3:54 pm , August 19, 2023

মুলাদী প্রতিবেদক ॥ মুলাদীতে টাকা ছাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের সেবা মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ওয়ারিশ সনদ, নাগরিক সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, বয়স্ক ভাতা, বিধতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, জেলে কার্ড, ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ড প্রাপ্তিসহ সকল প্রকার সেবায় মুলাদী সদর ইউনিয়ন পরিষদ টাকা নেন বলে অভিযোগ করেছেন সেবা গ্রহীতারা। এনিয়ে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা সেবা গ্রহীতাদের জিম্মি করে টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সেবাগ্রহীতারা জানান, কামরুল আহসান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ইউনিয়ন পরিষদে একক কতৃত্ব শুরু করেন। পরিষদের কোনো সদস্য কিংবা সাধারণ মানুষকে তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়ালখুশি মতো ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম শুরু করেন। ইউনিয়নবাসীকে ন্যুনতম নাগরিক সেবা না দিয়ে জনগণের প্রভু হিসেবে আচরণ করতে থাকেন। তার পছন্দের কয়েকজন ছাড়া কাউকে তিনি পাত্তা দেন না। ইউনিয়ন পরিষদে যেকোনো সেবা পেতে টাকা দিতে হয়। ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তার সহায়তায় তিনি টাকা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কুতুবপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান, মুলাদী সদর ইউনিয়ন পরিষদে ওয়ারিশ সনদ, নাগরিক সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ আনতে গেলে টাকা নেন ইউপি চেয়ারম্যান। এর মধ্যে ওয়ারিশ সনদে ৫শত থেকে ১ হাজার টাকা, নাগরিক সনদে ৫০ থেকে ১০০টাকা এবং জন্ম নিবন্ধন সনদে ৫শত থেকে ১ হাজার টাকা নেন। অনেক সময় জন্ম নিবন্ধনে ইচ্ছে করেই ভুল করে থাকেন ইউনিয়ন পরিষদ। জন্ম নিবন্ধন সংশোধনে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান।
চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। টাকা না দিয়ে কেউ এসব ভাতা পায় না। প্রতিটি ভাতা কার্ডের বিপরীতে ইউপি চেয়ারম্যান ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা নেন। টাকা দেওয়ার পরেও পরিষদে কয়েক বার গিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয় সেবা গ্রহীতাদের।
চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, টাকা ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিএফ ও ভিডিজির কার্ড পাওয়া যায়না। কিছুদিন আগে এক দম্পত্তির সঙ্গে এনিয়ে কথার কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়েছে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের। ওই দম্পত্তি মানববন্ধন, জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগও দিয়েছেন। বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধিন রয়েছে।
এব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ কামরুল আহসান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মুলাদী সদর ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে কাউকে টাকা দিতে হয়না। এছাড়া পরিষদে কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়না। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পরিষদ চলছে।