4:16 pm , September 18, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলনের একমাত্র জীবিত আসামী এ্যাড. খান আলতাফ হোসেন ভুলু। জীবনের শেষ বয়সে এসে বরিশাল-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচনে অংশ নিতে চান প্রবীন এ রাজনৈতিক নেতা। স্কুলে পড়া অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতি জড়িয়ে হাতেখড়ি পাওয়া এ প্রবীন নেতা বলেন, বরিশাল -৬ আসন স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিতি এ আসনে এবার কোন ছাড় দেয়া হবে না। এ আসন থেকে এবার যারাই মনোনয়ন চাইবেন, সকলেই জোট বেধেছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়ার দাবি জানানো হবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের কাছে। আওয়ামী লীগ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে দাবি করে এ্যাড. ভুলু বলেন, জীবনের শেষবারে সংসদ সদস্য হিসেবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে চান তিনি। তার আশা দলীয় প্রধান তাকে নিরাশ করবেন না।
তিনি জানান, মহাজোটের কারনে এ আসন জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেয়া হয়। জাতীয় পার্টির নেতা রুহুল আমিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্মা আমিন বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা নন। তারা দুমকীর বাসিন্দা। স্বামী-স্ত্রী এ দুজন বাকেরগঞ্জের মানুষের কাছে গনদুশমনে পরিনত হয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। নেতা-কর্মীদের আশাবাদ আওয়ামী লীগের নেতা এখান থেকে প্রার্থী হবে। তাদের চাওয়া অনুযায়ী প্রার্থী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এ্যাড. ভুলু বলেন, ১৯৬২ সালে একে স্কুলে পড়ার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন তিনি। একে স্কুল শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকও ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগের সভাপতিও হয়েছিলেন। স্কুল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৬৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে বরিশালে অংশ নেন তিনি। এ কারনে তিনি কারাবরন করেন। ১৯৬৭ সালে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের সহকারী সাধারন সম্পাদক (এজিএস) নির্বাচিত হন। ১৯৬৮ সালে বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালের গনঅভ্যুত্থানে ২৪ জানুয়ারী ১৪৪ ধারা ভঙ্গে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭০ সালের বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়। ১৯৭০ সালের সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর সাথে নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নিয়েছেন। ১৯৭১ সালে বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তার নেতৃত্বে বাকেরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধ করেন। ১৯৭৪ সালে বরিশাল জেলা যুবলীগের সহকারী সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৯ সালে বরিশাল জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক হয়েছেন। ১৯৮০ সালে যুবলীগের সভাপতি হন। ১৯৮১ সালে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে বাকেরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তিনি ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৬ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনেও ওই আসন থেকে দলীয় মনোনয়নে প্রার্থী হয়ে ছিলেন। ১৯৯৪ সালে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হয়েছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের কালোরাত্রের ঘটনার পর আন্দোলন সংগঠিত করার জন্য ১৭ আগষ্ট গ্রেপ্তার হন তিনি। দীর্ঘ ৩৪ মাস কারান্তরীন ছিলেন তিনি। ১৯৮৬-৮৭ সালে আটমাস কারান্তরীন ছিলেন তিনি। বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
এ্যাড. ভুলু বলেন, কখনো আওয়ামী লীগ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিরুদ্ধে যাননি। সব সময় ওই পরিবারের নেতৃত্বের উপর আস্থাশীল ছিলেন, আমৃত্যু থাকবেন। তাই তিনি নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেন বর্ষিয়ান এ নেতা।