আগাম শীতকালীন সবজি বিনষ্ট ॥ বাজারে সরবরাহ ঘাটতি আগাম শীতকালীন সবজি বিনষ্ট ॥ বাজারে সরবরাহ ঘাটতি - ajkerparibartan.com
আগাম শীতকালীন সবজি বিনষ্ট ॥ বাজারে সরবরাহ ঘাটতি

3:59 pm , October 13, 2023

অতি বর্ষণে বরিশালে জনস্বাস্থ্য ও কৃষি সেক্টরে বিরূপ প্রভাব
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ এবারের ভরা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের ব্যাপক ঘাটতির পরে শরতের অস্বাভাবিক বর্ষণে বরিশাল অঞ্চলে জনস্বাস্থ্য সহ কৃষি ব্যবস্থায় নানামুখি সমস্যা তৈরী হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এ ধারায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ফসল আবাদ ও উৎপাদন সহ কৃষি খাত। তবে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই থেকে বরিশাল অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন এখনা ঝুকিমূক্ত বলে দাবী করে পরিস্থিতির উপর নাজার রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজি সহ আগাম শীতকালীন সবজি ইতোমধ্যে শরতের অসময়ের বর্ষণে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে আবহাওয়া অফিস থকে বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দু-এক দিনের মধ্যেই সারা দেশের মত বরিশাল সহ উপকুলভাগ থেকেও বিদায় নিতে শুরু করবে বলে জানান হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘন্টায় বরিশালে প্রায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বরিশালে ঐদিন সকাল ৬টার পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহানগরীতে আরো প্রায় ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এরমধ্যে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা মধ্যেই প্রায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ফলে বরিশাল মহানগরী সহ সমগ্র উপকুলভাগের জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
চলতি খরিপ-২ মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে ২২ লাখ ৮ হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রায় ৮.৭০ লাখ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হলেও বৈরী আবহাওয়া নিয়ে এখনো দুঃশ্চিন্তায় কৃষি যোদ্ধাগন। তবে নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার নিচে এবং সাগর ফুসে না ওঠায় প্রকৃতি নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের আমন কিছুটা নিরাপদ থাকলেও পুরোপুরি ঝুকিমূক্ত নয় বলে মনে করছেন কৃষিবীদগন। গত বছরও ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’এর প্রবল বর্ষণ ও ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের পানিতে বরিশাল অঞ্চলে উঠতি আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত বরিশল সহ দক্ষিণাঞ্চলে কোন বৃষ্টি হয়নি। এপ্রিলে স্বাভাবিকের তুলনায় কিছু বেশী বৃষ্টি হলেও জুন-জুলাইতেও তা ছিল স্বাভাবিকের কম। এমনকি জুলাই মাসে বরিশালে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের ৫৮% কম। কিন্তু আগস্টে তা ছিল স্বাভাবিকের ৮০% বেশী। এ সময়ে বরিশালে স্বাভাবিক ৪৩৩ মিলিমিটারের স্থলে ৭৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া বিভাগ। এমনকি গত সেপ্টেম্বর মাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ৩২৭ মিলিমিটারের স্থলে ২৮৫ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও বাস্তবে বৃষ্টির পরিমান ছিল প্রায় ১২% বেশী, ৩৬৬ মিলিমিটার।
অপরদিকে চলতি অক্টোবরে বরিশালে স্বাভাবিক ১৭৬ মিলিমিটারের স্থলে আবহাওয়া বিভাগ থেকে ১৬০-২১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা বলা হলেও ১ অক্টোবর সকাল থেকে ১৩ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত প্রায় ২৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বিদায়ের আলামত ইতোমধ্যে লক্ষ্যনীয়। গত সোমবারের পড়ে বরিশালে নতুন করে আর কোন ভারী বৃষ্টি না হলেও তাপাত্রার পারদ স্বাভবিকের উপরে রয়েছে।
অপরদিকে শ্রাবনের পূর্ণিমার ভারি বর্ষণের পরে আশি^নের অতি বর্ষণে বরিশাল অঞ্চলে আগাম শীতকালীণ শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতিতে বাজারে বিরূপ প্রভাব  পড়েছে ইতোমধ্যে। বরিশালের বাজারে সরবরাহ ঘাটতির সাথে ৮০ টাকা কেজির নিচে এখন তেমন কোন সবজি মিলছে না। অপরদিকে বর্ষায় ভর করে এবার বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল জুড়েই ডেঙ্গুর সংক্রমনে জন জীবনে কিছুটা আতংক অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে শুধু সরকারী হাসপাতলেই ডেঙ্গু জ¦র নিয়ে প্রায় ২৮ হাজার নারী পুরুষ ও শিশু ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১২৫ জনের। এ ছাড়া চলতি বছর ইতোমধ্যে সকারী হাসপাতালে প্রায় ৭০ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত চিকিৎসা নিয়েছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT