4:24 pm , July 30, 2023

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠির নলছিটিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করার কথা বলে শিক্ষকদের কাছ থেকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে। টাকা নিয়েও তিনি ছালেহা খাতুন ¯œায়ু ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করাতে পারেননি। এ ঘটনায় শিক্ষকরা টাকা চাইলে তিনি নানা টালবাহানা করে তা আর ফেরৎ দেননি। যার মাধ্যমে তিনি টাকা নিয়েছেন সেই ব্যক্তিই সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে নলছিটি পৌরসভায় অভিযোগ দিয়েছেন। পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ খান বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চার নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাজুল ইসলাম চৌধুরী দুলালকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ২০১৫ সালে নলছিটি পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের খাসমহল এলাকায় সালেহা খাতুন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন সুলতান মাহমুদ। তিনি নলছিটি উপজেলার কাঠিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় তিনি বিদ্যালয়ে নয় জন শিক্ষককে চাকরি দেন। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করার কথা বলে তিনি নান্দিকাঠি গ্রামের শাহাদাত হোসেনের মাধ্যমে শিক্ষকদের কাছ থেকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজের কাছ থেকে দুই লাখ, শিক্ষক টুম্পা রানীর কাছ থেকে দুই লাখ, চম্পা বেগমের কাছ থেকে তিন লাখ, খুশবু বেগমের কাছ থেকে আড়াই লাখ, মো. কামাল হোসেনের কাছ থেকে তিন লাখ, জোসনা বেগমের কাছ থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার, এনি বেগমের কাছ থেকে এক লাখ, তানজিলা বেগমের কাছ থেকে ৫০ হাজার ও নাদিম হোসেন আউয়ালের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চেকের মাধ্যমে নেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন ওই সময়ে সুলতান মাহমুদের খুব ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শাহাদাতের মাধ্যমে চেক দিয়ে টাকাগুলো ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাত করেন সুলতান মাহমুদ। পরবর্তীতে যখন বিদ্যালয়টি আর এমপিওভুক্ত হচ্ছে না, তখন শিক্ষকরা ঘুষের টাকা ফেরৎ চান শাহাদাতের কাছে। এনিয়ে শাহাদাতের সঙ্গে শিক্ষকদের বাগবিতন্ডাও হয়। শাহাদাত হোসেন ঘুষের টাকা সুলতান মাহমুদকে ফেরত দিতে বললেও তা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। একদিকে সুলতান মাহমুদের প্রতারণা, অন্যদিকে শিক্ষকদের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শাহাদাত হোসেন। অবশেষে তিনি সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমানসহ পৌরসভায় অভিযোগ দেন।
শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি ছোটখাটো ব্যবসা করতাম। শিক্ষকদের কাছ থেকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে সুলতান মাহমুদকে দিয়েছি। তিনি টাকাও ফেরত দেন না, বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করান না। এখন শিক্ষকরা আমার কাছে টাকা ফেরত চাইছে। আমি উভয় সংকটে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বাধ্য হয়ে পৌরসভায় অভিযোগ দিয়েছি। আশাকরি এবার সুলতান মাহমুদ টাকাগুলো ফেরত দিবেন। সুলতান মাহমুদ অবসরে যাওয়ার পর থেকে ফোনও রিসিভ করেন না।
এ ব্যাপারে তিনদিন ধরে একাধিকবার সুলতান মাহমুদের মুঠোফোনে কল করলেও তিনি তা ধরছেন না।
নলছিটি পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ খান বলেন, শাহাদাত হোসেন নামে এক ব্যক্তি সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমি চার নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। এখনো বিষয়টি তদন্তনাধিন রয়েছে।