প্রিজন সেলে আসামী হত্যার বিচার দাবীতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন প্রিজন সেলে আসামী হত্যার বিচার দাবীতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন - ajkerparibartan.com
প্রিজন সেলে আসামী হত্যার বিচার দাবীতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

4:22 pm , April 18, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন আসামীকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও ন্যায় বিচারের দাবি করেছে পরিবার। বৃহস্পতিবার বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রিজন সেলে হত্যার শিকার আসামী মো. মোতাহার হোসেনে ছেলে জাহিদুল ইসলাম।
তিনি আরো জানান, বাবাকে হত্যার ঘটনায় বোন বাদী হয়ে বরিশাল মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতেও মামলা করেছেন। মামলা তিন কারারক্ষীসহ ১২ জনকে আসামী করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে জাহিদুল ইসলাম জানান, বরগুনার বেতাগী উপজেলার নিজ বাড়ির প্রতিবেশিদের সাথে কলহ হয়। কলহের সময় প্রতিবেশি জালাল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় করা মামলার আসামী হিসেবে বরগুনা আদালতে বাবা মোতাহার হোসেন স্বেচ্ছায় হাজির হয়। আদালত তাকে বরগুনা কারাগারে প্রেরন করে। সেখানে গত ৩ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের মাধ্যমে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে এনে চিকিৎসা দেয়া হয়।
জাহিদুল অভিযোগ করেন, প্রিজন সেলে থাকা বাবা মোতাহার হোসেনের সাথে সাক্ষাত করতে এলে কারারক্ষী মিরাজসহ অন্যরা টাকা দাবি করে। টাকা না দেয়ায় তারা ক্ষুদ্ধ হয়। প্রতিপক্ষের সাথে হাত মিলিয়েছে কারারক্ষীরা। পারিবারিক শত্রু নজরুল, মোস্তফা ও শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন এসে প্রিজন সেলের সামনে ঘোরাঘুরি করে বাবাকে হত্যার হুমকি দেয়। গত ১৩ এপ্রিল বাবার সাথে দেখা করতে এলে তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন।
জাহিদের অভিযোগ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কারারক্ষীদের সাথে হাত মিলিয়ে আরেক আসামী দিয়ে তার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এক কারারক্ষী চাবি নিয়ে বাহিরে গিয়েছে। অন্যজন ঘুমিয়ে ছিলো।
ঘটনার পর ময়না তদন্ত করার পূর্বে কারারক্ষীদের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট অবহেলার কারনে এ ঘটনা ঘটেছে স্বীকার করেছেন এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে আশস্থ করেছেন জানিয়েছেন জাহিদ।
তিনি আরো তার বোন নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে বরিশাল মহানগর অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নালিশী মামলা করেছেন।
নালিশী মামলায় হত্যাকারী তরিকুল ইসলামকে প্রধান করা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিবেশি প্রতিপক্ষ নজরুল ইসলাম, মোস্তফা হাওলাদার, ফারুক, সফিকুল ইসলাম, নাসিরউদ্দিন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হাওলাদার ও কালাম হাওলাদার। মামলায় বিবাদী করা কারারক্ষী নামধারীরা হলো- আ. সালাম ও মিরাজ। অপরজন অজ্ঞাতনামা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, হত্যার ঘটনায় একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় একজনকে আসামী করা হয়েছে। কিন্তু বাদী পক্ষের অভিযোগ ওই এক আসামী বাদীর প্রতিপক্ষের পরিকল্পনায় ও প্ররোচনায় এবং কারারক্ষীদের অবহেলায় হত্যাকান্ড করেছে। তাই তাদের আসামী করে নালিশী অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বরিশালের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. হাবিবুর রহমান চৌধুরী নালিশী অভিযোগ আমলে নিয়েছেন। পরবর্তিতে তিনি আদেশ দেবেন।
গত ১৪ এপ্রিল সকালে প্রিজন সেলে তরিকুল ইসলাম নামে এক আসামী অপর দুই আসামী মোতাহার ও অজিত কুমার মন্ডলের সাথে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে তরিকুল উত্তেজিত হয়ে হত্যা করার উদ্দেশ্যে স্যালাইনের ষ্ট্যান্ড দিয়ে মোতালেব ও অজিত পিটিয়েছে। কর্তব্যরত কারারক্ষীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ডে নিয়ে আহত দুই আসামীকে ভর্তি করে। এর মধ্যে মোতাহের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় পরদিন বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. নুর-ই আলম সিদ্দিকী বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করে। মামলায় পটুয়াখালী গলাচিপা থানার হত্যা মামলার আসামী তরিকুল ইসলামকে (২৫) একমাত্র আসামী করা হয়েছে। তরিকুল গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের মোশারেফ সিকদারের ছেলে।
নিহত মো. মোতাহার হোসেন (৬০) বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার বুড়া মজুদার গ্রামের রফিজউদ্দিনের ছেলে।
আহত অবস্থায় অপর আসামী অজিত মন্ডল হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলায় আহত চুরি মামলার আসামী অজিত মন্ডল মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর গ্রামের গৌরাঙ্গ মন্ডলের ছেলে। সে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।##

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT