3:09 pm , January 26, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ৬ দফা দাবিতে সোনারগাঁও টেক্সটাইল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করেছে। শুক্রবার বেলা ১১ টায় বরিশার নগরের ফকিরবাড়ি রোডস্থ বাসদের জেলা কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি মাসুম গাজীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুম গাজী, সাধারণ সম্পাদক মো: ইমরান, কোষাধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খুকুমনি, ইউনিয়নের উপদেষ্টা ও বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য দুলাল মল্লিক, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি বিজন শিকদার প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে তারা ৬ দফা দাবিগুলো তুলে ধরেণ। দাবিগুলো হলো- প্রতিশ্রুতি মোতাবেক মূল বেতনের বৃদ্ধিকৃত ২৫ শতাংশ’র বকেয়া ১৫ শতাংশ বেতন পরিশোধ করা, যুগোপযোগী বেতনস্কেল চালু করা ও অবিলম্বে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া, ছুটি দেওয়া নিয়ে অনিয়ম দূর করা ও অর্জিত ছুটির মজুরির হিসাব বছরান্তে পরিশোধ করা, কোম্পানির লভ্যাংশে শ্রমিকের অংশ বেতনের সাথে পরিশোধ করা, প্রতি শিফটে ৮ ঘন্টা ডিউটি, ওভারটাইমে মূল বেতনের দ্বিগুণ মজুরি প্রদান করা এবং সব শিফটে নাস্তার ব্যবস্থা করা, অব্যাহতি প্রদান করলে বা স্বেচ্ছায় অবসরে গেলে শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিক কর্মচারীদের সমুদয় পাওনাদি পরিশোধ করা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা সোনারগাঁও টেক্সটাইলের শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই-সংগ্রাম করে আসছি। ২০২০ সালের মার্চ মাসে হঠাৎ করে মালিক কারখানা বন্ধ করে দেয়। এরপর ১১ মাস শ্রমিকরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করার পর মালিক কারখানা পুনরায় চালু করতে বাধ্য হয়। ২০২১ সালে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দসহ আন্দোলনকারীদের সাথে বৈঠকে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ৬ দফা দাবি মেনে কারখানা চালু করে। এই ৬ দফার মধ্যে অন্যতম ছিল ৯ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ, ২০১৮ সালের গেজেটঘোষিত বেতনস্কেল চালু করা, ৮ ঘন্টা কর্মঘন্টা চালু করা , শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের কার্যক্রমে সহায়তা করা ইত্যাদি। এরমধ্যে ৯ মাসের বকেয়া বেতন ৪৫ কিস্তিতে পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু করেও বেতনের ১৫% পরিশোধ করা শেষে বাকি ১০% পরিশোধ করা নিয়ে মালিক গতবছর থেকেই টালবাহানা শুরু করেছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ৯ মাসের বকেয়া বেতন সমুদয় পরিশোধ করার কথা থাকলেও মালিক বকেয়া বেতনের ১০% পরিশোধ করেননি এবং সেটা কবে পরিশোধ করবেন তাও সুস্পষ্টভাবে কিছু বলেননি। তারা বলেন, ২০১৮ সালে টেক্সটাইল খাতের জন্য সরকারি গেজেটে একটি বেতনস্কেল ঘোষণা করা হয় যা ২০২৪ সালে এসেও সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করেনি। কর্তৃপক্ষের এই বেআইনী আচরণ নিয়ে আমরা কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সবার কাছে ৪ বছর ধরে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত এবিষয়ে কোন পক্ষ থেকেই কোন কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি এবং আমাদের বেতনস্কেলও বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ ২০২১ সালে কারখানা খোলার সময়ে প্রশাসনের উপস্থিতিতে মালিক কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের বেতনস্কেল চালু করার শর্তে রাজি হয়েই কারখানা খুলেছিল। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে এই নি¤œমানের বেতন নিয়ে আমাদের জীবনযাপন মুশকিল। ৫ বছর আগের সরকার ঘোষিত বেতনস্কেলও বর্তমান বাজারের জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়। কিছুদিনের মধ্যে ২০২৪ সালের জন্য নতুন বেতনস্কেল ঘোষিত হতে যাচ্ছে। তবুও মালিক শ্রমিকদের এতটুকু বেতন বৃদ্ধি করতেও রাজি নয়। ৮ ঘন্টার জায়গায় ১২ ঘন্টা ডিউটি করেও আমরা ওভারটাইম পাইনা, এমনকি শ্রম আইনে স্বীকৃত অর্জিত ছুটির টাকা দেয়া নিয়েও কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করেন। দাবি আদায়ে আগামী ৩১শে জানুয়ারি সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিলগেটে মানববন্ধন এবং ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দাবি মানার ঘোষণা না আসলে সড়কে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।