4:56 pm , July 21, 2023

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি ॥ ভোলার লালমোহনে বেড়েছে ডাকাতির ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে একটিসহ গত দেড় মাসে উপজেলার কালমা ইউনিয়নেই ৬টি বসতঘরে ডাকাতি হয়েছে। এসব ডাকাত দলের টার্গেট বিত্তশালী ও প্রবাসী পরিবার। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গৃহস্থরা। বৃহস্পতিবার রাতে কালমা ইউনিয়নের আলম বাজার এলাকায় নতুন করে ঘটেছে আরো একটি ডাকাতির ঘটনা। ৮ সদস্যের মুখোশধারী ডাকাতের একটি দল হানা দেয় ওই এলাকার আনোয়ার হোসেন নামের এক স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে। এ সময় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে যায় ডাকাত দল।
শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী মোমেনা হক বলেন, আমার স্বামী বৃহস্পতিবার বরিশাল অবস্থান করছিলেন। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে জানালার গ্রিল কেটে মুখোশধারী ৭-৮ জনের একটি দল ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। তারা ঘরের সকলের হাত এবং চোখ বেঁধে একটি রুমে আবদ্ধ করে রাখেন। ওই ডাকাত দলের সদস্যরা ঘরের আলমেরির চাবি চায়। চাবি না দিলে তারা আমাকে মারধর করে। এরপর তারা নিজেরাই চাবি খোঁজ করে বের করে ঘরে থাকা ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়।
ডাকাতির খবর পেয়ে বরিশাল থেকে বাসায় ফেরেন শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবো।
জানা যায়, এরআগে একই ইউনিয়নের মধ্য কালমা এলাকায় গত ২৯ মে ইসমাইল কবীর নামে এক সৌদি প্রবাসীর ঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ডাকাত দল ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এরপর গত ১৭ জুন ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটে আরো একটি ডাকাতির ঘটনা। এ সময় ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষক নকিব মৃধার ঘর থেকে ডাকাত দল নিয়ে যায় ১৬ ভরির মতো স্বর্ণালংকারসহ নগদ ৭০ হাজার টাকা। এরমাত্র ৫ দিনের মাথায় ২২ জুন কালমা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বগিরচর এলাকায় ঘটে আকতার হোসেন নামে মালয়েশিয়া প্রবাসীর ঘরে আরেকটি ডাকাতির ঘটনা। এ সময় ডাকাত দল নিয়ে যায় ১২ ভরির মতো স্বর্ণালংকার এবং নগদ ত্রিশ হাজার টাকা।
১০ জুলাই রাতে কালমা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আক্তার হোসেন নামে এক ওষুধ ব্যবসায়ীর ঘরে ডাকাতি হয়। এ সময় ডাকাত সদস্যরা নিয়ে যায় নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার। এ ঘটনার পরের দিন ১১ জুলাই রাতে কালমা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মীরা বাড়িতে ৩টি বসতঘরে এক সঙ্গে ঘটে ডাকাতির ঘটনা। এতে ডাকাতির কবলে পড়েন ওই বাড়ির মিজান, শফিকুল ইসলাম এবং রফিক। এই তিনজনের বসত ঘর থেকে নগদ ১ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা এবং ৭ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় ডাকাত চক্র।
একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কালমা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে একটিতে। বাকিগুলোতে কেবল চুরির মামলা নেয় পুলিশ। আবার আসামি গ্রেফতারেও তৎপরতা নেই পুলিশের। পুলিশর আন্তরিক হলে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটতো না।
এসব ডাকাতির বিষয়ে লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহুরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, এরআগে একটি ডাকাতির ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায়ও মামলা নেওয়া হবে। পুলিশ আসামি গ্রেফতারসহ ঘটনা অনুসন্ধানে সচেষ্ট রয়েছে।