3:29 pm , September 24, 2023

পাথরঘাটা প্রতিবেদক ॥ পাথরঘাটায় কথিত শ্রমিকলীগ নেতা ও মোটরসাইকেল চোর সোহাগ সিকদারকে গণধোলাইয়ের পর রাস্তায় ফেলে রাখার ঘটনায় জেল থেকে বের হয়ে আবারো প্রান নাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় রোববার বেলা ১২ টার দিকে ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছেন। কালমেঘা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো. বাবুল মিয়ার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মন্নান আকন, রবিউল ইসলাম কনক, সোহাগ, ফোরকান, মিলন, হৃদয় ও আমীর হোসেনসহ প্রায় শতাধীক স্থানীয়রা। অভিযুক্ত সোহাগ সিকদার উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ছোনবুনিয়া এলাকার মো. বাদল সিকদারের ছেলে এবং কালমেঘা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি। মানববন্ধনে রবিউল ইসলাম কনক ও প্রফেসর মো. মিলন বলেন, জানান, শনিবার ফার্মেসীতে বসা ছিলাম, এর কিছুক্ষন পরেই সোহাগ সিকদার এসে বলেন, কাল জেল থেকে বের হয়েছি, শরীরটা ভাল না থাকায় বরিশাল গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি, শরীরের কোন স্থানের হাড় ভাংগেনি। এরখন সম্পূর্ণ সুস্থ্য আছি। আমাকে কে কে মারধর করছিল এবং মাথা ন্যারা করে আমার সাথে মোবাইলে সেলফি তুলছিন সবাইকেই বের করবো। যারা সাথে থেকে মামলা করে জেলে পাঠিয়েছিল তাদেরকে বের করে কুপিয়ে ভূড়ি কেটে মেরে ফেলে রাখবো। এবার দেখি আমাকে কে ঠেকায়! তারা বলেন, প্রকাশ্যে এরকম হুমকি দেয়ায় স্থানীয় সকলে তাদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। সোহাগ সিকদার সব সময় মাদকাসক্ত থাকে, সে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে। সে যখন বাহিরে ছিল তখন তার হাত থেকে কোন নারীও রেহাই পায়নি। স্থানীয় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো: বাবুল মিয়া বলেন, সোহাগ দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় চুরি এবং নীরিহ মানুষকে মাদক দিয়ে হয়রানী করে আসছে। তার বাবার কাছে বিচার দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না। সে এলাকায় মাদক সরবরাহ করে আসছেন। তাকে কেউ কিছু বললেই বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম বলে পার পেয়ে যান। জানা গেছে, সিকদার আওয়ামী শ্রমিক লীগের নেতা দাবি করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই মারধর এবং মাদক দিয়ে হয়রানি করতেন। গত ২৮ জুলাই শুক্রবার দিন সকাল ৯টার দিকে হৃদয় নামের এক ব্যাক্তির একটি মোটরসাইকেল তার বাড়ির সামনে রেখে বাড়িতে গেলে সেখান থেকে সেটি চুরি করে নিয়ে যান তিনি। স্থানীয় একাধিক লোকে দেখলেও সোহাগ বিষয়টি অস্বীকার করেন। এর পরেরদিন রাত ৯টার দিকে হৃদয়ের কাছ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পাশ্ববর্তী মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে মোটরসাইকেলটি ফিরিয়ে আনেন তিনি। এ ঘটনার পরেরদিন রোববার বিকেলে স্থানীয়রা তাকে ধরে গণধোলাই দিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। আরো জানা গেছে, সোহাগ সিকদার গত ৩০ জুলাই থেকে আরো তিন মাস আগে কালমেঘা ইউনিয়নের ছোনবুনিয়া এলালার মুন্নি বেগমের বাড়িতে ডাকাতি করে নগদ ২০ হাজার টাকা, স্বর্ণের চেইনসহ অন্য মালামাল নিয়ে যান তিনি। তখন তাকে চিনে ফেলায় মুন্নিসহ তার স্বামীকে মারধর করে রক্তাক্ত করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখেন তিনি। অভিযুক্ত সোহাগ সিকদারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, মোটরসাইকেল চুরির পর গনধোলাইয়ের শিকার হয়ে জেল হজতে ছিল সোহাগ সিকদার নামের এক লোক। তিনি জেল বের হয়েছেন তা তার জানা নেই। তবে লোকমুখে শুনেছেন হুমকিধামকির কথা। ভুক্তভোগীকে থানায় অভিযোগ দেয়ার পরামর্শও দেয়া হয়েছে।