4:02 pm , September 18, 2023

বরিশালের ‘মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ জনবল সংকট সহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে বরিশালের ‘মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি গর্ভবতী মা এবং শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করলেও নানামুখি সমস্যায় কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছেনা। এমনকি জনবল সংকটে গৌরনদীতে জেলার অপর ‘মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পরিবার কল্যান অধিদপ্তরের এসব প্রতিষ্ঠানে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহ অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদী সমৃদ্ধ অপারেশন থিয়েটার ও এ্যানেসথেসিওলজিষ্ট থাকার কথা। তবে বরিশাল ও গৌরনদী ছাড়াও বিভাগের সবগুলো জেলা সদরের ‘মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রগুলোর বহির্বিভাগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি ওয়ার্ডে প্রসূতি মায়েদের জন্য আধুনিক অপারেশন থিয়েটার ও লেবার ওয়ার্ড সহ সন্তান প্রসবের সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।
এক সময়ে বরিশালবাসীর কাছে ‘নার্সিং সেন্টার’ নামের ২০ শয্যার ‘মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটিতে ভালমানের এ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে। তবে এখানের বহির্বিভাগের মত ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসায় তেমন কোন ওষুধ প্রতিষ্ঠানটি থেকে সরবরাহ করা হচ্ছেনা। পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসায় অন্যতম অনুসঙ্গ, আল্ট্রাসনো মেশিনসহ কোন সোনোলজিষ্ট এর পদ সৃজন করা হয়নি বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের কোন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে। সারাদেশের মতো বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা সদরের প্রত্যেকটিতেই একটি করে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র রয়েছে। তবে বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরে অনুরুপ আরেকটি কেন্দ্রে স্থাপন করা হলেও চিকিৎসক সহ অনুমোদিত জনবল নিয়োগ না দেয়ায় কোন ধরনের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে। জনবল নিয়োগ সহ কেন্দ্রটি চালু করার লক্ষে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পরিবার কল্যান অধিদপ্তরের বরিশালের উপ-পরিচালক। অতি সম্প্রতি সেখানে একজন মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেয়ায় খুব শীঘ্রই বহির্বিভাগের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। বরিশালের কালি বাড়ী রোডে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের বিশাল স্থাপনায় ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটির মূল সমস্যা জনবল সংকট। কেন্দ্রটির একমাত্র পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদে কোন জনবল নেই। এমনকি এ প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংযুক্ত আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষন ইনস্টিটিউট এর মা ও শিশু স্বাস্থ্য ইউনিটটির জনবল সংকট আরো প্রকট। এখানে মঞ্জুরীকৃত ৪৯টি পদের ২৭টিই শূন্য পড়ে আছে। তিনজন মহিলা সহকারী সার্জনের বিপরীতে আছে একজন। দু’জন করে নার্সিং পরিদর্শক এবং পাবলিক হেলথ নার্স ও ৩ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সের পদে কোন লোকবল নেই। ফলে এখানে কর্মরত দক্ষ চিকিৎসকদের আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও লোকবলের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই প্রসূতি মায়েদের কাঙ্খিত স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার রুনা লায়লার সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, জনবল সংকট একটি অন্যতম বড় সমস্যা হলেও আমরা সার্বক্ষনিকভাবে চেষ্টা করছি কেন্দ্রে আগত মা ও শিশুদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা দিতে। প্রতিমাসে ৫০-৬০ জন প্রসূতি কেন্দ্রটিতে ভর্তি হচ্ছে। প্রতি মাসে কেন্দ্রটিতে গড়ে ৩০ জন মায়ের সার্জারি সম্পন্ন হচ্ছে বলে জানান রুনা লায়লা।পরিবার কল্যান অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতে এখানে যাতে আরো অধিক সংখ্যক মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা যায় সে লক্ষে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।