3:54 pm , July 5, 2023
বরিশালে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে ডেঙ্গু পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগে ৪৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে শুধু বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন এবং পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন ভর্তি হয়েছেন। তবে বিভাগের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে বর্তমানে ( বুধবার পর্যন্ত) ১৪০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বিভাগের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় শেবাচিম হাসপাতাল বাদে বরিশাল জেলার বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে ৪ জন, পিরোজপুর জেলায় ৭ জন, বরগুনায় ৪ জন এবং ভোলায় ২ জন ভর্তি হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। উপজেলা পর্যায়েও রোগীদের সরকারীভাবে মশারী সরবরাহসহ ডেঙ্গু পরীক্ষায় করণীয় সব কিছুইকরা হচ্ছে। চিকিৎসা নিয়ে সংকট নেই। আমাদের সবাইকে শুধু বাড়তি সর্তক থাকবে হবে। তিনি আরো বলেন, আমদের আশঙ্কা সামনে বরিশালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এটা নিয়ে আতংকের কিছু নেই। সবাই এই রোগ সৃষ্টির বিষয়ে সচেতন হলে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। স্বাস্থ্য বিভাগ মানুষকে সচেতন করতেও কাজ করছে বলে জানান তিনি।
পরিসংখ্যান বলছে বিভাগে চলতি মৌসুমে (গতকাল পর্যন্ত) ৭১২ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৭১ জন চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছে। চিকিৎসাধীন আছে ১৪০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে একজনের।
এদিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। মঙ্গলবারের রিপোর্ট অনুযায়ী এই হাসপাতালে ৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি সরকারীভাবে মশারী সরবরাহে রয়েছে নানা অভিযোগ। তবে নানা সংকটের মধ্যেও ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম।
চিকিৎসাধীন রোগীরা জানান, চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মশারি দেয়া হতো না। দু’দিন আগে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কিছু সংখ্যক ডেঙ্গু রোগীকে মশারি দেয়া হলেও এখনো অনেকে মশারিবিহীন চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সন্দেহজনক ডেঙ্গু রোগী ও সাধারণ রোগীরা জানান, ডেঙ্গু মশা বাহিত রোগ। অথচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেক রোগী এখনও মশারি পায়নি। মশারিবিহীন ডেঙ্গু রোগীদের শরীরে বসা মশা অন্য কারো শরীরে বসলে তারও ডেঙ্গুর ঝুঁকি থাকে। মেডিসিন ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগী রাখায় আতঙ্কে রয়েছেন ওই ওয়ার্ডের সাধারণ রোগী এবং তাদের স্বজনরা। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থান সংকটের কারণে ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা স্থানে চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম। সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে ডেঙ্গু রোগীদের যাবতীয় সমস্যা সমাধানসহ তাদের চিকিৎসায় সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাসে ডেঙ্গু সন্দেহে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫১ জন রোগী। জুন মাসে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৪৯ জন।