4:17 pm , September 18, 2023
শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া প্রতিবেদক ॥ মঠবাড়িয়ায় মেধাবী কলেজ ছাত্র রাহাত হত্যা মামলার ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ। মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক রাসেল মোল্লা সম্প্রতি মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
রাহাত হত্যা মামলায় ১২ জন এজাহারনামীয় ও ১০/১৫ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছিল। এরমধ্যে এজাহারভুক্ত ৩ নং আসামিসহ ৩ জনকে চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছে : সাজ্জাদুর রহমান ওরফে বাবু (২৩), রুম্মান ফরাজী (২১) এবং রাসেল কবিরাজ (৩২)। এছাড়াও সন্দিগ্ধ গ্রেফতারকৃত আসামি অহেদুজ্জামান চুন্নু (৪৮) ও সেন্টু হাওলাদারের (৫১) নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন : সাব্বির খান (২০), রফিকুল ইসলাম (১৮), মোঃ রায়হান ওরফে রনি খান (২০), আলাউদ্দিন খান (১৯), জাহিদ হাসান ওরফে জাহিদ বেপারী (১৭), শাওন মাল (১৭), মোঃ শাওন মিয়া (১৬), মোঃ আসাদুল হক ওরফে আসাদ ফরাজী (১১) এবং আব্দুর রহমান ওরফে নাদিম (১৭)।
মামলার ১নং আসামি জাহিদ হাসান ওরফে মোঃ জাহিদ বেপারী ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে। জাহিদ উপজেলার উত্তর বড় মাছুয়া গ্রামের মোঃ খোকন বেপারীর ছেলে। জাহিদ পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
নিহত রাহাত হাওলাদার (১৯) হলতা গুলিশাখালী ইউনিয়নের উত্তর গুলিশাখালী গ্রামের মোঃ শাহ জালাল হাওলাদারের ছেলে এবং ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়নরত ছিল। জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী ছাত্র রাহাত নৌ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল।
স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানাগেছে, স্থানীয় এক মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে রাহাতের বন্ধু তরিকুল ইসলাম শুভ প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এদিকে আসামি সাব্বির খানও ওই ছাত্রিকে পছন্দ করত। এ নিয়ে শুভ ও সাব্বিরের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ঘটনার ৪/৫ দিন আগে শুভ তার বন্ধুদের নিয়ে সাব্বির খানের বাড়ির কাছে গিয়ে সাব্বিরকে হুমকী দিয়ে আসে। এতে সাব্বির খান ও তার দলীয় লোকজন অপমানবোধ করে। আর এ অপমানের প্রতিশোধ নিতেই শুভ ও তার বন্ধু রাহাতকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর টিয়া খালী মজিদ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শেখ রাসেল স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট খেলা দেখে রাহাত তার বন্ধুদের নিয়ে পিকআপ গাড়িতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পথে ওৎ পেতে গাড়ির গতিরোধ করে প্রথমে শুভকে গাড়ি থেকে টেনে নিচে নামায়। এরপর জাহিদ বেপারী তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে শুভকে খুনের উদ্দেশ্যে আঘাত করতে থাকে। এ সময় রাহাত দ্রুত তার বন্ধুকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে উক্ত আঘাত রাহাতের বুকের বাম পাশে লেগে গুরুতর জখম হয়। পরে রাহাত ও অন্য জখমীদের মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার রাহাত হাওলাদারকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় রাহাতের বাবা শাহ জালাল বাদী হয়ে পরের দিন মঠবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।