী ভোটে কাজ করবে না। এমনকি যারা বিএনপিকে ভালোবাসে, সাধারন ভোটাররাও ভোট কেন্দ্রে যাবে না। কেউ গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দক্ষিন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড আবুল কালাম শাহীন বলেন, বিএনপির কোন পদবিধারীরা নির্বাচনের কোন কার্যক্রমে নেই। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেছে। আমরা কয়েক নেতাকে পর্যবেক্ষন করছি। বর্তমানে মোবাইলের যুগ। কোন পদবিধারী নেতা কোন প্রার্থীর পক্ষে দেখলেই ছবি তুলে অভিযোগ দিতে বলেছি। প্রমান পেলে ১২ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হোসেন খান বলেন, আমরা মিটিং করে সবাইকে বলে দিয়েছি। কেউ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। কেউ করলে প্রমান পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. বিলকিস জাহান শিরীন বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। তারপরেও বিএনপির কোন নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের নেতা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে তাহলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ্যাড. শিরীন বলেন, এই জন্য একটি মনিটরিং টিম রয়েছে। তারা ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মনিটরিং করছে। প্রমান পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।