বরিশালে নদ-নদীর পানি কিছুটা বিপদসীমার ওপরে বরিশালে নদ-নদীর পানি কিছুটা বিপদসীমার ওপরে - ajkerparibartan.com
বরিশালে নদ-নদীর পানি কিছুটা বিপদসীমার ওপরে

4:37 pm , August 5, 2023

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ পূর্ণিমার ভরা কাটাল কেটে যাবার সাথে সাগর কিছুটা শান্ত হওয়ায় বরিশালের নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপকূলের বেশীরভাগ বিচ্ছিন্ন দ্বীপসমূহ দেড় থেকে ৩ফুট পানির তলায়। নিস্কাশন ব্যবস্থার দুর্বলতার সাথে কীর্তনখোলার নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় জোয়ার আর বৃষ্টির পানিতে বরিশাল মহানগরীর অনেক এলাকার রাস্তাঘাটও পানির তলায়। সাগর ও উপকূল ভাগ এখনো উত্তাল রয়েছে। মৌসুমী বায়ু দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয় থাকলেও উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সতর্কতার সাথে নদী বন্দর সমূহকে ১নম্বর  ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। বছরের শুরু থেকে বৃষ্টিপাতের অভাব গত মাসেও অব্যাহত থাকার মধ্যে শ্রাবনের পূর্ণিমায় ভর করে গত ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের মাঠে থাকা প্রায় পৌনে ২ লাখ হেক্টরের উঠতি আউশ এবং অর্ধ লক্ষাধিক হেক্টরের আমন বীজতলা ছাড়াও গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন সবজি নিয়ে কৃষকের দুঃশ্চিন্তার কোন শেষ নেই। মাঠে থাকা ১.৭০ লাখ হেক্টরের পাকা আউশ ও অর্ধ লক্ষাধিক হেক্টরের বীজতলার রোপা আমন থেকে এবার ২৩ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ্য স্থির করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসেও বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিকের ৫৮% কম বৃষ্টি হলেও আগষ্টের প্রথমদিন থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪ দিনে প্রায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে শনিবার সকাল ৯টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায়ই বরিশালে ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে ভোলাতে ৪৬ মেলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল সহ সমগ্র উপকূলভাগে অস্থায়ী দমকা হাওয়া সহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি ও বজ্র বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হলেও কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের কথা বলছে আবহাওয়া বিভাগ। এমনকি সোমবার সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবনতা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে।
পূর্ণিমার ভরা কাটালে ভর করে বরিশাল অঞ্চলের প্রায় সবগুলো নদ-নদীর পানি ২৫-৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে এখনো বিপদ সীমার ১-১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিণাঞ্চলে তার ২৩টি গেজ স্টেশন থেকে প্রতিনিয়ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত মির্জাগঞ্জ ও আমতলীতে পায়রা ও বুড়িশ^র, বরগুনা ও পাথরঘাটায় বিষখালী, বরিশালের কীর্তনখোলা, বেতাগীর বিষখালী, দৌতখান ও তজুমদ্দিনে মেঘনা ও সুরমা এবং হিজলায় ধর্মগঞ্জ নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে গত দুদিনে বেশীরভাগ নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় সাগর যথেষ্ট উত্তাল। ফলে ফুসে ওঠা সাগর এখনো উজানের পানি কাঙ্খিত মাত্রায় গ্রহণ না করায় নদ-নদী বহুল দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকাতেই প্রবাহিত হচ্ছে।
নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের ২৩টি ফেরি সেক্টরের বেশীরভাগ ঘাটই পানির তলায়। ফলে ফেরি চলাচলে সমস্যার সাথে সাধারন মানুষ ও যানবাহন ফেরিতে ওঠানামায় ভয়াবহ বিপত্তি অব্যাহত রয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT