3:42 pm , September 6, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধশত ছুঁয়েছে। এরমধ্যে গত চার মাসে মারা গেছেন ৪৯ জন। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে জুলাই ও আগষ্ট মাসে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল। তিনি বলেন, বর্তমানে বৃষ্টিতে পানি জমে ও জলাবদ্ধতার কারনে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক কারন হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। এখন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল আরো বলেন, আমরা দুই উপজেলায় এডিস মশার লার্ভা পেয়েছি। এরপর আর নতুন করে পরীক্ষা করা হয়নি। আমরা চিকিৎসা সেবা দেওয়া ও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি। ডেঙ্গু রোগীদের স্যালাইন ও ওষুধ দেয়া হচ্ছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ দেলোয়ার হোসেন। এ নিয়ে বরিশাল বিভাগে গত ১ জানুয়ারী থেকে মারা গেছে ৫০ জন। এরমধ্যে গত ১৪ মে থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়ে বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজ ও ৬ জেলা সদরসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ২৭২ জন। সবথেকে বেশি ৬০ জন বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ৪৫ জন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে এ দুই হাসপাতালে বর্তমানে ৩০২ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া বরিশাল জেলার অন্যান্য হাসপাতালে ১৭ জন, পটুয়াখালীতে ২৩ জন, ভোলায় ২৯ জন, পিরোজপুরে ৫৬ ও বরগুনায় ৪২ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে মোট চিকিৎসাধীন রয়েছেন এক হাজার ১২ জন। গত ১ জানুয়ারী থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারী হাসপাতালে ১৫ হাজার ৬০৪ জন ভর্তি হয়। এরমধ্যে ১৪ হাজার ৫৪২ জন সুস্থ হয়েছেন। মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩০ জন মারা গেছেন বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপরে ৭ জন ভোলায়, ৫ জন বরগুনায়, ৪ জন পিরোজপুরে, বরিশালে ২ জন এবং একজন করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পটুয়াখালী জেলায়। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত মে মাসে প্রথম মৃত্যু হয়। ওই মাসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। জুন মাসে কোন রোগী মারা যায়নি। জুলাই মাসে মারা গেছে ১১ জন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে আগষ্ট মাসে। এ মাসে মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের। চলতি সেপ্টেম্বরের ৫ দিনে মারা গেছেন ৯ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ২১ জন বৃদ্ধা নারী। যাদের বয়স সর্বনিম্ন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ বছর। এরপরে মারা গেছেন ১৩ জন বৃদ্ধ। যাদের সর্বনিম্ন বয়স ৬৫ থেকে সর্বোচ্চ ৯১ বছর। ৫ জন করে মোট ১০ জন যুবক ও যুবতীর মৃত্যু হয়েছে। যাদের বয়স ২১ থেকে ৩৫ বছর। এছাড়া ৩৭ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ২ ব্যক্তি ও ৪ নারী রয়েছেন। মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৩০ জন নারী ও ২০ জন পুরুষ।