4:03 pm , January 21, 2024
আজকের পরিবর্তনের বিশেষ প্রতিবেদন
কাজী মিরাজ ॥ প্রতিমন্ত্রী-সিটি মেয়র দুই ভাইয়ের সমন্বিত উন্নয়নে বরিশাল নগরী থেকে শুরু করে ১০ ইউনিয়ন নিয়ে গর্ব করবে সারাদেশ। এমনি প্রত্যাশা নগরী ও সদর উপজেলাবাসীর। এ কারনে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন ছবি তুলে রাখুন পাঁচ বছর পর সেই ছবির সাথে মিলিয়ে দেখবেন। কোন মিল খুঁজে পাবেন না। আর সিটি মেয়র বলেছেন নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে হবে সম উন্নয়ন। দেশের অন্য নগরী নয়, আমার নগরী হবে দেশের কাছে উন্নয়নের মডেল। আমার নগরী দেখতে আসবে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। তারা সেইভাবে তাদের এলাকার উন্নয়ন করবে। গত পাঁচ বছর সাবেক সিটি মেয়র সরকার থেকে কোন ধরনের বরাদ্দ আনতে না পারায় নগরীতে কোন উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়ন করতে না পারলেও নগরবাসীর উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল অতিরিক্ত ট্যাক্সের বড় বোঝা। কারনে-অকারনে তা বৃদ্ধি পেতে থাকায় নগর ভবন আতংকের ভবনে পরিণত হয় নগরবাসীর কাছে। এ কারনে নগর ভবনে যাওয়া ভুলে যান নগরবাসী। এমনকি সদর আসনের এমপি প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম নগরীতে উন্নয়ন করতে চাইলে তাতে বাধ সাধেন সাবেক মেয়র। তার কারনে কোন ধরনের উন্নয়ন করতে পারেননি জাহিদ ফারুক। এমনকি নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষায় ৭টি খালের জন্য বরাদ্দ আনেন প্রতিমন্ত্রী। তাও করতে দেয়া হয়নি। যা নির্বাচনকালীন সময় প্রতিমন্ত্রীর নগরবাসীর কাছে তুলে ধরেন। তবে নির্বাচিত হয়ে প্রথমেই নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষায় শুরু করেছেন ৭টি খালের খনন কাজ। ইতিমধ্যে খালগুলোতে আসতে শুরু করেছে কীর্তনখোলা নদীর পানি। এতেই দারুন খুশী নগরবাসী। গত শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন নগরীর বর্তমান চিত্র নগরবাসীকে ধরে রাখতে বলেছেন। কারন আগামী ৫ বছরে নগরী এবং সদর উপজেলায় যে উন্নয়ন হবে তা কেউ কোনদিন কল্পনাও করেনি। নগরবাসীর আস্থা রয়েছে জাহিদ ফারুকের প্রতি এ কারনে আবারো বিপুল ভোটে তাকে বিজয়ী করেছেন। তাদের আশা জাহিদ ফারুক ও সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের সমন্বয়ে বরিশাল নগরী সৌন্দর্য্যে ভরে যাবে। কোন ধরনের অভিযোগ করার সুযোগ থাকবে না নগরবাসীর।
পাঁচ বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতায় নগরবাসী সিটি নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে। এ কারনে সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব নেয়ার পূর্বেই মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে নগরীর কোথায় কি ধরনের উন্নয়ণ প্রয়োজন তা স্ব-চক্ষে দেখেছেন। আর দায়িত্ব নেয়ার দিনই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে উপহার স্বরূপ পেয়েছেন প্রায় ৮শ’কোটি টাকা। যা জনগনের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। নগরবাসীর মনে আশা জাগিয়েছে ওই বরাদ্দ। দীর্ঘ ১০ বছর পর বরিশালের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ এলাকার উন্নয়নে ভাসবে বলে আশা সকলের।
এদিকে স্বামী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর সাথে সাথে নগরীতে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন লুনা আব্দুল্লাহ। এ কারনে নগরবাসী তাকে নগর মাতা হিসেবেই দেখছেন। বিশেষ করে সিটি ও সংসদ নির্বাচনে নগরবাসীর একান্ত আপনজন হয়েছেন লুনা আব্দুল্লাহ। তার মাতৃসুলভ আচরণে বস্তি থেকে বিত্তবান শিশুরা একলাফে তার কোলে চড়ে বসে। তিনিও চরম মমতায় শিশুদের আগলে রেখে মাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেন। লুনা আবদুল্লাহ নগরবাসীকে ভরসা দিয়েছেন তাদের দাবি বাস্তবায়নে এবং এলাকার উন্নয়নে। বিশেষ করে হতদরিদ্র নারী ও শিশুদের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চালানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা প্রতিমন্ত্রী ও সিটি মেয়রকে সাথে নিয়ে করবেন বলে জানিয়েছেন। লুনা আব্দুল্লাহ দৈনিক আজকের পরিবর্তনকে বলেন, আমি প্রতিমন্ত্রী এবং সিটি মেয়রের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে সাথে নিয়ে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে মা ও শিশুর উন্নয়নে কাজ করবো। বিশেষ করে বস্তি এলাকার মা ও শিশুদের প্রতি বেশী নজর দেয়া হবে। নগর উন্নয়নের সাথে সাথে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা চলবে। এর সাথে নগরীর নারী উন্নয়নেও কাজ করবো। আমি আমার স্বামী এবং প্রতিমন্ত্রী কোন প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তারা যা বলেছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য বলেছে। পূর্বে কে কি করেছে তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। এখন আমরা মিলেমিশে বরিশালকে সুন্দর নগরী উপহার দেয়ার চেষ্টা করবো।
সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত দৈনিক আজকের পরিবর্তনকে বলেন, নগরীর ব্যাপক উন্নয়ন করার জন্যই দলমত নির্বিশেষে তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করা হয়েছে। সেই বিজয়ী থেকেই তার দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। এ কারনে বিজয়ী হওয়ার পর একটি মুহূর্ত তিনি বসে থাকেননি। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। তাদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছেন। তার একটি কারন বরিশাল নগরীকে সুশৃঙ্খল নগরীতে রূপান্তর করা। আমি দেশের কোন শহর অনুকরণ করবো না। আমার আশা আমাকে দেশের জনপ্রতিনিধিরা অনুকরন করবে। এ লক্ষ্যে তার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন। বিশেষ করে খালের সংস্কার কাজ শেষ হলে দুই পাড় এমনভাবে করা হবে যা নগরবাসীর কাছে একটি ভালোলাগার জায়গায় পরিণত হবে। একইভাবে বর্ধিত নগরীকে প্রাধান্য দেয়া হবে। ওই সকল এলাকায় তেমন উন্নয়ন হয়নি। এর সাথে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের সম উন্নয়ন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী যে টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন তাতে না হলে আরো বরাদ্দ আনা হবে। একই সাথে নগর ভবনকে নগরবাসীর সেবা গ্রহণের কার্যালয়ে পরিণত করা হবে। ইতিমধ্যে সেই কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন সাধারণ নগরবাসী তার কাছে গিয়ে তাদের সুখ দুঃখের কথা বলতে পারছেন। কারন তিনি নিয়মিত নগর ভবনে অফিস করছেন। দেশ বিদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে মেয়রের কাছে ফোন আসছে। তাতেও সাড়া দিচ্ছেন তিনি। সবচেয়ে সমস্যাগ্রস্ত হচ্ছে জলাবদ্ধতা। সেই জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনগুলোকে পরিস্কার করা হচ্ছে। এর সাথে খালে জোয়ার-ভাটার পানি আসলে মেয়র আসা করছেন আগামী বর্ষা মৌসুমে কোন ধরনের জলাবদ্ধতা হবে না। এছাড়া নগরীর মশা ও পরিস্কারমুক্ত করার বিষয়টিতেও সুদৃষ্টি দিয়েছেন মেয়র। সুপেয় পানির জন্য নগরীর দুই প্রান্তে থাকা দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সচল করা হবে। সেখান থেকে কীর্তনখোলা নদীর পানি পরিশোধিত করে রিজার্ভ ট্যাংক এর মাধ্যমে জনগনের কাছে পৌঁছানো হবে। এতে করে সুপেয় পানির চাহিদা পূরন হবে। একটি সড়কও খারাপ থাকতে পারবে না। এর সাথে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে রাতের আলো। এ জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বরিশাল সদর আসনের নবনির্বাচিত এমপি দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচিত প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম দৈনিক আজকের পরিবর্তনকে বলেন, নগর এবং সদর উপজেলাবাসীকে তিনি কোন প্রতিশ্রুতি দেননি। নগরীর উন্নয়ন করবেন সিটি মেয়রকে সাথে নিয়ে। এতে করে এমপি হিসেবে তার বরাদ্দ এবং সিটি মেয়রের বরাদ্দ মিলে ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। পূর্বের মেয়রের অসহযোগিতার কারনে নগরীর কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। তবে এ পাঁচ বছর দুই ভাই মিলে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসাবেন নগরবাসীকে। এ থেকে সামান্যতম পিছ পা হওয়ার সুযোগ নেই। সেই উন্নয়ন দেশময় প্রচার হবে। একটু অপেক্ষা করুন আমাদের উন্নয়ন দৃশ্যমান হলে কথার সাথে কাজের মিল খুঁজে পাবে নগরবাসী।