3:38 pm , January 23, 2024
ফুটপাত দখল মুক্ত করা হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের নির্দেশনায় নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এলক্ষ্যে সোমবার রাতে নগর ভবনে জরুরী সভায় মেট্রোপলিটন পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশনা এবং তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন মেয়র। বরিশালকে দেশের মধ্যে মডেল নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে সিটি মেয়রের এমন পদক্ষেপ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন নগরবাসী। সোমবারের সভার পর মঙ্গলবার নগরীকে যানজটমুক্ত করতে কাজ শুরু করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ। গোটা নগরীকে একটি পরিকল্পনার মধ্যে এনে কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা। ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক আব্দুর রহিম বলেন, বর্তমান সিটি মেয়র নগরীকে যানজট মুক্ত করতে বদ্ধ পরিকর। তার নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকে নগরীর ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ন কোন সড়কের পাশে থাকবে না কোন ধরণের হকার, অস্থায়ী কোন দোকানপাট। এছাড়া আগের মত চাইলেই যেখানে সেখানে সড়কের পাশে করা যাবেনা যানবাহন পার্কিং। প্রাথমিক পর্যায়ে মঙ্গলবার সকালে নগরীর জিলাস্কুল মোড় থেকে শুরু করে নাজিরের পোল পর্যন্ত, চকবাজার, কাটপট্টি সহ বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট সড়ক থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। টিআই জানান, যানজট নিরসনে নগরীর প্রধান সড়কগুলোর পাশে কোনভাবেই কোন হকার, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী এবং যানবাহন পার্কিং করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। নগরীর গীর্জা মহল্লা ও চকবাজার এলাকায় থাকা যানবাহন যাতে রাস্তার পাশে না রাখে সেজন্য বেল ইসলামীয়া ট্রাস্টের অব্যবহৃত প্রায় এক একর পরিমান জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে চকবাজার ও কাটপট্টি এলাকায় আসা সকল যানবাহন এই স্থানে পার্কিং করানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নগরীর প্রধান বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদকে শৃঙ্খলায় আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে বাস টার্মিনালে প্রবেশ ও বের হওয়ার আলাদা দুটি পথ নির্দিষ্ট করা। নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের ভেতরে অব্যবহৃত একটি স্থান বাস পার্কিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা। বৌদ্ধপাড়া ও সুরভী পাম্প সংলগ্ন সড়কে দুটি ইউলুপ তৈরি করা। মূল টার্মিনালে বাস ঘোরানোর জন্য কোন যানজট তৈরি না হয় এজন্য এই ইউলুপ দুটি তৈরি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাসগুলো ঘোরানোর জন্য এই ইউলুপ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও সড়কের নিরাপত্তায় সিটি মেয়রের নির্দেশনায় গ্রহণ করা হচ্ছে নানা ধরণের পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপ খুব দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে ট্রাফিক বিভাগ। মঙ্গলবার সকালে ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা নগরীর বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সকলকে এই নিয়মগুলো মেনে চলার আহবান জানিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে।
সচেতন নাগরিকরা বলছেন, বরিশাল শহরটি খুব ছোট একটি শহর। মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন সুন্দর এই শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত নগরী যানজট মুক্ত করতে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। তার নির্দেশনায় অতি শীঘ্রই বরিশাল নগরী একটি মডেল নগরীতে পরিনত হবে।
সোমবার নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার জাহিদুল কবির ও ট্রাফিক পুলিশের ডিসি তানভীর আরাফাত এবং সিটি কর্পোরেশনের সকল কাউন্সিলর ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। সভায় নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড থেকে শুরু করে গীর্জা মহল্লা, ফজলুল হক এভিনিউ, চকবাজার, নথুল্লাবাদ ও রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যানজট নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিবির পুকুর পাড়ের পুরনো টিএন্ডটি কার্যালয় এবং বেল ইসলামিয়া হোস্টেলের মধ্যে যানবাহন পার্কিং এর ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে কিভাবে অনুমতি সাপেক্ষে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা করা যায় সেই নির্দেশনা দেন সিটি মেয়র। এছাড়া কাগজপত্রবিহীন ব্যাটারীচালিত রিকশা ও হলুদ অটো বন্ধ করা এবং নগরীতে যাতে ওই সকল গাড়ি তৈরী করতে না পারে সেদিকে ট্রাফিক পুলিশকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান মেয়র। সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, এ ধরণের সভা প্রতিমাসে অনুষ্ঠিত হবে। সভা থেকে নগরবাসীর শান্তিময় পরিবেশ বজায় রাখতে যা যা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। এ জন্য একটি কমিটি গঠনের কথা জানান সিটি মেয়র। কমিটি গঠনের জন্য সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তারকে দায়িত্ব দেয়া হয়।