4:21 pm , April 15, 2024

হেলাল উদ্দিন ॥ পরীক্ষা তো দূরে থাক আবেদনের মেয়াদই শেষ হয়নি। এরই মধ্যে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন অফিসে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বানিজ্যে নেমেছে একটি মহল। আবেদনকারীর কোন যোগ্যতা লাগবে না, শুধু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেই দায়িত্ব শেষ। চাকরি পাইয়ে দিতে বাকি দায়িত্ব নাকি ওই মহলটির। অবশ্য এ দায়িত্ব পালনের জন্য চাকরি প্রত্যাশীকে গুনতে হবে কয়েক লাখ টাকা। আর এজন্য আবেদনকারী প্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকাও গ্রহণ শুরু করেছে ওই চক্রটি। সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের একাধিক কর্মচারী,ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতার নাম এসেছে এ নিয়োগ বানিজ্যের সাথে। এর বাইরে স্বাস্থ্য সেক্টরের সাথে জড়িত একাধিক কর্মকর্তা ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের নামও। তবে এসব চক্রকে সর্তক করে দিয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলছেন, নিয়োগ হবে নিয়োগের মত। আমি যদি নিয়োগ পর্যন্ত এই চেয়ারে থাকি এক চুল পরিমান অনিয়ম-দুর্নীতি হতে দেব না। একই কথা বলেছেন বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মারিয়া হাসান। তিনি বলেন, নিয়োগে কোন ধরনের দুর্নীতকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। সম্পূর্ন যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে জানিয়ে তিনি আবেদনকারীদের পড়াশুনা করার আহবান জানান।
গত ৪ এপ্রিল পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ৭ ক্যাটাগরিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির মোট ১০০ জন জনবল নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়। আবেদন করা যাবে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই অপতৎপরতা শুরু করে বেশ কয়েকটি মহল। পদ অনুযায়ী ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। আর অগ্রিম হিসাবে নেওয়া হচ্ছে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা। ক্ষেত্র বিশেষ অর্থের নিশ্চয়তা হিসাবে প্রার্থীকে চেকও প্রদান করা হচ্ছে। চক্রটির একাধিক সদস্য ইতোমধ্যে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ জন প্রার্থীর কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ গ্রহণ করেছে।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন মারিয়া হাসান বলেন, আমার অফিসের কেউ যদি এই চক্রের সাথে জড়িত থাকে প্রমানসহ নামটি জানাবেন, আমি ব্যবস্থা নেব। নিয়োগ হবে সম্পূর্ন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, আমার সাফ কথা নিয়োগ হবে নিয়োগের মত। আমি চেয়ারে থাকা অবস্থায় নিয়োগে কোন অনিয়ম-দুর্নীতি হবে না এতটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি। কোন প্রার্থী যদি কারো সাথে লেনদেন করে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে। প্রসঙ্গত ২০০৮ সালের পর বরিশাল জেলা সিভিল সার্জনের অধীনে এটিই সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো।