ডাঃ সালেহ উদ্দিনকে শেবাচিমে ফিরিয়ে আনার দাবী রোগীদের ডাঃ সালেহ উদ্দিনকে শেবাচিমে ফিরিয়ে আনার দাবী রোগীদের - ajkerparibartan.com
ডাঃ সালেহ উদ্দিনকে শেবাচিমে ফিরিয়ে আনার দাবী রোগীদের

3:39 pm , January 23, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এম সালেহ উদ্দিনকে পুনরায় শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) ফিরিয়ে আনার দাবী হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের। ২৩ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের সিসিইউ বিভাগে প্রায় ২৫/৩০ জন রোগী এ দাবী করেন। তারা বলেন, এখানে এখন আমাদের কোনো চিকিৎসা নেই। এনজিওগ্রাম করতে ঢাকায় রেফার করা হচ্ছে। অথচ ডাক্তার সালেহ উদ্দিন যখন ছিলেন, তখন তিনি এখানেই নিজ হাতে এনজিওগ্রাম করে ব্যবস্থা নিতেন। প্রয়োজন হলে রিংও পড়াতেন। অথচ এমন একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ডাক্তারকে কৌশলে বরিশাল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবী করেন একাধিক রোগী। এসময় সদর উপজেলার একটি মসজিদের ঈমাম মোকলেছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বুকে ব্যাথা নিয়ে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হই। তিনদিন হৃদরোগ বিভাগে রাখা হয় ও প্রাথমিক চিকিৎসাসহ বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা করে বলা হয় জরুরী এনজিওগ্রাম করে রিং পড়ে নিতে। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ঈমামতির টাকায় এ চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে ব্যঙ্গ করেন এবং সাড়ে তিনলক্ষ টাকা নিয়ে ঢাকা যেতে পরামর্শ দেন। এখন শুধু ওষুধ নির্ভর হয়ে আছি। কারণ অত টাকা জোগাড় করা আমার জন্য অসম্ভব। ডাক্তার সালেহ উদ্দিন স্যার থাকলে নিশ্চয়ই তিনি একটা সুব্যবস্থা করতেন।
একই কথা বলেন সদ্য ঢাকায় রেফার করা রোগী নগরীর ব্রাউনকম্পাউন্ড এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর  হোসেন। তিনি বলেন, গত শনিবার মাঝরাতে এখানে ভর্তি হয়েছিলাম এনজিওগ্রাম করতে ঢাকা যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আজ ছাড়পত্র দিয়েছেন চিকিৎসক।  এখানেই ডাক্তার সালেহ উদ্দিন ছিলেন। যিনি নিজে এনজিওগ্রাম করে চিকিৎসা দিতেন। এরা তাকে সরিয়ে দিয়ে এখন রোগীদের ঢাকায় রেফার করছে। শেবাচিম দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ও ঐতিহ্যবাহী একটি হাসপাতাল। এখানে এনজিওগ্রাম হয়না, এটা কি লজ্জার নয়। জাহাঙ্গীরসহ আশেপাশের রোগীরা এসময় ডাক্তার সালেহ উদ্দিনকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার দাবী জানান।
অনুসন্ধানে জানা যায়,  বরিশাল শের ই বাংলা হাসপাতালে ২০১৩ সালের দিকে প্রায় ৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি এনজিওগ্রাম মেশিন সরবরাহ করা হয়। মেশিনটি পরিচালনার জন্য এই বিভাগে কোন চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘদিন এটি কোন রোগীর উপকারে আসেনি। এরপর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এম সালেহ উদ্দীন কে বরিশালে পদায়ন করা হলে তিনি বাক্সবন্দি এনজিওগ্রাম মেশিনটির কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই থেকে তিনি রোগীদের করোনারি এনজিওপ্লাস্টি (হার্টে রিং) বাসানো শুরু করেন। সেই থেকেই নিয়মিতভাবে রোগীদের করনারি এনজিওপ্লাস্টি (হার্টে রিং) বসানো কার্যক্রম এই হাসপাতালেই সম্ভব হয়। যা বরিশালের ইতিহাসে প্রথম। ২০১৪ সালের আগে করনারি এনজিওপ্লাস্টি (হার্টে রিং) বসানোর জন্য রোগীদের রাজধানীতে যেতে হতো।  হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এম সালেহ উদ্দীন করনারি এনজিওপ্লাস্টি (হার্টে রিং) বসানোর পাশাপাশি রোগীর হৃৎপি-ে (হার্টে) ডুয়েল চেম্বার পেসমেকার প্রতিস্থাপনও করতেন এবং কিডনীতে রিং সংযোজন করেন। ২০২১ সালের দিকে মেশিনটি সামান্য নষ্ট হওয়ায় রোগীদের অসুবিধায় পড়তে হয়। পরবর্তিতে হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলামের সহযোগীতায় মেশিনটি আবারো চালু করতে সক্ষম হন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এম সালেহ উদ্দীন। দীর্ঘদিন বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে হাজার হাজার গরিব রোগীদের পাশে দাঁড়ানো ডা. এম সালেহ উদ্দীনকে গতবছর নভেম্বরে পটুয়াখালীতে বদলী করায় এ অঞ্চলের রোগীরা পুনরায় এনজিওগ্রাম এর জন্য ঢাকা নির্ভর হতে বাধ্য হন। এ ব্যাপারে ডাক্তার সালেহ উদ্দিন বলেন, তিনি গতবছর ৩ ডিসেম্বর শেবাচিম থেকে পটুয়াখালী বদলী হয়েছেন।
আমিতো যেতে চাইনি, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে যেতে বাধ্য হয়েছি।
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ডাক্তার সালেহ উদ্দিন কে শেবাচিমে ধরে রাখতে। এজন্য তিনি মন্ত্রণালয়ে পৃথক চিঠিও দিয়েছিলেন।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সালেহ উদ্দিন কে পুনরায় বরিশালে পাঠালে হাজারো মানুষের উপকার হবে এবং তিনি নিজেও মন্ত্রণালয়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT