3:58 pm , August 21, 2023
মো. আফজাল হোসেন, ভোলা ॥ ভোলার মেঘনা, তেতুলিয়া এবং সাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না কাংখিত ইলিশ। যাও পাচ্ছে তা আকারে খুবই ছোট (পুরুষ) ইলিশ। তেলের দাম দিয়ে অংশীদার নিয়ে পুষিয়ে নিতে না পারায় হতাশ মাঝি মাল্লারা। তবে অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় জেলেরা অবৈধ জালে ছোট-বড় সব ধরনের ইলিশ ধরে নেয়ার। এছাড়া ৬৫ দিনের অবরোধকে দায়ী করলেন ব্যবাসয়ীরা। তবে সবকিছুর পরেও আশারবানী শোনাচ্ছেন মৎস্য অধিদপ্তর। ভোলার সবচেয়ে বড় মাছঘাটটি হচ্ছে চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ। এই মাছঘাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকে মনে হচ্ছে নদী ও সাগরে প্রচুর রুপালী ইলিশ ধরা পড়ার কারনে জমে উঠেছে মাছঘাট গুলোর বেচাকেনা। তবে বাস্তবে এর চিত্র উল্টো। জেলার সবচেয়ে বড় মাছঘাট চরফ্যাশনের সামরাজ ঘাটে ইলিশের মৌসুমে কোটি কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হত প্রতিদিন। যা এখন সব মিলিয়ে কয়েক লাখ টাকার ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে। মন্দের ভালো হচ্ছে গত ৩/৪দিন আগেও ছিলো ইলিশ শুন্য। সেই তুলনায় কিছুটা হলেও জেলেদের জালে ধরা পরছে কাংখিত ইলিশ। তবে ধার দেনা, এনজিওর ঋন আর সংসার চালাতে হিমশিম খেয়ে হতাশা জেলেদের মাঝে। তাইতো জেলে ইউসুফ, তাজুলসহ অনেকেই জানালেন ক্ষোভের কথা। তাদের মতে এখন ইলিশ মৌসুম। অথচ ইলিশের যে পরিমান জালে ধরা পড়ার কথা তার অর্ধেকটাও পাচ্ছে না। খরচ দিয়ে যে ইলিশ পাচ্ছে তাতে দিন চলছে না। খরচ দিয়ে অংশীদাররা পাচ্ছে না কিছু। তার উপরে আবার এনজিওর রক্তচক্ষুতো রয়েছেই। রয়েছে তেলের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতীয় জেলেদের ট্রলিংবোর্ডে ছোট-বড় ইলিশ ধরে নেয়ার অভিযোগ। সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ খরচ করে সাগরে গিয়ে যা পাচ্ছে তাতে হতাশ জেলেরা। চিন্তার ভাজ কপালে কতদিন দিতে হবে এমন লোকসান তা নিয়ে। ৬৫ দিনের অবরোধের সময় সীমা নিয়ে রয়েছে জেলেসহ ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম ক্ষোভ। কারন বাংলাদেশের জলসীমায় ইলিশ ধরছে অবরোধের সময় ভারতীয় জেলেরা। মৌসুমের সময়টাতেও ভারতীয় জেলেরা ইলিশ ধরে নিচ্ছে বলে ক্ষোভ আড়ত মালিক সমিতির। এছাড়া চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মাছঘাট আড়ত মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, সরকারকে ভারতের সাথে সমন্বয় করে ৬৫ দিনের অবরোধটা দিতে হবে। একই সাথে ইলিশ রপ্তানীর ক্ষেত্রে সহজতর করার পাশাপাশি ভারতীয় জেলেরা যাতে ইলিশ ধরে নিতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে দাবী তার। এদিকে আশার বানী শোনালেন ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ। তার মতে কাংখিত ইলিশ রয়েছে মেঘনা নদীতে। ডিম আসতে দেরি করা আর জলবায়ুর পরিবর্তনকে দায়ী করে বলেন, এর কারনেই জেলেরা ইলিশ পাচ্ছে না। ছোট আকারে যা পাচ্ছে তা মুলত পুরুষ ইলিশ। পেটে ডিম আসলে তখনই মা ইলিশ মেঘনায় প্রবেশ করবে আর তখনই জেলেদের জালে ধরা পড়বে। ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টণ ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।