4:35 pm , August 5, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বৃষ্টির কারনে তেমন জমে উঠছে না নগরীর বৃক্ষমেলা। বিক্রেতাদের দাবী বৃষ্টি কম হলে তাদের বেচা-বিক্রি কমপক্ষে দ্বিগুন হতো। তবুও তারা হাল ছাড়ছেন না। সামনের দিন গুলোতে বেচা-বিক্রি আরো জমে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মো. রেজাউল আহমেদ। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী জানান, শুধু গাছ কেনাবেচাই নয়, এ মেলায় আসা দর্শনার্র্থীরা বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছে। বিভিন্ন ভেষজ গাছের সম্পর্কে জানতে পারছে। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণসহ প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ টেকসই পরিবেশ সংরক্ষণ, কার্বন আধার সৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ বছর জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য‘গাছ লাগিয়ে যতœ করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ খুবই যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী হয়েছে। প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে গত ৩১ জুলাই নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে উদ্বোধন করা হয় বিভাগীয় বৃক্ষ মেলা। তবে মেলা শুরু হয়েছে ২৬ জুলাই। আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত পক্ষকাল ব্যাপী এই মেলা চলবে বলেও জানান তারা। গতবছর ও এ বছর এই মনোরম আয়োজন বরিশালে হলেও এর আগের দু বছর ছিল বন্ধ। এই মেলায় ৫০টি স্টল স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বন বিভাগ, হর্টিকালচার সেন্টারসহ বিভিন্ন বেসরকারি মালিকানাধীন নার্সারি রয়েছে। মেলার প্রথম দিনেই দর্শনার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনার সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মেলা কার্যক্রম পরিচালনার সময় হলেও বৃক্ষপ্রেমী নগরীর দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে রাত দশটা অব্দি। চোখ ও মনের পরম শান্তি নিতে মেলাটির প্রতিটি স্টল ঘুরলেই যথেষ্ট বলে জানিয়েছে দর্শনার্থীরা। এছাড়াও এখানে প্রয়োজন ও শখের প্রতিটি বৃক্ষই মিলছে তাই এর থেকে আর ভালো জায়গা দর্শনের জন্য হতে পারে না বলেও জানান তারা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় কৃষি তথ্য সার্ভিসের সৌজন্যে কৃষি বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলা শেষে গাছের চারা বিক্রির ওপর নার্সারি মালিকদের পুরস্কৃত করা হবে। বিভাগীয় এই বৃক্ষ মেলায় ফলজ ও ভেষজ বনজসহ প্রায় ৪০০ প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের গাছ মিলছে বলে জানা গেছে। ৫০ টাকা থেকে চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত রয়েছে বৃক্ষের মূল্য ।মেলায় উন্নত মানের আম, আতা, কুল, বরই, ডালিম, বেল, জাম্বুরা, কাঁঠাল, ডুমুর, করমচা, কাজুবাদাম, লাল কাঁঠাল, কিউই ফল, চেরি ফল, ড্রাগন ফল, আদা জামির, স্ট্রবেরি, পেয়ারা এবং নাশপাতি সহ বিভিন্ন ধরনের ফল গাছ পাওয়া যাচ্ছে ।এ সকল গাছ কিভাবে রোপন ও পরিচর্যা করা হবে তার যাবতীয় পরামর্শ মিলছে । বিভিন্ন স্টাইলের সরাসরি সাজানো ফুল গাছের মধ্যে জবা ফুল, হাসনাহেনা, পলাশ, কনকচাঁপা, বাসন্তী, মালতি, নয়নতাঁরা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। যা বিক্রির আগে শোভা বাড়াচ্ছে মেলার এবং বিক্রির পরে তা দর্শনার্থীদের মনের শান্তির খোরাকে পরিণত হচ্ছে। তাইতো এমন আয়োজন নিয়মিত হলেও মন্দ হতো না বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। একই সাথে ধন্যবাদ জানিয়েছে এই আয়োজনের আয়োজকদের। প্রকৃতপক্ষে বৃক্ষমেলার মূল উদ্দেশ্য হলো বৃক্ষরোপণকে একটি অভিযানে রূপান্তরিত করা এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। বিভিন্ন প্রজাতির বনজ ও ভেষজ উদ্ভিদের প্রদর্শনী, বিপণন ও রোপনে মানুষকে উৎসাহিত করার জন্য বৃক্ষ মেলা করা হয়।