4:25 pm , August 24, 2023

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র ছিড়ে ফেলায় সাব রেজিস্টারকে গালমন্দ করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দলিল লেখকরা দলিল লেখা বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা সাব রেজিস্টার অফিসে গিয়ে সাব রেজিস্টার পার্থ প্রতীম মুখার্জীকে গালমন্দ করেন বাগধা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি। কারণ চেয়ারম্যানের দেয়া প্রত্যয়নপত্র ছিড়ে ফেলেছেন পার্থ প্রতীম। এঘটনা সাবরেজিস্টার পার্থ প্রতীম মুখার্জী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন ও থানার ওসি গোলাম ছরোয়ারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এ ঘটনায় আগৈলঝাড়ার লাইসেন্স প্রাপ্ত ৩০ জন দলিল লেখক জানতে পেরে তারা দলিল লেখা বন্ধ করে দেয়। আগৈলঝাড়া থানার ওসি(তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের নাঘিরপাড় গ্রামের দানিয়াল বিশ্বাসের ছেলে আনন্দ বিশ্বাস তার ভাই অসীম বিশ্বাস ও অনিল বিশ্বাসকে সাড়ে ১১শতাংশ জায়গার দলিল সম্পাদনের জন্য দলিল লেখক অসীম পান্ডের মাধ্যমে দলিল লিখে সাব রেজিস্টারের কাছে জমা দেয়। দাতা ও গ্রহীতার পিতার জাতীয় পরিচপত্রে দানিয়াল বিশ্বাসের স্থলে মানিয়াল বিশ্বাস ও মাতা শোভা বিশ্বাসের স্থলে পুতুল বিশ্বাস থাকায় সাবজেরিস্টার পার্থ প্রতীম মুখার্জী দলিল সম্পাদন করতে একাধিবার অপারগতা প্রকাশ করে। এঘটনার পরে ওই দাতা ও গ্রহীতা বাগধা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টির কাছ থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র আনেন। যে জাতীয় পরিচয় পত্রে দাতা ও গ্রহীতার পিতা মাতার ভুল নামে একই ব্যক্তি। এই প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে বুধবার বিকেলে আগৈলঝাড়ার সাবরেজিস্টার পার্থ প্রতীম মুখার্জীর কাছে দলিল সম্পাদনের জন্য জমা দিলে তিনি সেই প্রত্যয়ন পত্র ছিড়ে দলিল লেখক অসীম পান্ডের গায়ে ছুড়ে মারেন। এঘটনা জানতে পেরে প্রত্যয়ন পত্রের ছেড়া অংশ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সাবরেজিস্টার পার্থ প্রতীম মুখার্জীর দপ্তরে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি তার দেওয়া প্রত্যয়ন পত্র ছিড়ে ফেলায় ক্ষুব্ধ হয়ে গালমন্দ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। বাগধা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হৃদয় রায় প্রদীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে বসে উৎকোচের বিনিময়ে পূর্বে দলিল সম্পাদনের কথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল গালাগাল ও হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি তাকে বলেছি দেশটি যদি স্বাধীন না হত তাহলে আপনি মোড়লগঞ্জের নদীতে বড়শি বাইতেন, আর আমি চাষাবাদ করতাম। উপজেলার সাব রেজিস্টার পার্থ প্রতীম প্রত্যয়নপত্র ছিড়ে ফেলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এসে আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছে। আগৈলঝাড়া থানার ওসি(তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন সাব রেজিস্টার ও চেয়ারম্যানের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা জেলা প্রশাসককে জানানোর কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, উভয়কে তার দপ্তরে ডেকে কথা শুনেছেন। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।