4:14 pm , September 8, 2023

মো. নাসির উদ্দিন খান, বাউফল প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় মামার চুরির অপরাধে নববধূ ভাগ্নিকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো প্রভাবশালীদের চাপের মুখে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন। ভুক্তভোগী নববধূর মা ও মেয়ে কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব বিলবিলাস গ্রামে। স্থানীয়রা জানান, বাউফল থানা ব্রিজের ঢালে কাচা মালের ব্যবসায়ী আল ইসলামের বাসায় ভাড়া থাকতো পূর্ব বিলবিলাস গ্রামের শফিকুল ইসলাম শফিক। শফিক ওখানে থেকে আল ইসলামের অটোরিকশা ভাড়া চালাতো। শফিক সেই অটোরিকশা বিক্রি করে এবং একটি ছাগল চুরি করে নিজের বাড়ি বিলবিলাস ফিরে যায়। গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে কাচামাল ব্যবসায়ী আল ইসলাম ও তার ছেলে ইব্রাহিম মালামাল উদ্ধার করতে শফিকের বাড়িতে আসে। পরে শফিকের বোন তাসলিমা বেগমের ঘর থেকে চুরি হওয়া ছাগল উদ্ধার করে। তবে শফিক পালিয়ে যাওয়ায় রাত ৮টার দিকে আল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম আরও দুই একজন ছেলে নিয়ে শফিকের বোন তাসলিমা বেগমের বাড়ি এসে শামীম চৌকিদারের সহযোগিতায় রাত ৯টার দিকে তাসলিমা বেগমের মেয়ে নববধূ ভাগ্নি ও তার স্বামীকে নিয়ে বাউফল যায়। রাত ১টার দিকে ভাগ্নি ও ভাগ্নি জামাই বাড়িতে ফিরে আসে। পরে শুনতে পাওয়া যায় যে ভাগ্নি জামাই কে এক জায়গায় রেখে ভাগ্নিকে সংঘবদ্ধভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছে। স্থানীয় শামীম চৌকিদার বলেন, আল ইসলামের বাসায় ভাড়া থেকে শফিক নাকি তাদের ছাগল ও অটোরিকশা চুরি করে চলে এসেছে এমন খবর পেয়ে আল ইসলাম ও তার ছেলে ইব্রাহিম সহ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে শফিকের বোন তাসলিমা বেগমের ঘর থেকে চুরি হওয়া ছাগল উদ্ধার করে এবং ইব্রাহিম ওইদিন রাত আনুমানিক ৮টার দিকে শফিকের বাড়িতে আসলে সেখানে তাদের খবর পেয়ে আমিও উপস্থিত হই। এসময় ভাগ্নি ও ভাগ্নি জামাই নাকি চোরের বাড়ি থাকবেনা। তাই তাদের নিয়ে বাসস্ট্যান্ড জামাইয়ের ৩ জন লোকের কাছে তাদের বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসি। পরের দিন বুধবার সকালে আমাকে খবর দিয়ে ভাগ্নি ও ভাগ্নির মা সহ জামাই জানান, ভাগ্নিকে নির্যাতন করা হয়েছে। তখন তাদের আমি বলেছি ‘আপনারা আইনের আশ্রয় নিন।
ভুক্তভোগীর মা মুঠোফোনে বলেন, আমার সর্বনাশ হয়েছে। কাচামাল ব্যবসায়ী আল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয় শামীম চৌকিদারের মাধ্যমে রাতে প্রথমে আমার সদ্য বিবাহিত মেয়ে জামাই কে ডেকে নিয়ে যায়। পরে জামাইয়ের মাধ্যমে মেয়েকে ডেকে নিয়ে তারা সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেছে। মেয়ে ও জামাই রাত একটার দিকে বাড়ি ঢুকে ধর্ষণের কথা জানায়। এ ব্যাপারে আমি বিচার চাইতে থানায় যেতে পারছি না। বাবুল কমিশনার নাকি বিষয়টি দেখবেন বলে আমাকে আমাকে থানায় যেতে বাধা দেন। আমি বিচার চাই, বিচার চাই। এব্যাপারে বাবুল কমিশনার বলেন, তেমন কিছু না। বিষয়টি হলো টাকা চুরির বিষয় নিয়ে। এখানে ধর্ষণের মতো কিছু ঘটেনি।
ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে কাচামাল ব্যবসায়ী আল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিমের কাছে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেনি।
স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, এমন ঘৃন্য কাজ আমি ভাবতেই পারিনা। আমি এই মুহূর্তে ঢাকাতে আছি। আমি যদি এলাকায় থাকতাম এরকম ঘটনা ঘটতে পারতো না। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আনুরোধ করে বলছি সত্য উদঘাটন করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হোক।এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক বলেন, এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে সত্যতা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।