3:39 pm , September 13, 2023

স্বরূপকাঠি প্রতিবেদক ॥ স্বরূপকাঠির সমবায় সমিতিতে রাখা সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না পেয়ে একাধিক ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে কুড়িয়ানার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক হরসিত রায় হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ কারন। গত ২২ আগষ্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান শ^শীদ গ্রামের বাসিন্দা দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রকাশক তাপস মজুমদার । তিনিও সমিতিতে লাখ লাখ টাকা জমা রেখে টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। এজন্য তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদের সামনে আস্থা সমবায় সমিতির করফা শাখায় সঞ্চয় জমা রাখা ভুক্তভোগী সদস্যরা মানববন্ধন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
সম্প্রতি আস্থা সমবায় সমিতি ও আদমকাঠি সমবায় সমিতির মালিকরা গ্রাহকদের প্রায় শত কোটি টাকা নিয়ে গাঁঢাকা দিয়েছে।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কামরুল হাসান নিজের দায় এড়িয়ে টাকা খোয়ানো মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তাপস মজুমদার ও হরসিত রায়ের মত সমিতিতে লাখ লাখ টাকা জমা রেখে ফেরত না পাওয়ায় গ্রামীন ব্যাংকের সাবেক কর্মচারী ভরতকাঠি গ্রামের হীরামন হালদার অবসরের ১৪ লাখ টাকা আস্থা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতিতে জমা রেখেছিলেন। ওই সমিতির পরিচালক বিশ্বজিত হালদার সদস্যদের ৫০-৬০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে এমন খবর শোনার পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন হীরামন হালদার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে মৃনাল। একইভাবে আস্থা সমিতির করফা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার উত্তম মন্ডল নিজের সঞ্চিত লক্ষাধিক টাকা হারিয়ে এবং সদস্যদের কাছ থেকে নেয়া সঞ্চয়ের টাকার চাপ সামলাতে না পেরে টেনশনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মানসিকভাবে অসুস্থ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিপুল মন্ডল । তিনি ৬ বছরে দ্বিগুন টাকা পাওয়ার আশায় আস্থা সমিতিতে ১৩ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। আস্থা সমিতিতে ছেলে মেয়েদের জমানো দেড় লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন দৈনিক সংবাদের স্বরূপকাঠি প্রতিবেদক ধীরেন হালদার। বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্ত রঞ্জন মিস্ত্রী জানান তার কাছ থেকে আদমকাঠি সমিতির পাশ বই দিয়ে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে ব্রাহ্মনকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আন্দাকুল গ্রামের সুজন মজুমদার। টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ৪ মাস ধরে ঘুরাচ্ছেন। বিশাল গ্রামের কমল নামে ওই সমিতির এক সদস্য অভিযোগ করেন, সমিতির মাঠকর্মী অপর্ণা মন্ডলের মাধ্যমে আস্থা সমিতিতে তিন লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। ওই গ্রামের ইউপি সদস্য সুজিত কুমার জানান, তিনিও চার লাখ টাকা সঞ্চয় রেখেছেন।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, এ রকম অভিযোগ আগে পাওয়া যায়নি। সমিতির শাখা অফিস খোলার নিয়ম না থাকলেও অনেকের একাধিক অফিস এখনও চলমান আছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুল হাসান বলেন, কোথায় কার একাধিক অফিস রয়েছে তা তার জানা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, টাকা খোয়ানো সমিতির লোকজনের চাপে অফিস করাই দায় হয়ে পড়েছে। গোটা উপজেলার সবগুলো সমিতির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট করতে সমবায় কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।