4:25 pm , August 10, 2023

মুলাদী প্রতিবেদক ॥ বৃদ্ধ বয়সে সন্তানেরা বাবা-মায়ের সেবাযত্মের দায়িত্ব নেওয়ার কথা। সেখানে বৃদ্ধ বাবাকেই দুই প্রতিবন্ধী ছেলের ভার বহন করতে হচ্ছে। মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চিলমারী গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল আজিজ সরদার (৮২) শারীরিক প্রতিবন্ধী দুই ছেলের দায়িত্ব পালন করছেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও দুই ছেলের জীবিকার সন্ধানে এখনও চিন্তায় থাকতে হচ্ছে তাকে। নিজের জীবন যুদ্ধের পাশাপাশি ছেলেদের নিয়ে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। সামান্য বয়স্ক ভাতা এবং দুই সন্তানের প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়ে ছোট একটি টিনের ঘরে জীবন যাপন করছেন তারা। সরকার এবং সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে জীবন যাত্রা কিছুটা সহজ হবে বলে আশা করছেন বৃদ্ধ আব্দুল আজিজ সরদার। চিলমারী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল রশিদ খান জানান, আব্দুল আজিজ সরদারের ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে আছে। এদের মধ্যে বড় ছেলে মাইনুদ্দিন (৩৫) এবং মেঝ ছেলে মো. ইব্রাহিম (৩০) শারীরিক প্রতিবন্ধী। তারা হাটতে কিংবা কোনো কাজ করতে পারেন না। মেয়েটির বিয়ে হয়েছে এবং আরেক ছেলে ঢাকায় আলাদা থাকেন। তারা বৃদ্ধ বাবা কিংবা প্রতিবন্ধী ভাইদের খোঁজ নেন না। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আব্দুল আজিজ সরদারকে ৫০০টাকা বয়স্ক ভাতা এবং ছেলেদের প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সামান্য ভাতা দিয়ে তাদের সংসার চলছে না। সন্তানদের খাবার এবং চিকিৎসার খরচ জোগাতে আব্দুল আজিজ সরদার এখন দিনমজুর হিসেবে কাজ করছেন।
আব্দুল আজিজ সরদার জানান, দুই ছেলে মাইনুদ্দিন ও ইব্রাহিম জন্মের সময়ে ভালো ছিলো। বড় ছেলে মাইনুদ্দিনের ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত কোনো শারীরিক সমস্যা ছিলো না। মাদ্রাসায় ভর্তি করে তাদের লেখাপড়া শুরু হয়েছিলো। ২০০৩ সালে হঠাৎ করেই মাইনুদ্দিন অসুস্থ হয়ে চলতে অক্ষম হয়ে পড়ে। ২০০৫ সালে ইব্রাহিম অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং এর পর থেকে আর চলাচল করতে পারেনা। পরিবারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। মা হারা প্রতিবন্ধী দুই ছেলের চলাচলে সহায়তা ও খাবার জোগাতে এখনও কাজ করতে হয়।
নাজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল খান বলেন, আব্দুল আজিজ সরদার বৃদ্ধ বয়সে প্রতিবন্ধী দুই ছেলের ভার বহন করছেন। তাকে বয়স্কভাতা এবং ছেলেদের প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের সকল প্রকার সহযোগিতা তাদের পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।