শৈত্য প্রবাহের মধ্যে মাঘের অকাল বর্ষণে জনদুর্ভোগ বর্ণনার বাইরে শৈত্য প্রবাহের মধ্যে মাঘের অকাল বর্ষণে জনদুর্ভোগ বর্ণনার বাইরে - ajkerparibartan.com
শৈত্য প্রবাহের মধ্যে মাঘের অকাল বর্ষণে জনদুর্ভোগ বর্ণনার বাইরে

3:19 pm , January 18, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ মাঘের কনকনে ঠান্ডার সাথে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অকাল বর্ষণে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশালে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার পরে তা কিছুটা থামলেও মেঘলা আকাশ দিনভরই সূর্যকে আড়াল করে রাখায় শীতের বাড়তি অনুভূতিতে মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিলনা। গত কয়েক দিনের মৃদু শৈত্য প্রবাহের পরে বৃহস্পতিবার সকালে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ আগের দিনের চেয়ে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়ে ১১.৫ ডিগ্রীতে উন্নীত হলেও তা ছিল  স্বাভাবিকের নিচে। দিনভর মেঘলা আকাশে সূর্যের দেখা না মেলায় দুপুর ৩টায় বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ৭ ডিগ্রী নিচে ১৮.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
সপ্তাহের শেষ কর্ম দিবসের বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাতে বরিশাল মহানগরীতে সবকিছু প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। এরসাথে মহানগরীর কয়েকটি এলাকায় অব্যাহত বিদ্যুৎ বিভ্রাট পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তোলে। কোন ধরনের ঝড়-বাতাস ছাড়াই নগরীর হাতেম আলী কলেজ ফিডারে সকাল থেকেই দফায় দফায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। এমনকি এ বৈরী আবহাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রÑছাত্রীদের উপস্থিতিও প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে সপ্তাহের শেষ দিনে। নগরীর রাস্তাঘাটও ছিল প্রায় ফাঁকা।
আবহাওয়া দপ্তর বরিশাল বিভাগের কয়েক স্থানে বৃষ্টিসহ বজ্র বৃষ্টির কথা জানিয়েছে। আজ শুক্রবার প্রায় একই পরিস্থিতি বিরাজ করার কথা বলা হয়েছে।  শনিবার দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার কথা জানিয়ে রাতে তা সামান্য হ্রাসের কথা বলা হয়েছে। শনিবারের পরবর্তী ৫ দিনে পরিস্থিতি সামান্য পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে বরিশাল আবহাওয়া অফিস। পৌষের শেষভাগ থেকেই বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় শীত জাকিয়ে বসতে শুরু করে। মাঘের প্রথম দিনেই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের প্রায় ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস নিচে ৯ ডিগ্রীতে হ্রাস পাবার পরে গত ৪ দিন ধরে তা ৯ থেকে ১১ ডিগ্রীর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
অথচ চলতি জানুয়ারী মাসে বরিশালে স্বাভাবিক সর্বনি¤œ তাপমাত্রা থাকার কথা ১১.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অব্যাহত শৈত্য প্রবাহ আর মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশায় বরিশাল অঞ্চলে নিউমোনিয়া সহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগের প্রকোপ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা ও উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া সহ অন্যান্য ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগাক্রান্ত ৫৭ জন এবং অন্যান্য অসুস্থতা নিয়ে আরো ১২৩ জন এবং ১৪৮ জন ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রায় আড়াই হাজার নিউমোনিয়া রোগী ছাড়াও ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এসময়ে অন্যান্য ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে আরো প্রায় সাড়ে ১২শ রোগী সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসেছেন। পাশাপাশি ডায়রিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। গত বছর বরিশাল বিভাগে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত নারী-পুরুষ ও শিশু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরে নতুন বছরের প্রথম ১৮ দিনে আরো আড়াই হাজার আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে এসেছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT