3:06 pm , September 17, 2023

বরিশাল থেকে ১০০ কোটি টাকা লোপাট
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মেটা ভার্স ফরেন একচেঞ্জ গ্রুপের (এমটিএফই) নামধারী ৬ সিইওসহ অজ্ঞাত আরো ২০ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। রোববার বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ওই মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. গোলাম ফারুক মামলা গ্রহন করে আদেশের জন্য অপেক্ষমান রেখেছেন বলে জানিয়েছেন বেঞ্চ সহকারী মো. নুরুল ইসলাম কাকন। মামলার বাদী হলেন নগরীর ব্রাউন্ড কম্পাউন্ড রোডের বাসিন্দা মো. হামিদ গাজীর ছেলে মো. ইউসুফ আলী।
আসামীরা হলো- নগরীর বান্দ রোড নুরজাহান মঞ্জিলের বাসিন্দা মিজানুর রহমান (৪৮), তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (৩৮), নগরীর সিএন্ডবি রোডের বাসিন্দা সালাম সরদারের ছেলে নোমান আহম্মেদ সরদার (৩০), নগরীর বিএম কলেজ গেট এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন সরদারের ছেলে মিলন হোসেন বাদশা (৪৮), তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম (৪০) ও তার ছেলে অলিউল ইসলাম (৩০)।
বেঞ্চ সহকারী নুরুল ইসলাম কাকন জানান, মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে ছদ্মবেশধারন করে ইলেকট্রনিক্স প্রতারনার মাধ্যমে অর্থের ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার বরাতে কাকন বলেন, আসামীরা মাফিয়াসহ জাল-জালিয়াতি চক্রের সদস্য। এমএলএম এর আদলে ই লেনদেনের মাধ্যমে প্রতারনা করে টাকা হাতিয়ে নেয়। মামলার বাদীসহ ১০ স্বাক্ষীর সাথে পূব পরিচিত হওয়ায় তাদের বরিশাল নগরীর বিভিন্ন নামীদামী হোটেলে নিয়ে ই-লেনদেনের মাধ্যমে ব্যবসা করে লোভনীয় ও আকর্ষনীয় লাভ করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেয়। আসামীদের প্রলোভনে সাড়া দিয়ে মিজানুর রহমান বাচ্চু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের প্রমোকোডের মাধ্যমে বাদীসহ ১০ জন স্বাক্ষীর নামে একাউন্ট খোলে। আসামীরা নিজেদের অর্থায়নে কিছু ডলার জমা করে প্রলুদ্ধ করে। প্রলোভনের ফাঁদে সাড়া দিলে বাদীসহ ১১ জন গত ১ মে থেকে ১ অগাষ্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময় সাড়ে ৫ লাখ টাকা জমা করে।
আসামীরা জানিয়েছে, চার হাজার টাকা দিলে ২৬ ডলার জমা হবে। প্রতিদিন দশমিক ৭৬ ডলার থেকে ১ ডলার মুনাফা পাবে। ৭ হাজার টাকা ৬১ ডলার জমা হবে। প্রতিদিন এক থেকে দেড় ডলার মুনাফা দেয়া হবে। ২৬ হাজার টাকা দিলে ২০১ ডলার জমা হবে ও প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ডলার মুনাফা দেওয়া হবে। ৬২ হাজার টাকায় ৯০১ ডলারে মুনাফা পাবে ১৩ থেকে ১৬ ডলার, একলাখ ৯ হাজার টাকায় ৯০১ ডলারের বিপরীতে দৈনিক মুনাফা ২৩ থেকে ২৬ এবং ২ লাখ টাকায় ১৫০১ ডলারের বিপরীতে দৈনিক মুনাফা ৪০ থেকে ৫০ ডলার দেওয়ার প্রলোভন দেয়া হয়। গত ১২ অগাষ্ট বাদীসহ ১১ জন আসামীদের কাছে গিয়ে টাকা উত্তোলনের জন্য নগরীর সিএন্ডবি রোড ফারজানা কমিউনিটি সেন্টারে নোমান আহম্মেদের সেবা অনলাইনের অফিসে যায়। সেখানে যাওয়ার পর নামধারী ৬ আসামীরা জানিয়েছে সফওয়ার আপডেটের কারনে ডলার উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। আগামী সপ্তাহে লভ্যাংশসহ উত্তোলন করা যাবে। গত ১৮ অগাষ্ট রাতের মধ্যে বাদীসহ ১১ জনের সকল তথ্যে ইলেকট্রনিক্স মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলে। পরদিন ১৯ অগাষ্ট সেবা অনলাইনের অফিসে গেলে আসামীরা জানিয়েছেন সকল টাকা উত্তোলন করে নোমান এমটিএফ’র প্রধান সিইও মাসুদের কাছে দুবাই চলে গেছে। সে ফিরে এলে টাকা ফেরত দেয়া হবে। গত ২০ অগাষ্ট নোমানকে পেয়ে টাকা ফের চাইলে জানায় টাকা বিদেশীরা নিয়ে গেছে। পরে আসামীরা টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে।
মামলায় বাদী আরো উল্লেখ করেছেন আসামীরা পরিকল্পিতভাবে প্রতারনার উদ্দেশ্যে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার করে নগদ টাকা নিয়ে ডলারে রুপান্তর দেখাইয়া আত্মসাত করেছে।
মামলার বাদী ইউসুফ আলী জানিয়েছেন, বরিশাল থেকে একশ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। কয়েক হাজার গ্রাহক প্রতারিত হয়েছে।