3:28 pm , January 28, 2024

মুলাদী প্রতিবেদক ॥ মুলাদীতে সীমান্তবর্তী এলাকায় হাতবোমা-ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে ৪ গ্রামে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত শনিবার রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের চিঠিরচর ও টুমচর এলাকায় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দে টুমচর, চিঠিরচর, তয়কা এবং সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। এ সময় বিস্ফোরণকারীরা টুমচর গ্রাম থেকে ১০টি গরু নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।বাটামারার আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল শাহ হত্যা মামলার আসামিরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনেরা। তবে পুলিশের দাবি, বিস্ফোরণের শব্দ পেলেও কে বা কাহারা ঘটিয়েছে সেই প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
চিঠিরচর গ্রামের মমিন হোসেন জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে চিঠিরচর বাজার এলাকায় ১৫-২০টি হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ হয়। ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হয়নি। কিছুক্ষন পর পর ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।
টুমচর গ্রামের জহিরুল ইসলাম জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত হাত বোমার বিস্ফোরণ করে এলাকায় ঢোকে। তারা সাহেব আলী সরদার, জেলাল সরদার, আফজাল হাওলাদারের গরুসহ এলাকা থেকে ১০টি গরু নিয়ে গেছে। পরে স্থানীয়রা ডাকচিৎকার দিয়ে প্রতিরোধের জন্য বের হলে তারা হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ করতে করতে চলে যায়। পরে তারা চিঠিরচর এলাকায় হাজী পক্ষের লোকজনের মুখোমুখি হয়।
নিহতের ভাই রোমান শাহ বলেন, হত্যা মামলার আসামিরা বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করছে। তারাই হাতবোমা ও ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং এগুলোর কাঁচামালের খরচ যোগাতে সাধারণ মানুষের গরু ছাগল নিয়ে যাচ্ছে।
বাটামারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. মিন্টু জানান, মুলাদী উপজেলার চিঠিরচরের সঙ্গে কালকিনি উপজেলার সীমান্ত রয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রুবেল শাহ হত্যা মামলার আসামিরা চিঠিরচর এলাকায় হাজী পক্ষের লোকজনের মুখোমুখি হয়েছিলো। ওই সময় ৮০-৮৫টি হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। মুহুর্মুহু শব্দে আশপাশের গ্রামেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ব্যাপারে মুলাদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ হোসেন বলেন, শনিবার রাতে চিঠিরচর ও টুমচর এলাকায় বিস্ফোরনের শব্দ পাওয়া গেছে। রাতে ওই এলাকায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া বলেন, বাটামারায় বিস্ফোরনের কথা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে জাগরনি বাজার পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আধিপত্যের দ্বন্দ্বে গত ৩ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা হাজীর পক্ষের রুবেল শাহকে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। ওই ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি নিহতের স্ত্রী নারগিস বেগম বাদী হয়ে আকন পক্ষের ফারুক হাওলাদার, মোকছেদ আকন, লোকমান হোসেনসহ ৪৫জনকে আসামি করে মামলা করেন। শান্তিচুক্তির শর্ত ভেঙে হত্যার ঘটনায় বাটামারায় হাজী ও আকন পক্ষের মধ্যে পুরাতন বিরোধের নতুন রূপ নেয়। কয়েকদিন ধরে আকন পক্ষের মামলার আসামিরা জামিনের ঘোষণা দিয়ে এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করছিলো। অপরদিকে হাজী পক্ষের লোকজন তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।