বরিশালের জনজীবনে বিপর্যয় বরিশালের জনজীবনে বিপর্যয় - ajkerparibartan.com
বরিশালের জনজীবনে বিপর্যয়

4:30 pm , April 6, 2024

অব্যাহত তাপ প্রবাহের সাথে বিদ্যুৎ ঘাটতি

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ অব্যাহত তাপ প্রবাহের চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ ঘাটতির ফলে বরিশালে সুস্থ্য স্বাভাবিক জনজীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। রমজানের শেষের দিকে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ২-৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস ওপরে উঠে যাবার সাথে চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ঘাটতি জনজীবনে দুর্ভোগের মাত্রা বৃদ্ধি করছে। আর তাপ প্রবাহের সাথে বিদ্যুৎ সংকট ঈদের বাজারেও যথেষ্ট বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
আবহাওয়া বিভাগ ৯ মার্চ থেকে পরবর্তী ৫ দিন তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধির কথা জানিয়ে রেখেছে। এরআগে ৩ মার্চ থেকে পরবর্তী ৩দিন বরিশাল সহ কয়েকটি এলাকায় তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা বলা হয়েছিল।
চলতি এপ্রিল মাসে বরিশালে সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৩.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের স্থলে শুক্রবারে ৩৪.২ এবং শনিবার দুপুরে প্রায় ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে যায়। আর সকালে সর্বনি¤œ স্বাভাবিক তাপমাত্রা ২৩.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের স্থলে শনিবার তা ছিল ৪.২ ডিগ্রী বেশী, ২৭.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। চৈত্রের শেষ দশকের বসন্তের এ সময়ে তাপমাত্রার সাথে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের বিষয়টি জনজীবনে নতুন সংকট তৈরী করছে।
অপরদিকে চলমান তাপ প্রবাহের মধ্যে বিদ্যুৎ ঘাটতির এ সময়ে ‘হিট স্ট্রোক’ এর আশংকা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। রোজাদারদের ছাড়াও শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের যতটা সম্ভব রোদ ও গরম এড়িয়ে চলা সহ ইফতারী থেকে সেহরী পর্যন্ত ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে বেশী পরিমানে পানি ও খাবার স্যালাইন পান এবং তাজা ফলমুল গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যায় ইফতারীর সাথেই বিদ্যুৎ ঘাটতি অনেক এলাকায় তারাবীর সময়ও অব্যাহত থাকছে।
বাড়তি তাপমাত্রার সাথে অন্ধকার আর গরমে তারাবীর নামাজ আদায় করতে গিয়ে মুসল্লীদের দুর্ভোগ সব সীমা ছাড়াচ্ছে। শহরের চেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পেরিয়ে লোডশেডিং তুলনামূলক বেশী বলেও অভিযোগ রয়েছে। সাথে বিতরণ ব্যবস্থার গলদে বরিশাল মহানগরী সহ সন্নিহিত এলাকাগুলোতে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনজীবনে দুর্ভোগ বৃদ্ধি করছে।
গত সোমবার বরিশাল ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনে একটি ‘কারেন্ট ট্রান্সফর্মার-সিটি’তে আকস্মিক বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকান্ডের পরে মহানগরীতে প্রায় একঘন্টা এবং  ঝালকাঠী জেলা সদরসহ পুরো এলাকায় পৌনে ৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। পরে বিকল্প ব্যবস্থায় সরবরাহ শুরু সম্ভব হলেও বরিশাল মহানগরীর বিভিন্ন ফিডারগুলো সন্ধ্যা থেকে কয়েকবারই ট্রিপ করে। এরমধ্যে হাতেম আলী কলেজ ফিডারটি ইফতারের পর পরই ৪বার ট্রিপ করায় রোজাদারদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। সুষ্ঠু রক্ষনাবেক্ষন ও যথাযথ নজরদারীর অভাবে বরিশাল মহানগরী ও সিন্নিহিত এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা নাজুক।
বরিশাল অঞ্চলে পল্লী বিদ্যুৎ এবং পশ্চিম জোন বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানী-ওজোপাডিকো’র প্রায় ১ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে গত কয়েকদিন ধরে সান্ধ্য পীক আওয়ারে ৩শ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ রেশনিং করতে হচ্ছে। জ¦ালানীর অভাবে বরিশাল অঞ্চলের বেশ কয়েকটি বেসরকারী বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারছেনা। ফলে গত মাসের শেষ ভাগ থেকেই সান্ধ্য পীক আওয়ার থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলে চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ রেশনিং করতে হচ্ছে। আসন্ন গ্রীষ্মে চাহিদা বৃদ্ধির সাথে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির আশংকার কথা জানিয়েছেন পিজিসিবি, ওজোপাডিকো এবং পল্লী বিদ্যুতের দায়িত্বশীল মহল।
তরল জ¦ালানী সংকট মোকাবেলায় বরিশালে সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার সহ পিডিবি’র পশ্চিম জোনে সরকারী ও আধা সরকারী বেশ কয়েকটি ইউনিটের উৎপাদন সীমিত করতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর রেশ ধরে জাতীয় গ্রীড থেকে চাহিদার বিপরীতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত রেশনিং করতে হচ্ছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে। যা আসন্ন গ্রীষ্মে আরো বৃদ্ধির আশংকার কথা জানিয়েছে একাধিক দায়িত্বশীল মহল।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT