4:14 pm , August 20, 2023

শামীম আহমেদ ॥ ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় চোখ হারিয়েছেন গৌরনদী উপজেলার পূর্ব বাকাই এলাকার মৃত কালাচান সরদারের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী আব্দুস সালাম সরদার (৫০)। কিন্ত দুঃসহ সেই দিনের স্মৃতি আজও তাকে তাড়া করে বেড়ায়। আওয়ামী লীগ কর্মী সালাম সরদার বলেন, ছোট বেলা থেকেই কর্মের সুবাদে ঢাকার মিরপুরে থাকতাম। কখনো গাড়ির হেলপার আবার কখনো সুপারভাইজার ছিলাম। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার কারনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগ দিতাম কাজের ফাঁকে। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বিকেলে মিছিলের সাথে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যাই। হঠাৎ বিকট শব্দে সমাবেশ স্থল কেপে ওঠে। এরইমধ্যে কি যেন একটা উড়ে এসে আমার (সালাম) বাম চোখ এবং পায়ের গোড়ালিতে পরে ধোয়া বের হয়ে যায়। ওই সময় আমি অজ্ঞান হয়ে পরেছিলাম। পরবর্তীতে কয়েকজনে মিলে আমাকে আমার বাসায় পৌঁছে দেয়। এরপর আমার স্ত্রী ও ভাগ্নে আমাকে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়েও ভর্তি করাতে পারে নাই। এক পর্যায়ে ওইদিন রাতে শ্যামলী গোল্ডেন হাসপাতালে ঘুষ দিয়ে আমাকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হলেও আমার বাম চোখ নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে সাহায্যের আবেদন করেও আজ পর্যন্ত কোন সাহায্যে পাইনি। তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে ঢাকা ছেড়ে নিজ এলাকায় চলে আসি। বর্তমানে চিকিৎসার অভাবে আমার অন্য চোখটিও অন্ধ হওয়ার পথে। গ্রেনেড হামলায় আহত সালাম তার সুচিকিৎসার জন্য মন্ত্রী পদমর্যাদায় থাকা বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সালামের স্ত্রী রাশিদা বেগম বলেন, ওইদিন অপরিচিত দুই লোক গুরুত্বর অবস্থায় আমার স্বামীকে বাসায় পৌঁছে দেয়। এরপর ৪/৫টি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানোর জন্য গিয়েছি। কিন্ত আওয়ামী লীগ কর্মী এবং গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছে যেনে কোন হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি। পরে শ্যামলীর একটি হাসপাতালে ঘুষ দিয়ে স্বামীকে ভর্তি করে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্ত ঘটনার প্রায় ১৯ বছর পার হয়ে গেলেও এ বিষয়ে আজ পর্যন্ত কারো সহযোগিতা পাইনি। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবী করেন তিনি। এ বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড হামলায় সেদিন গুরুত্বর আহত হয়েছিলো আওয়ামী লীগ কর্মী সালাম সরদার। এরপর সে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য একবার প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদনও করেছিলেন। কিন্ত কোন সাহায্যে পেয়েছিলেন কিনা তা জানা নাই।