3:32 pm , February 29, 2024

বর্ষা মৌসুমের আগেই বেশিরভাগ খাল সচল হবে
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বর্ষা মৌসুম আসার আগেই নগরীর সাতটি খাল পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় ব্যস্ত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। ইতিমধ্যেই সংস্কার ও গভীরতা বৃদ্ধির কারণে নগরীর জেল খালের কিছু অংশ ও ভাটার খাল ও নাপতার খালে জোয়ার ভাটা বইতে শুরু করেছে। নগরীর বিষফোঁড়া হিসেবে খ্যাত নবগ্রাম রোডের হাঁটু পানিও আর থাকবে না। সেখানেও সাগরদি খাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে বিসিসি। নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ডের চৌমাথা বাজার এলাকায় খালের ময়লা আবর্জনা অপসারণসহ খননের জন্য ড্রেজিং করা হচ্ছে। তবে খালের উপর স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য তৈরি কাঠের পুল ড্রেজিং কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও কিছু সড়কে ড্রেজিং প্রবেশেও স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন ড্রেজার চালকরা।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) এর ১৪ নং ওয়ার্ডের সাগরদি খাল পুনরুদ্ধারে দুটি পয়েন্টে দুটি ড্রেজার বসিয়ে খনন কাজ করতে দেখা গেছে। এ সময় চৌমাথা বাজারের পিছনের অংশে সাগরদি খাল সংলগ্ন সড়কে ড্রেজিং কাজে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধা দিতে দেখা গেছে। বাসিন্দাদের দাবী, এই সড়ক ড্রেজার চলাচল উপযোগী নয়, ড্রেজার প্রবেশমাত্র সড়কে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। এ অংশের খালে প্রচুর ময়লা আবর্জনার স্তূপ জমে রীতিমতো আস্তর তৈরি হয়েছে। ময়লা ও দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়। বাজারের সব ময়লা আবর্জনা খালের ভিতর স্পষ্ট দৃশ্যমান এখানে। মহাসড়কের কালভার্টের নীচেও রীতিমতো চর তৈরি হয়েছে। খাল সংলগ্ন পানি ছুঁইছুঁই অনেক বাসাবাড়ির দেয়াল। তাই বাধ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে লোকবল দিয়ে খাল খননের দাবী করেন এলাকাবাসী অনেকে। এখানে খালের পূর্বপাশের প্রায় ১০০ গজ এলাকায় কোনো সড়ক না থাকায় খাল খননের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানান ঠিকাদারি সংস্থা নিয়োজিত শ্রমিকরাও। দ্বিতীয় ড্রেজারটি দেখা গেল হোটেল তাওয়া সংলগ্ন গলি দিয়ে একটু ভিতরে। এখানে খালের ভিতর থেকে ময়লা আবর্জনার স্তূপসহ মাটি তুলে পাশেই জড়ো করা হচ্ছে। এ অংশে বেশ কয়েকটি কাঠের পুল ও ছোট কালভার্টের কারণে ড্রেজিং কাজে বাধা তৈরি হয়েছে বলে জানান ড্রেজার চালক লোকমান। স্থানীয় বাসিন্দারা পুল ভেঙে কাজ করার দাবী জানালেও পুল ও কালভার্ট মালিকদের প্রভাবে কাজ আটকে আছে বলে অভিযোগ করেন ড্রেজার চালকসহ এলাকার বাসিন্দারাও। এলাকাবাসী বলেন, মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খালের কাজ শুরু করেছেন। এই অংশের খনন শেষ হলে নবগ্রাম রোডের হাটুপানি আর থাকবে না, এটাও আমরা জানি। তাই সিটি মেয়র এর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কিন্তু এই অংশের কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হলে এই জলাবদ্ধতা কমবে না। কাঠের পুল ও কালভার্ট না ভাঙলে আধা আধি কাজ সম্পন্ন হবে। কারণ, ওগুলোর নীচে রীতিমতো আস্তর জমেছে। বিশেষ করে ঐ মোড়টায়, যেখানে কোনো সড়কের ব্যবস্থা নেই। সেখানে ড্রেজারও যেতে পারবে না। এজন্য বাধ তৈরি করেই কাজ করতে হবে বলে জানান এলাকাবাসী।
তবে বরিশাল সিটি করপোরেশন জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল বলেন, নগরীর সাতটি খাল পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের অধীনে এই মুহূর্তে সাগরদি খালের ভিতর কাজ চলছে। সাতটি খাল পুনরুদ্ধারের সব কাজ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন কাজ শেষ করে তারা সিটি করপোরেশনকে সবকিছু বুঝিয়ে দেয়ার আগে আমরা কিছুই বলতে পারিনা। তবে এটুকু সুনিশ্চিত যে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই বেশিরভাগ খাল সচল হবে এবং নবগ্রাম রোডের হাটুপানি আর থাকবে না বলে জানান এই জনসংযোগ কর্মকর্তা।