3:25 pm , July 28, 2023
স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি ॥ স্বরূপকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স মোসাম্মৎ আফিফার একক দায়িত্বে নরমাল ডেলিভারী করাতে গিয়ে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। প্রসূতি সাদিয়া আক্তারকে নিয়ে অভিভাবকরা তাদের পূর্ব পরিচিত নার্স আফিফার কাছে গেলে তিনি প্রসূতিতে এ্যাপেক্স ক্লিনিকে ভর্তি করেন। কোন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই সাদিয়া আক্তারের নরমাল ডেলিভারী করানোর জন্য নার্স আফিফা চেষ্টা করেন। আফিফার টানা হেছড়ায় বুধবার গভীর রাতে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মৃত নবজাতকের বাবা উপজেলার কৌরিখাড়া গ্রামের ওমর ফারুক সহকারী পুলিশ সুপারের (নেছারাবাদ সার্কেল) কাছে সন্তান হত্যার বিচার দাবী করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে ওমর ফারুক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স আফিফাসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিচার দাবী করেন।
অভিযোগে জানাগেছে, ওমর ফারুকের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার অসুস্থ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স আফিফার সহযোগিতায় বুধবার সকালে এ্যাপেক্স ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নাম রেজিষ্ট্রেশন করার সময় ডাঃ আসাদুজ্জামানের রোগী উল্লেখ করলেও তাদের দালাল নার্স আফিফার তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলে। সকাল থেকে রাত্র ১২টা পর্যন্ত রোগী প্রসব বেদনায় ছটফট করলেও নার্স এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ডাক্তারকে জানায়নি। এরপর রাত গভীর হলে নার্স আফিফা নরমাল ডেলিভারী করানোর জন্য এককভাবে নানা ধরনের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে টেনে হিঁচড়ে নবজাতককে বের করে আনার পরে অক্সিজেন রুমে নিয়ে যায় আফিফা। এসময় অজ্ঞান হওয়া প্রসূতির পাশে থাকা তার শাশুড়ী নাতি দেখতে চাইলে আফিফা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে ক্লিনিক ত্যাগ করে। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে ক্লিনিকের পরিচালক ও প্যারামেডিকেল চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহ রোগীর ঔষধপত্র লিখে দেয় এবং মৃত নবজাতককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এ বিষয় ডাঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ওইদিন অসুস্থ প্রসূতি ভর্তি করানোর বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। তিনি পরের দিন বিষয়টি জেনেছেন। এ্যাপেক্স ক্লিনিকের পরিচালক ডাঃ মো.মাসুম বিল্লাহ বলেন, আফিফাসহ কয়েকজন সিনিয়র নার্স রোগী এনে ভর্তি করার পর নিজেরা তত্ত্বাবধান করেন। ওই নার্সরা বেশি টাকা আয়ের লোভে সহজে ডাক্তারদের জানাতে চায়না। সেইসব নার্সদের ক্লিনিকে ডুকতে দেন কেন জানতে চাইলে মাসুম বিল্লাহ বলেন, ওইসব নার্স এলাকার প্রভাবশালী। ডাক্তারের সাহায্য ছাড়া একক দায়িত্বে ডেলিভারী করাতে গিয়ে নবজাতকের মৃত্যুর বিষয় জানতে চাইলে নার্স আফিফা বলেন, বাচ্চা আগেই পেটের মধ্যে মৃত অবস্থায় ছিলো। সহকারী পুলিশ সুপার (নেছারাবাদ-কাউখালী সার্কেল) সাবিহা মেহেবুবা বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।