3:38 pm , January 17, 2024

ঝালকাঠি প্রতিবেদক ॥ ঝালকাঠি পৌরসভার কৃষ্ণকাঠি এলাকায় প্রতিবেশীর ঘরে আ’লীগ নেতা রিপন মল্লিককে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ছেলে রিয়াজ মল্লিক বাদী হয়ে করেন। এ মামলায় আটক প্রবাসীর স্ত্রী শিরিন আক্তারসহ অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামী করা হয়েছে (মামলা নং-১১)। মামলা দায়ের করার পর পুলিশ একাধিক ব্যক্তিকে থানায় এনে জ্ঞিাসাবাদ করেছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শহিদুল ইসলাম। এদিকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার সকালে শিরিন আক্তারকে ঝালকাঠি আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি রাতে পৌরশহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় রিপন মল্লিকের প্রতিবেশী সৌদি প্রবাসী কামাল হোসেনের স্ত্রী শিরিন আক্তারের ঘরে এই হত্যাকান্ড ঘটে। মাথায় ভারি কোন বস্তু দিয়ে আঘাত করে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে আছর নামাজ বাদ ঝালকাঠি কৃষ্ণকাঠি এলাকার জৌনপুরী খানকা জামে মসজিদ মাঠে নিহত রিপন মল্লিকের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা নামাজের আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আল আমিন বলেন, রিপন মল্লিক খুব ভালো মানুষ ছিলেন। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। একটি মহল মৃত ব্যক্তির নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সরেজমিনে বুধবার সকালে নিহত রিপন মল্লিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকাহত স্বজনরা কান্নাকাটি করছেন। প্রবাসীর টিনের ঘরটি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। নিহত রিপন মল্লিকের ছেলে মামলার বাদী রিয়াজ মল্লিক জানায়, স্ত্রী শিরিন আক্তারের কাছে তাঁর বাবা রিপন মল্লিক জমি বিক্রির ২ লাখ টাকা পেত। ৬ মাস আগে রিপন মল্লিককে উড়ো চিঠির মাধ্যমে হত্যার হুমকী দিয়ে ছিল অজ্ঞাতরা। পরিবার থেকে এ বিষয়ে জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করতে বলা হলেও রিপন জিডি করেনি। জমির পাওনা টাকা না দেয়ার জন্যই শিরিন আক্তার একটি চক্রের সহায়তা নিয়ে রিপন মল্লিককের হত্যার রহস্য অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
রিপন মল্লিকের ভাই মনির মল্লিক জানান, শিরিনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব রহস্য উদঘাটিত হবে। পরিকল্পিতভাবে পিছন থেকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করার পর তাঁর শরীরের পোশাক খুলে ফেলে মিথ্যা নাটক সাজাতে সক্রিয় ছিল খুনিরা। তিনি আরো জানান, আমার ভাইকে হত্যার পর হাসপাতালে পাঠিয়ে শিরীন তার বাসা থেকে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে আটক করে। এছাড়াও ঘটনার সময় শিরীনের ঘরে থাকা আরো ৩ জন আত্মীয় এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয়। রাতে তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
ঝালকাঠি সদর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) গৌতম কুমার ঘোষ বলেন, ওই নারী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তবে তার সাথে কারা জড়িত সে বিষয়ে কোন তথ্য দেয়নি বলে ও তিনি জানান।
এই ঘটনার বিষয়ে ঝালকাঠি সদর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুহিতুল ইসলাম বলেন, লাশের সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষে প্রাথমিকভাবে বুঝা গেছে এটি হত্যাকান্ড। গ্রেপ্তারকৃত শিরিন আক্তারকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে। হত্যার সাথে কারা জড়িত তাও জানা যাবে।