3:48 pm , July 4, 2023
রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি ॥ ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী বেনজির জাহান মুক্তাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মো. সোহাগ মীর (২৮) নামে এক যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একই সাথে সোহাগ মীরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় জেলা দায়রা জজ মেহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রুস্তম আলী খান রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত সোহাগ মীর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের আনিপাড়া গ্রামের সোবাহান মীরের ছেলে। সে ঢাকার একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের কাজ করতো। আদালতে মামলার নথি পর্যবেক্ষন ও পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল মান্নান রসুলের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বারইকরণ গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদারে মেয়ে ঝালকাঠি সরকারী মহিলা কলেজের বিএ প্রথমবর্ষের ছাত্রী বেনজীর জাহান মুক্তা (১৯) এর সাথে মোবাইল ফোনে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় সোহাগ মীরের। কিছুদিন সম্পর্ক চলার পর তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরী হয়। ঘটনার দিন ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে সোহাগ ঢাকা থেকে এসে মোবাইল ফোনে মুক্তাকে তাদের বাড়ির কাছে কাপুড়িয়া বাড়ির নতুন রাস্তার কাছে ডেকে আনে দেখা করার জন্য। মুক্তা ঘটনাস্থলে দেখা করা জন্য এলে কথাবার্তা বলার এক পর্যায় সোহাগ মীর চাকু দিয়ে মুক্তার গলায় একাধিক আঘাত করে । মুক্তা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সোহাগ পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা মুক্তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার দিন রাতে নিহত মুক্তার বাবা জাহাঙ্গীর হাওলাদার বাদী হয়ে নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার তিনদিন পর ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নলছিটি থানা পুলিশ ডিবি পুলিশের সহায়তায় পটুয়াখালী জেলার কলাপড়া উপজেলার চাকামাইয়া গ্রামের ফুপু বাড়ি থেকে সোহাগ মীরকে গ্রেফতার করে নলছিটি নিয়ে আসে। পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি সোহাগ মীরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। ২০২০ সালের ৫ মার্চ নলছিটি থানার পরিদর্শক আব্দুল হালিম তালুকদার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসলে ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আসামীর কিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। ৫৩ কার্যদিবসে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়ালিউল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন।