4:10 pm , September 2, 2023

ভান্ডারিয়া প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুরে ভান্ডারিয়ায় সাদিয়া আক্তার মুক্তা (১৮) নামের এক গৃহবধূকে শ^াসরোধ করে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শ^াশুড়ীসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সে ভান্ডারিয়া পৌর শহরের টিএন্ডটি সড়কের মুনিম জোমাদ্দারের স্ত্রী। স্থানীয় ও ভান্ডারিয়া থানা সূত্রে জানাগেছে, ভান্ডারিয়া পৌর শহরের টিএন্ডটি সড়কের মামুন জোমাদ্দারের ছেলে মুনিম জোমাদ্দার বছর খানেক আগে ভান্ডারিয়া শ্রীপুর গ্রামের মজিবুর রহমান মুন্সির মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করে। কয়েক দিন আগে পারিবারিক কলহের কারনে মুক্তাকে তার স্বামী মারধর করে। এ ঘটনার পর মুক্তা বাবার বাড়ি চলে যায়। গত শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে মুনিম মুক্তাকে আনতে গেলে তাদের মধ্য কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মুনিম মুক্তাকে ঘুষি মারে। এসময় মুক্তার মা এসে মুনিমকে চড় দেয়। এতে মুনিম ক্ষিপ্ত হয়ে মুক্তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নিয়ে আসে। পরে স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তা বাইরে বের হলে তাকে নিয়ে ভান্ডারিয়ার চেঁচরী রামপুর ব্রীজের কাছে নির্জন বেড়িবাঁধে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই মুনিমের বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব উপস্থিত হয়। তাদের সহযোগীতায় হিজাব পেচিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যার পরে বেড়িবাঁধের পাশে মৃতদেহ ফেলে রাখে। বাড়িতে এসে ঘটনাটি মুনিম তার মা ছবি আক্তারকে জানালে ছবি আক্তার সেখানে মৃতদেহ দেখতে যায় এবং সেখান থেকে ছেলের সহায়তায় অটোরিকশায় মৃতদেহ এনে ভান্ডারিয়ার কানুয়া গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার মধ্যে মরদেহ লুকিয়ে রাখে। পরে মুনিম তার শ^াশুড়ীকে ফোন করে বিকাল ৩টার দিকে জানায় তার মেয়েকে সে হত্যা করেছে। এদিকে মৃত দেহের ব্যাপারে গভীর রাতে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ফোনে একটি কল আসে। সংবাদ পেয়ে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশ রাত পৌনে ৪ টায় সেখানে যায় এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে শনিবার সকালে থানায় নিয়ে আসে। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমে মুনিমের মা ছবি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্য অনুযায়ী শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে নদীর ক্যানেলে কচুরি পানার নিচ থেকে মুক্তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মুক্তার স্বামী মুনিম, শাকিব খন্দকার, মারুফ ও সিয়াম খান সজিব কে আটক করে। মুক্তার বাবা মজিবুর রহমান মুন্সির জানান, সকালে মুনিম আমার কাছ থেকে ২শ টাকা মুক্তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নিয়ে যায়। বিকেলে মুনিম মুক্তার মাকে মোবাইলে জানায় সে মুক্তাকে হত্যা করেছে। আমরা প্রথমে বিশ^াস করিনি। পরবর্তীতে স্থানীয় চৌকিদার নূর মিয়া মুক্তার মাকে বিষয়টি জানান। ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুজ্জামান জানান, রাতে অজ্ঞাত নামা একটি ফোন থেকে হত্যার ঘটনা জানতে পারি সাথে সাথে আমি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। মুক্তার বাবা মজিবুর রহমান মুন্সি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।