4:41 pm , July 19, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গৌরনদীতে স্বামীর বিরুদ্ধে পালক পুত্রকে হত্যার অভিযোগ করেছে স্ত্রী। তবে স্বামীর দাবি ডোবার পানিতে ডুবে ছেলের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ মৃত্যুর কারন উদঘাটনে শিশুর ময়না তদন্তের ন্য পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় গৌরনদী মডেল থানায় করা হয়েছে অপমৃত্যুর মামলা। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক মো. হেলালউদ্দিন জানান, উপজেলার শরিকল ইউনিয়নের মিয়ার চর গ্রামে মঙ্গলবার বাড়ির পাশের ডোবা থেকে ৭ বছর বয়সী শিশু তানজিমুল ইসলাম ফাহিমের লাশ উদ্ধার করা হয়। শিশুর মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার করে মঙ্গলবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে শিশুর মৃত্যুর কারন বলতে পারবো। শিশু ফাহিমকে মিয়ার চর এলাকার নি.সন্তান এনামুল হক চৌকিদার ও ফেরদৌসি বেগম দম্পত্তি দত্তক নিয়েছেন। এনামুল দ্বিতীয় বিয়ে করায় ফেরদৌসির সাথে তার বিচ্ছেদ হয়েছে। শিশু ফাহিম এনামুলের সাথে থাকতো বলে শরিকল তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো. শাহিন জানিয়েছেন। বর্তমানে শিশুর লাশ নিয়ে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে থাকা এসআই মো. শাহীন শিশুর পরিবারের বরাতে বলেন, মঙ্গলবার সকালে বাড়ির উঠানে খেলতে ছিলো। কিছুক্ষন পর তাকে দেখতে না পেয়ে খোজা খুজি শুরু করেন। পরে বাড়ির পিছনে ডোবায় ভেসে থাকা শিশুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেছেন। শিশুর লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন এসআই শাহীন। তিনি আরো জানান, সুরতহাল প্রতিবেদনও তিনি করেছেন। শিশুর শরীরে কোন আঘাতের চিহৃ নেই। পানিতে ডুবে না অন্য কোন কারনে মৃত্যু হয়েছে , তা ময়না তদন্ত প্রতিবেদন না এলে বলতে পারবো না। শিশুর পালক মা ফেরদৌসি বেগম জানান, এনামুল ও তার ১৫ বছরের দাম্পত্যে জীবনে কোন সন্তান নেই। তাই সাত বছর পূর্বে ফাহিমকে পালক সন্তান হিসেবে নেন। তারপরেও স্বামী এনামুল গোপনে আরেকটি বিয়ে করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ হয়। ত ১৫ জুলাই তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। পুত্র ফাহিমকে ওই দিনই ফেরদৌসীর কাছ থেকে নিয়ে আসে এনামুল। সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে গিয়েছেন জানিয়ে ফেরদৌসি বলেন, আমার ফাহিমকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে। তিনি ফাহিমের মুখে দুধ ভাত দেখতে পেয়েছেন জানিয়ে দাবি করেন, খাবারের সাথে বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পানিতে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে এমন কোন লক্ষন দেখতে পাননি তিনি। হত্যা ধামাচাপা দিতে ফাহিমকে পানিতে ফেলে দিয়েছেন এনামুল ও তার পরিবারের লোকজন বলে দাবি করেছেন ফেরদৌসি। শরিকল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খাইরুল ইসলাম বলেন, আমি জানতাম ছেলেটি তাদের। কয়েক সপ্তাহ পূর্বে জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়েছে। তখন জানতে পেরেছি ছেলেটি পালতে এনেছে। হাসপাতাল থেকে এনেছিলো। কোন হাসপাতাল থেকে এনেছে তা জানায়নি। ইউপি সদস্য খায়রুল আরো বলেন, খবর পেয়ে তিনি গিয়েছেন। পানিতে ডুবে মারা মারা যাওয়ার লক্ষন নেই। যে ডোবায় তার লাশ পাওয়া গেছে, সেই ডোবার পানি উচ্চতা শিশুর চেয়ে কম। পানিতে ডুবে মারা গেলে নাক-কান দিয়ে রক্ত বের হয়। মুখ দিয়ে লালা বের হয়। কিন্তু শিশুর ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন চিহৃ নেই। পানিতে ডুবলে বাঁচার জন্য চেষ্টা করবে। সেক্ষেত্রে তার হাতে-পায়ে কাদা থাকা থাকবে। কিন্তু তাও নেই। শিশুর লাশ ময়না তদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে সঠিক কারন অবশ্যই জানা যাবে।