4:12 pm , October 18, 2023
কাজী মিরাজ ॥ দুঃখ জনক খবরটি পেলাম বিকেল ৫টার পরে। মনে হলো এক বটবৃক্ষের ছায়া হারিয়ে ফেলেছি। তিনি হলেন এসএম ইকবাল। ব্যক্তি নামেই অতি পরিচিত। তিনি একাধারে সিনিয়র আইনজীবী, সিনিয়র সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, জনপ্রতিনিধি। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে তিনি একজন সাংবাদিক। সাংবাদিকদের অভিভাবক। তার মৃত্যুতে বরিশালের সংবাদিক সমাজ একজন প্রিয় অভিভাবক কে হারিয়েছে। রনাঙ্গনের পত্রিকা দৈনিক বিপ্লবী বাংলাদেশ পত্রিকায় তার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়। পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদ জানান, ১৯৭২ সালে পত্রিকার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এসএম ইকবাল বিপ্লবী বাংলাদেশের সাথে জড়িত। ২০০০ সালের দিকে বিপ্লবী বাংলাদেশ পত্রিকায় আমার হাতেখড়ি হয়। তখন পরিচয় হয় ইকবাল ভাইয়ের সাথে। সর্বদা হাসিমুখ ও জ্ঞানগর্ভ আলোচনার কারনে সবসময় আড্ডার মুখ্যব্যক্তি থাকতেন তিনি। ওই সময় অশ্বিনী কুমার হলের নিজ তলায় বিপ্লবী বাংলাদেশ পত্রিকা অফিসে জমজমাট আড্ডা হতো। সবার কনিষ্ঠ হিসেবে আমি ছিলাম নিরব দর্শক। সকাল থেকে দুপুর অবধি চায়ের আড্ডা চলতো। এই আড্ডায় অগ্রজ সংবাদিক ইসমাইল হোসেন নেগাবান মন্টু, নজরুল ইসলাম চুন্নু, এনায়েত হোসেন মিলন, নাসিম উল আলম, গোপাল সরকার, কাজী মকবুল হোসেন, মুরাদ আহমেদ, কমল সেন গুপ্ত, জাকির হোসেন, শওকত মিল্টন, প্রয়াত মিন্টু বসু, শিক্ষাবিদ সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, স্বপন খন্দকার অংশ নিতেন। কিন্তু এসব আড্ডায় মধ্যমনি ছিলেন এসএম ইকবাল। করোনা কালীন সময়ে এসএম ইকবাল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরেন। কিন্তু শেবাচিম হাসপাতালে যেতে তিনি অনিচ্ছুক ছিলেন। করোনায় তিনি যখন শয্যাশায়ী সেই সময়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দারের অনুরোধে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে শেবাচিমে ভর্তি করা হয়। ভয়ংকর করোনায় তিনি বেঁচে গেলেও সেই ধকল আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন এসএম ইকবাল। তার মৃত্যুতে যে শুন্যতা সৃস্টি হয়েছে তা আর পূরণ হবার নয়। বিশেষ করে সাংবাদিকদের অভিভাবক হিসেবে তিনি যেভাবে বিপদে আপদে স্ব-স্নেহে আগলে রাখতেন সেটি মনে হয় আর কখনই হবে না। সাংবাদিকতার বাতি ঘর এসএম ইকবালের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।