কীর্তনখোলা নদীতে অতিরিক্ত পলি দূষণের কারণে বিপদসীমায় নগরী কীর্তনখোলা নদীতে অতিরিক্ত পলি দূষণের কারণে বিপদসীমায় নগরী - ajkerparibartan.com
কীর্তনখোলা নদীতে অতিরিক্ত পলি দূষণের কারণে বিপদসীমায় নগরী

3:53 pm , September 1, 2023

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ কীর্তনখোলা নদী দূষণের অবস্থা এখন এতটাই ভয়াবহ যে নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও তা আসলে বিপদসীমার নীচেই অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবী, নদীর নীচে অতিরিক্ত পলি জমার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে নদী তীরবর্তী ডিসিঘাট এলাকায় দাঁড়িয়ে নদী রক্ষা বাঁধ ও কীর্তনখোলার পানি একই সমান্তরাল দেখা যায়। ভাটার এই মুহুর্তে নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাঠানো তথ্যে তা বিকেল ৪ টা ২০ এ ২.০৪ উল্লেখ করা হয়েছে। বিপদসীমা ২.১৪। এদিকে ডিসিঘাট থেকে দক্ষিণে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও নামারচর, কেডিসিসহ  নদী তীরবর্তী এলাকায় অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা থাকার কারণে সেসব স্থানে নদীতে ড্রেজার চালানো হয়না বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। কয়েকজন ব্যবসায়ী ও অবৈধ দোকানপাট মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিসিঘাট থেকে নামারচর বস্তিবাসীকে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ সরে যাওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছিলো। অনেককে স্থান অনুযায়ী ক্ষতিপূরণও দেয়া হয়েছে। জমি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আকার অনুযায়ী কেউ ২০ হাজার, কেউ ৩০ হাজার আবার কেউ কেউ লাখ টাকাও ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলে স্বীকার করলেন কয়েকজন অবৈধ দোকান মালিক। তারপরও তারা স্থাপনা সরিয়ে না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে কেউ কোনো উত্তর করেননি। একজন শুধু বলেন, বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে সেভাবে কোনো চাপ নেই। গত ২৫ আগস্ট উচ্ছেদ অভিযান হবার কথা থাকলেও তা এখনো হয়নি।  এর আগে গত ৩০ আগস্ট বিআইডব্লিউটিএ, বরিশালের জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন সহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থা জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে কীর্তনখোলা নদীতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছিলেন। যা বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছুটা চললেও এরপরে বন্ধ হয়ে আছে। একই সময় বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও জেলখাল মোহনায় দেখা গেছে জমাট বাধা ময়লা ও ভাসমান বোতলের স্তূপ। পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা, বাপা, বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন বরিশালের উদ্যোগে বরিশাল নদী বন্দর সংলগ্ন কীর্তনখোলাতে ময়লা আবর্জনার পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা অভিযানের কোনো সুফলই এদিকে পৌঁছেনি বলে জানান জেলখাল নির্ভর ফলপট্টির ব্যবসায়ীরা। কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, বিআইডব্লিউটিএর পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুধু মাত্র লোক দেখানো।  আসলে তারা শুধু ইজারা নিয়ে ব্যস্ত। নদী তীরবর্তী এলাকা কখন কোথায় ইজারা দেবেন, এটাই এখন তাদের একমাত্র ব্যবসা। এসময় পোর্ট রোড ব্যবসায়ী নেতা খান হাবিব জানান, নদী দূষণ মুক্ত করতে হলে এই পোর্ট রোড বাজারের দূষণ আগে মুক্ত করতে হবে। বিআইডব্লিউটিএর কেউতো এ দায়িত্ব পালন করেন না। তারা শুধু ইজারা দিয়েই খালাস। নদী দূষণ মুক্ত করা পুরোপুরি বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্ব উল্লেখ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলেন, এখন পূর্নিমা চলছে। তাই জোয়ারের পানি ফুলেফেঁপে উঠছে। এছাড়াও অতিরিক্ত দূষণের কারণে নদীতে পলি জমে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।  জোয়ারের পানি এখন নদী রক্ষা বাঁধ ডুবিয়ে দিলেও তা বিপদসীমা অতিক্রম নয় বলে জানান নদী পরিমাপক কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম। বিআইডব্লিউটি‘র উপ পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কীর্তনখোলা নদী দূষণ মুক্ত করতে কাজ শুরু করেছেন তারা। গত ৩০ আগস্ট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গৌতম বাড়ৈ এ কাজের উদ্বোধন করেছেন। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকার পর রোববার থেকে আবার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হবে বলে জানান তিনি। তবে পোর্ট রোড ইজারা নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজী হননি উপপরিচালক।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT