দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিতে নাকাল ক্রেতারা দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিতে নাকাল ক্রেতারা - ajkerparibartan.com
দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিতে নাকাল ক্রেতারা

3:58 pm , January 12, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জাতীয় নির্বাচনের পড়ে দ্রব্যেমূল্য হ্রাসের কথা থাকলেও তা বেড়ে চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে। নগরীর মাছ মাংসের বাজারের এখন এমন অবস্থা যে সাধারন মানুষ সাহস নিয়ে বাজারে যেতে পারছে না ছুটির দিনেও। শুক্রবার ছুটির দিনে বরিশালের বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের ক্ষোভ আর হতাশার দৃশ্য। পাইকারী বা খুচরা সব বাজারেই দ্রব্যের চড়া মূল্যে নাজেহাল ক্রেতারা। তারা দাবি করেছেন দৈনন্দিন বাজার মনিটরিং করার জন্য। তাদের দাবি দ্রব্যেমূল্য কমানো না গেলে দেশের উন্নয়নের কি লাভ ? উন্নয়ন দিয়ে পেট ভরবে না তাদের। সপ্তাহের ছুটির দিনেও যদি পরিবার নিয়ে ভাল-মন্দ না জোটে তবে এর থেকে কষ্টের আর কিছুই নেই। গতকাল দিনভর নগরীর পোর্টরোড বাজার থেকে শুরু করে নথুল্লাবাদ বাজার পর্যন্ত সকল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকদিন গরুর মাংস কিছুটা কম দামে বিক্রি হলেও আবার সেই আগের বাড়তি দামে ফিরে এখন কেজি ৭৫০ টাকা। অন্যদিকে ব্রয়লারের দামও বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২২০ টাকায়। এছাড়া বাজারে সব ধরনের মাছের দাম যাচ্ছে বাড়তি। সব মিলিয়ে বাড়তি দামের ছোঁয়া পুরো বাজার জুড়েই। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজির দাম বেড়ে বর্তমানে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও এটা কিছুদিন ধরে ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিল। অন্যদিকে সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কক মুরগি (লাল) প্রতি কেজি ৩২০ টাকা, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩২০ টাকা কক সাদা প্রতি কেজি ২৮০ টাকা আর পাতি হাঁস আকার ভেদে প্রতি পিচ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গত কিছু দিন গরুর মাংসের দাম বিভিন্ন এলাকায় কমে ৬৫০ টাকায় বিক্রি করলেও লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে ফের প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি করছে বিক্রেতারা। পাশাপাশি খাসির মাংস প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরিবের মাছ তেলাপিয়া-পাঙ্গাশও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। পাঙাশ, চাষের কই, তেলাপিয়া মাছের দাম বাড়তি বাজার চললেও অন্য সব ধরনের মাছের দাম আরও বেশি বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ টাকায়, শিং মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫৫০ টাকায়, রুই মাছে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, পাঙাশ প্রতি কেজি ২২০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, শোল মাছ ছোট সাইজের প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, আর মাঝারি সাইজের শোল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজিতে। খইলসা প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, গলদা প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা মাছ ছোট প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি  ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং রূপচাঁদা প্রতি কেজি আকার ভেদে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছসহ গরু-মুরগির মাংসের দাম এমন বাড়তি দেখে দোকানির সঙ্গে ক্রেতাদের প্রায় সময়ই চলছে বাগবিত-া। বেসরকারি চাকরিজীবী আল মামুন বলেন, বাজারে যা কিনতে চাই সেটার দামই দেখি বাড়তি। আজ ৩০/৪০ টাকা বাড়তি দামে ২২০ টাকায় ব্রয়লার কিনলাম অথচ এটার দাম ছিল ১৮০/১৯০ টাকা। গরুর মাংস তো কিনতেই পারি না। মাছ যে কিনব তারও উপায় নেই। কারণ সব মাছের দামই বাড়তি। কমন মাছ তেলাপিয়া, চাষের কই আর পাঙাশ ছাড়া অন্য কোনো মাছ কেনারই উপায় নেই, কারণ সেগুলোর দাম অতিরিক্ত বেশি। বাজারের এমন বাড়তি চিত্র দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে আরেক ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজার করতে ১০০০ টাকা নিয়ে এলে কিছুই হয় না। মাছের যে দাম তাতে মাছ কিনতে পারি না, গরু খাসির মাংস তো কেনার প্রশ্নই আসে না। এক ব্রয়লার মুরগি কেনা যায় তাও আজ দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম এত বেশি যে আমাদের মতো নি¤œআয়ের মানুষের জন্য কেনা কঠিন হয়ে গেছে। বাড়তি দামের বিষয়ে পোর্ট রোড বাজারের মাছ বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, আজ নয় অনেক দিন ধরেই সব ধরনের মাছের দাম বাড়তিই যাচ্ছে। কিছু মাছ যেমন পাঙাশ, চাষের কই, তেলাপিয়া এগুলোর দাম হালকা কম বেশি হয় প্রতিদিনই তবে অন্য সব মাছের দামই বেশি। মূলত মাছের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মাছের দামে প্রভাব পড়েছে, সেটা আর কমছে না। আর কিছু আগে হরতাল, অবরোধ, নির্বাচনের জন্য মাছের গাড়ি ঢাকায় কম এসেছে তখনও মাছের দাম বেড়েছিল। আর এখন বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত শীত তাই জেলাপর্যায় থেকে মাছ ধরা, ঢাকায় আসা এটা কিছুটা কম হচ্ছে, ফলে মাছের দামে প্রভাব পড়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT