নির্বাচন শুধু সুষ্ঠু হলেই চলবে না ॥ স্বচ্ছতার প্রতিফলন থাকতে হবে -প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন শুধু সুষ্ঠু হলেই চলবে না ॥ স্বচ্ছতার প্রতিফলন থাকতে হবে -প্রধান নির্বাচন কমিশনার - ajkerparibartan.com
নির্বাচন শুধু সুষ্ঠু হলেই চলবে না ॥ স্বচ্ছতার প্রতিফলন থাকতে হবে -প্রধান নির্বাচন কমিশনার

3:23 pm , December 23, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধুমাত্র সুষ্ঠু হলেই চলবে না, বরং সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার যথাযথ প্রতিফলন থাকতে হবে। দুই একটা ঘটনাকে খুব বড় করে দেখবেন না। অবশ্যই সেগুলোকে প্রতিহত করতে হবে। তা না হলে মানুষের মধ্যে আস্থা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। জনগনকে দেখাতে হবে এটা ফেয়ার হয়েছে। দেখতে হবে, দেখে বিশ্বাস করতে হবে। আর এ কাজটা করবে সাংবাদিকদের ক্যামেরা। আপনাদের এই ক্যামেরা দিয়ে কিভাবে টোটাল এই নির্বাচনটা উঠে আসে, জনগনের কাছে কিভাবে উপস্থাপিত হয়। ওর মধ্যে দিয়ে একটা পারসেপশন ক্রিয়েট হবে। কাজেই আমি বলেছি যদি কোন অনিয়ম হয় সেটাও ছবি তুলে ফেলবেন, জানিয়ে দেবেন। সত্য হোক, মিথ্যা হোক। ভালো হোক, খারাপ হোক। বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দেওয়া এটা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব। অসত্য তথ্য নয়, মিথ্যা তথ্য নয়। সকলে মিলে আমরা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করবো, সকলের সমন্বিত প্রয়াসে নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে এই বিশ্বাসটুকু রাখুন, আশাবাদটা রাখুন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ?ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের নিমিত্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে এসব কথা বলেন তিনি। বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, শেষ ভালো যার সব ভালো তার এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসল দিনটা হচ্ছে ৭ জানুয়ারী পুলিং ডে। আল্টিমেটলি যে জিনিসটা মূল্যায়ন হবে সেটি হলো পুলিংটা কেমন শুদ্ধ-সিদ্ধ পরিশুদ্ধ হলো। বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য আমি বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের বলেছি। সুতরাং পুলিং ডে তে যেন বিন্দু মাত্র অনিয়ম না হয়। ভোটকেন্দ্রে যেন ভোটাররা অবাধে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরতে পারে সেই নিশ্চয়তাটা লাগবে। তিনি বলেন, দুদিন আগে ফরিদপুরের একটি ঘটনা শুনে সাথে সাথে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি এবং ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে তথ্য নিয়ে আমরা চট করে কোন শাস্তি দিতে পারি না। আমরা আজকের তথ্যও সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নিবো। তবে সেটি (ব্যবস্থা) আমাদের আইনের নিয়মানুযায়ী তদন্ত করে নিবো। আপনারা আশ্বস্ত থাকুন যে ঘটনা ঘটছে তা আমরা অবজারভ করছি। সিইসি বলেন, আজ পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রিভেনটিভ ক্যাপাবিলিটি (প্রতিরোধ ক্ষমতা) বাড়ানোর চেষ্টা করুন। ঘটনা ঘটে গেলো ১০ জনকে গ্রেফতার করেছি। ট্রেনের বগিতে আগুন লাগুক তারপর গ্রেফতার করেছি এটা নয়। আমি চাইনা ট্রেনে আগুন লাগুক কোন সহিংসতা ঘটুক, আমি চাইনা কারও মৃত্যু ঘটুক। তারাও (প্রশাসন) এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, প্রার্থীদের আমি বলেছি তারা যেন অবশ্যই সবজায়গাতে পুলিং এজেন্ট দেয়। এটা বিশ্বের সবজায়গাতে অনুশৃত পদ্বতি। তারাই একটি ভারসাম্য সৃষ্টি করবে। কোন অনিয়ম হচ্ছে কিনা কিংবা কোন শক্তিশালী পক্ষ অর্থ বা পেশী শক্তি ব্যয় করে কোন অনিয়ম করছে কিনা সেটা প্রতিহত করতে হবে প্রথমে পুলিং এজেন্টকে। পুলিং এজেন্টকে উঠে দাড়িয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে কমপ্লেইন করতে হবে। আর প্রার্থীদের পুলিং এজেন্ট না থাকলে নির্বাচনে ভারসাম্য সৃষ্টি না হলে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পরেও প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। এই অনুরোধটা প্রার্থীরা অনুধাবন করেছেন বলেই আশাকরি। তিনি বলেন, ভোটররা যদি নির্বিঘেœ কেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে আর প্রার্থীদের পুলিং এজেন্টরা যদি ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্বটা পালন করেন তাহলে ভোট নির্বিঘœ হবে। এরআগে সকালে প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রার্থীদের অনেকেই এ পর্যন্ত অবস্থায় সন্তুষ্টি ব্যক্ত করেছেন। তারা কিছু কিছু ছোট খাট দু’একটি ঘটনার কথা বলেছেন। সেগুলো কঠোরভাবে দমন করার কথা আমি বলেছি, তবে নির্বাচনে কিছু কিছু উত্তাপ হবে পারে, সেখান থেকে যেন অগ্নিউৎপাত না হয়। সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য বলা হয়েছে। আর প্রার্থীদের অনুরোধ করেছি তারা যেন আচরণ বিধি মেনে চলে। আর ভোটকেন্দ্রের ভেতরে কোন ধরনের অনাচার কেউ না করেন।তারা যদি পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টি করতে না পারেন, তাহলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে এককভাবে নির্বাচন করাটা কঠিন হয়ে যায়। আর তাদের সহযোগীতা পেলে এটা সহজ হয়ে যায়। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি দক্ষতার সাথে নিজেদের দায়িত্বপ্রাপ্ত আসনের নির্বাচন প্রক্রিয়া শতভাগ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। তিনি অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্রতি সার্বিক নির্বাচন কার্যক্রম শতভাগ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পাশাপাশি আগামী ৭ই জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিনটিতে বিশেষ সতর্কতার সাথে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও প্রদান করেন। অতিথিরা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। তাঁদের বক্তব্যে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী কর্মকর্তাদের নির্বাচনকালীন দায়িত্বশীলতা, জনগণের আস্থার প্রতিদান, জলবেষ্টিত, দুর্গম ও দূরবর্তী নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নানা দিক, নির্বাচনকালীন শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও বৈধ অস্ত্র জমাদান প্রসঙ্গ, পেশিশক্তি ও আর্থিক প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টা প্রতিরোধসহ অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব মোঃ জাহাংগীর আলম, বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা এবং মাদারীপুর ও শরিয়তপুর জেলার জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানাসমূহের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বরিশাল ও ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা নির্বাচন অফিসাররা। এছাড়াও বিজিবি-র দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন কমান্ডার, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ জামিল হাসান, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন সরদার, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবিরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT