নগরীতে বেড়েছে ছিনতাই ও পকেটমার নগরীতে বেড়েছে ছিনতাই ও পকেটমার - ajkerparibartan.com
নগরীতে বেড়েছে ছিনতাই ও পকেটমার

4:01 pm , February 2, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারী চক্রগুলো। একটু বেখেয়াল হলেই টাকা-মোবাইল খোয়াতে হচ্ছে। এদের টার্গেট নারীদের ভ্যানেটিব্যাগ, হাতব্যাগ, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসেট। হরহামেশা এসকল ঘটনা ঘটলেও অপরাধীলা থেকে যাচ্ছে ধরাছোয়ার বাইরে। প্রতিদিন ছিতাইকারী ও পকেটমারের করলে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে অনেকে। গত ২৭ জানুয়ারি মুলাদির চর কমিশনার গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী ইসরাত জাহান মনি তার অসুস্থ মাকে নিয়ে বরিশালে ডাক্তার দেখাতে আসেন। পৌনে ৭ টার দিকে নগরীর সদর রোডস্থ ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিকের সামনে আসলে তাকে টার্গেট করে দুই যুবক তার ব্যাগ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করেন।বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষনিক ছিনতাইকারী সোহানের হাত ধরে ফেলেন। এ সময় সোহানের সাথে থাকা এক সহযোগী দৌড়ে পালিয়ে যান।পরে বরিশাল মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল কালামের হাতে সোহানকে তুলে দেন।কালাম বিষয়টি কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করলে এএসআই দ্বীন ইসলাম এসে তাকে আটক করেন। আটক সোহান নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডস্থ নতুন বাজার এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে।এছাড়া নগরীতে সিএনজি, অটো রিকসায় চলাচলকারী যাত্রিরা প্রায় প্রতিদিনই ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে। যাত্রীবেশে যানবাহনে উঠে সুযোগ বুঝে সবকিছু নিয়ে চম্পট দিচ্ছে এসকল ছিনতাইকারীরা। ভুক্তভোগীদের কয়েকজন জানান, নগরীর লঞ্চঘাট, সদর রোডের গির্জামহল্লা, জেলখানার মোড়, নতুন বাজার ও নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চিহ্নিত কিছু অবস্থান করে থাকে। তারা নথুল্লাবাদ থেকে লঞ্চ ঘাট রুটে চলাচলকারী সিএনজি ও অটোরিকশায় যাত্রীবেশে উঠে ছিনতাই করে থাকে। চালকদের কেউ কেউ এসকল চিহ্নিত ছিনতাইকারীদের চিনলেও অজ্ঞাত কারনে নিশ্চুপ থাকে। এব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চালক বলেন, মাঝে মধ্যে আমাদের চোখের সামনে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও ঝামেলার কথা চিন্তা করে এড়িয়ে যেতে বাধ্য হই। ছিনতাইকারীরা যাত্রীবেশে অবস্থান করায় আমরা চাইলেও যাত্রীদের সর্তক করা কিংবা কোন কিছু করতে পারিনা। গত বুধবার সকালে ছিনতাইয়ের কবলে পড়া বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারি রাজ্জাক জানান, তিনি সিএনজি যোগে অফিসে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পোশাক- আশাকে পরিপাটি এক লোক তার পাশের সিটে উঠে বসে।ওই লোক কিছুদূর যাওয়ার পর আবার নেমে যায়। অফিসে যাওয়ার পর রাজ্জাক আবিষ্কার করেন তার সাথে অল্প কিছু টাকা ও মোচার মধ্যে থাকা পান খোয়া গেছে। রাজ্জাক আরো জানান, সিএনজি অটোযোগে প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় যাত্রীদের ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার কথা শুনে থাকেন। এজন্য তিনি কিছুটা সর্তকতার সাথেই চলাচল করতেন। এখন তিনি নিজেই ছিনতাইয়ের শিকার হলেন।রাহেলা বেগম নামে মধ্য বয়সী এক নারী জানান, গত তিন চারদিন আগে তিনি নগরীর গুপ্ত কর্নার এলাকা থেকে লঞ্চ ঘাট এলাকায় যাওয়ার জন্য অটোতে উঠেন। পথিমধ্যে তার সাথে থাকা ব্যাগের চেইন খুলে মোবাইল ও চার হাজার টাকা নিয়ে যাওয়া হয়। লঞ্চ ঘাট পৌঁছে ভাড়া দেয়ার সময় টাকা, মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনাটি বুঝতে পারলেও কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। তার ধারণা পথিমধ্যে নেমে যাওয়া কেউ একজন তার টাকা মোবাইল নিয়ে গেছে। স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, পকেটমার ও ছিনতাইয়ের সাথে যুক্তরা নগরীর মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নারীদের বেশি টার্গেট করে থাকে। সুযোগের অপেক্ষায় থেকে এরা নারীদের সাথে থাকা ব্যাগ থেকে সবকিছু নিয়ে চম্পট দেয়। এরা টার্গেট নির্ধারণ করে ভদ্র লোক সেজে রাস্তার বিভিন্ন অংশে অপেক্ষা করতে থাকেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগরীর গির্জ্জমহল্লা এলকায় দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক বিভাগের একজন সদস্য বলেন, এ ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে মানুষকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন মানুষিকতা নিয়ে চলাফেরা করে। অনেকের হয়তো কেউ হাসপাতালে ভর্তি থাকে বা কারও অন্য কোনো কাজের ব্যস্ততা থাকে। এ কারণে সবাই সবসময় সচেতন থাকতে পারে না। আর এ সুযোগটাই নেয় ওই চক্রটি।টাকা ও মোবাইল ফোন নেওয়ার পর দ্রুত তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT