মাঘের প্রথম দিনেই দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রায় কাঁপছে বরিশাল মাঘের প্রথম দিনেই দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রায় কাঁপছে বরিশাল - ajkerparibartan.com
মাঘের প্রথম দিনেই দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রায় কাঁপছে বরিশাল

3:20 pm , January 15, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ মাঘের প্রথম দিনেই দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা নিয়ে শৈত্য প্রবাহের তালিকায় বরিশাল ও ভোলার নাম উঠল। সোমবার সকাল ৬টায় বরিশালে স্বাভাবিকের ২.৯ ডিগ্রী সেলিসিয়াস কম তাপমাত্রা জনজীবন প্রায় অচল করে দেয়। এদিন বরিশালে আগের দিনের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রী কম, ৯ডিগ্রী ও ভোলাতে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও প্রায় ৪০ ঘন্টা পরে সূর্যের দেখা মিলেছে। ফলে দুপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ২২.৫ ডিগ্রীতে উন্নীত হলেও তা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৩.১ ডিগ্রী নিচে। তবে তা আগের দিনের চেয়ে ৫ ডিগ্রী বেশী। গত রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবসে বরিশাল সহ এ অঞ্চলের বেশীরভাগ এলাকায়ই সূর্যের দেখা মেলেনি। ছিন্নমূল থেকে সব শ্রেণি পেশার মানুষ পৌষের শেষ দিনের কনকনে ঠান্ডায় দিশেহারা হয়ে পড়ে। বরিশালে রোববার সকালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১০.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা ছিল স্বাভাবিকের ১.৪ ডিগ্রী নিচে। এমনকি দিনভর সূর্যের দেখা না মেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ১৭.৫ ডিগ্রীর ওপরে ওঠেনি। যা ছিল স্বাভাবিকের ৮.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস নিচে। গত কয়েকদিন ধরে বাস টার্মিনাল ও নৌ টার্মিনাল গুলোতে আশ্রয় নেয়া ছিন্নমূল মানুষ সহ বস্তিবাসীর দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাপতাল ও জেনারেল হাসপাতাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব সরকারি হাসপাতালগুলোতেই নিউমোনিয়ার সহ ঠান্ডাজনিত রোগীর ভীড় বাড়ছে প্রতিদিন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসেই নিউমোনিয়া আক্রান্ত প্রায় দেড় হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলোতে। গত ১৫ দিনে আরো অন্তত ১ হাজার রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে এসেছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালে বরিশালে ঠান্ডাজনিত নানা রোগ নিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭৭ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহ জনস্বাস্থ্যের সাথে বরিশাল অঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থায়ও মারাত্মক সংকট তৈরী করছে। কুয়াশাচ্ছন্ন কনকনে  ঠান্ডার সাথে হিমেল হাওয়ায় কৃষি শ্রমিকরা মাঠে নামতে পারছেন না। ফলে বোরো, গম, গোল আলু, পেঁয়াজ সহ বিভিন্ন রবি ফসলের আবাদ ও পারিচর্যা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে তাপমাত্রা স্বাভবিকের নিচে নেমে যাওয়ায় প্রায় ৪ লাখ হেক্টরে ১৭ লাখ টন বোরো চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে যে বীজতলা তৈরী হয়েছে, তা ‘কোল্ড ইনজুরী’র কবলে। অপরদিকে ১৫ লাখ টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে যে প্রায় ৭৫ হাজার হেক্টরে শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে, সেখানেও থাবা বসিয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া পরিস্থিতি। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া সহ শৈত্য প্রবাহের কনকনে ঠান্ডায় ফুল কপি ও বাধা কপি সহ বিভিন্ন সবজির উৎপাদন ব্যাহত হবার পাশাপাশি গুনগত মানও বিনষ্ট হচ্ছে। বর্তমান জলবায়ু পরিস্থিতি মাঠে থাকা গমের জন্য ছত্রাকবাহী ‘ব্লাষ্ট’ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। আবহাওয়া দপ্তর থেকে বুধবার পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘলা আকাশ সহ কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। পরবর্তি ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা জানিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দপ্তর।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT