3:40 pm , October 9, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক ফয়সাল হত্যায় এক আসামীকে মৃত্যুদ- ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদ- দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিপি এ্যাড. ওবায়দুল্লাহ সাজু। সোমবার বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা এর রায় দিয়েছেন। রায়ে একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষনার সময় দ-িত চার আসামী উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসির দ-িত আসামী হলো- রাসেল হাওলাদার (৩০)। সে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মাইঠা চেয়ারম্যান বাজার এলাকার সালাম হাওলাদারের ছেলে। যাবজ্জীবন দ-িতরা হলো- একই গ্রামের আব্দুল মজিদ বয়াতির ছেলে বেল্লাল হোসেন (৩৩), মৃত রুহুল আমিন বয়াতির ছেলে শাহিন মিয়া (৩২) ও সানু হাওলাদারের ছেলে ইদ্রিস হাওলাদার (৩০)। খালাস পাওয়া সৈয়দ মৃধা (৩০) একই গ্রামের আব্দুল লতিফ মৃধার ছেলে। ফয়সাল আহম্মেদ বাকেরগঞ্জ উপজেলার খয়রাবাদ গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে। মামলার বরাতে পিপি এ্যাড সাজু জানান, দ-িতরা ২০১৯ সালের ৪ মার্চ উপজেলার বালিগ্রামে মো. শহিদুল ইসলামের বাড়ীতে গভীর নলকুপ স্থাপন করতে আসে। পরদিন ৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে দিকে বালিগ্রামের সড়কে ভাড়ার মোটর সাইকেল চালক ফয়সালকে একা পায় তারা। তখন ফয়সালের পথরোধ গভীর নলকুপ স্থাপনের পাইপ বসানোর লোহার হ্যান্ডেল ও রড দিয়ে মাথায়-মুখমন্ডলে সজোরে আঘাত করে। এরপর গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে ফয়সালকে হত্যা করে পাশের ইউসুফ হাওলাদারের দোকানের পিছনে লাশ লুকিয়ে ফেলে। পরে ফয়সালের মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটর সাইকেল নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে লুট করা মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটর সাইকেলের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। গৃহকর্তা শহিদুল এসে মারামারি থামানোর সময় মোবাইল ফোনে ফয়সালের ছবি দেখতে যায়। পরে শহিদুলের ঘরে পিছনে মোটর সাইকেল পেয়ে ফয়সালের বাবা বাদী নুরুল ইসলামকে খবর দেয়। তিনি এসে মোটর সাইকেল শনাক্ত করে। এক পর্যায়ে আটক ৪ জনকে গনপিটুনি দেয়া হয়। তারা ফয়সালকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে ফেলার কথা স্বীকার করে। ভোর রাতে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে ৬ মার্চ সকালে আসামীদের দেখানো স্থান থেকে ফয়সালের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই দিন নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে নামধারী ৫ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ জনকে আসামী করে বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করে। বাকেরগঞ্জ থানার পরিদর্শক নকীব আকরাম হোসেন ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) জমা দেয়। বিচারক ২৮ জনের মধ্যে ১৩ জনের স্বাক্ষ্য নিয়ে রায় দিয়েছেন। রায় ঘোষনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পিপি এ্যাড. ওবায়দুল্লাহ সাজু। এছাড়াও বাদী নুরুল ইসলাম সন্তান হত্যাকারীর ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দন্ড দেয়া খুশি হয়েছেন।