4:07 pm , July 30, 2023

৫শ মেগাওয়াটের ৩০ ভাগই ঘাটতি
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের পরেও দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ ৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার ৩০ ভাগেরও বেশি লোডশেডিং এ জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠার পাশাপাশি শিল্প ও বানিজ্যেও চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু শিল্প ও ব্যবসা-বানিজ্যেই দৈনিক ঘাটতির পরিমান প্রায় ৫০ কোটি টাকা এমনটাই দাবী ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকদের। রোববার সপ্তাহের শুরুতেই সকাল ৯টার পর পরই চাহিদার ৩০ ভাগেরও বেশি বিদ্যুৎ রেশনিং শুরু হয়। ঘাটতি মোকাবেলায় বরিশাল মহানগরীর ৫টি ৩৩/১১ সাব-স্টেশন থেকে মহানগরী সহ সমগ্র জেলা এবং ঝালকাঠীর বিশাল এলাকায় বিদ্যুৎ ছাটাই শুরু হলে জন জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসে।
রোববার সকাল ৯টার পর নগরীর রুপাতলী ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনটিতে ডে-পিক আওয়ারে প্রায় ৮০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছাটাইয়ের ফলে জন জীবনে দু:সহ যন্ত্রনা সৃষ্টি হয়। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোও মুখ থুবড়ে পড়ে। দুপুর ১২টায় পর্যন্ত নগরীর দপদপিয়া, পলাশপুর, কাশিপুর ও চাঁদমারী ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনগুলোতে একইভাবে বিদ্যুৎ রেশনিং চলছিল।
পাওয়ার গ্রীড কোম্পানীর একটি সূত্রের মতে, শুধু বরিশালই নয়, দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি ১৩২/৩৩ কেভি সব-স্টেশন থেকে ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনের মাধ্যমে ৬টি জেলায় যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে, সবগুলোতেই চাহিদার প্রায় ৩০ ভাগ পর্যন্ত ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে।
পিডিবি’র একটি সূত্রের মতে, বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে স্থাপিত সবগুলো পাওয়ার স্টেশনই এখন পূর্ণ উৎপাদনে রয়েছে। ফলে এ অঞ্চল থেকে প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদুৎ এখন জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হলেও জাতীয় গ্রীড থেকে হিস্যা মাফিক দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ না দেয়ায় চাহিদার প্রায় ৩০ ভাগ ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ অঞ্চলের প্রায় কোটি মানুষকে।
সূত্রটির মতে, বরিশাল সামিট পাওয়ারের ১১০ মেগাওয়াট, ভোলাতে পিডিবির ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড পাওয়ার স্টেশন থেকে ১৯০ মেগাওয়াট ছাড়াও একটি বেসরকারী পাওয়ার স্টেশনের ২২৫ মেগাওয়াট এবং পটুয়াখালীতে ইউনাইটেড পাওয়ারের ১৫৫ মেগাওয়াট এবং পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ও তালতলী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে থেকে ৩৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হচ্ছে। এছাড়াও ভোলাতে অপর একটি বেসরকারী উৎপাদন কেন্দ্রের প্রায় ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দ্বীপ জেলাটি ছাড়াও পটুয়াখালীর কিছু এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
কিন্তু দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হলেও এ অঞ্চলে অফ-পিক আওয়ারে পৌনে ৪শ মেগাওয়াট ও পিক আওয়ারে প্রায় সাড়ে ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছেনা ‘সেন্ট্রাল লোড ডেসপাস সেন্টার-সিএলডিসি’ থেকে।
বিষয়টি নিয়ে ওয়েষ্ট জোনের ‘রিজিওনাল লোড ডেসপাস সেন্টার-আরএলডিসি’র সাথে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে কোন মন্তব্য এমনকি কোনো ধরণের তথ্য প্রদান করা হয়নি। তবে বিদ্যুৎ ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন দায়িত্বশীল একটি সূত্র।