4:12 pm , July 3, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নামের মিল থাকায় যৌতুক মামলায় ভুল গ্রেপ্তারের শিকার হলেন মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার (২৭)। ৩দিন কারাভোগও করেছেন তিনি। বাকেরগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার শিকার সিরাজুল ইসলাম ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন। তিনি বাকেগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের চরবোয়ালিয়া গ্রামের মেনহাজ হাওলাদারের ছেলে। ঈদুল আযহা উদযাপন করতে বাড়িতে এসেছিলেন সিরাজুল। গত শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার প্রকৃত আসামী একই গ্রামের আরেক সিরাজুল ইসলাম- এটা আদালতে নিশ্চিত করার পর রোববার বিকাল ৫টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান নির্দোষ সিরাজুল।
সিরাজুল জানান, তার পিতা ও প্রকৃত আসামী সিরাজুল ইসলামের পিতার নাম ও বংশ একই। তাদের ঠিকানাও একই গ্রাম। শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন বাকেরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক মো. কিবরিয়া। পরে জানতে পারেন সোনিয়া নামক এক গৃহবধুর যৌতুক মামলার আসামী তিনি। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকালে কারাগারে প্রেরন করা হয়।
সিরাজুল বলেন, গ্রেপ্তারের পর স্বজনরা মামলার কাগজপত্র তুলেন। এতে দেখা যায় আসামী সিরাজুল ইসলাম ছাড়া অন্য আসামীরা অচেনা। পরে গ্রামের মুরুব্বীদের সহযোগীতায় প্রকৃত আসামী সিরাজুল ইসলামের সন্ধান পান। এই সিরাজের ছেলে হাসানের স্ত্রী সোনিয়া ২০১৯ সালে মামলাটি দায়ের করেছেন। নির্দোষ সিরাজ জানান, তিনি বিয়ে করেছেন ২০২০ সালে।
মামলার অপর দুই আসামী হলেন হাসান ও তার মামা ফারুক। এসব কাগজপত্র আদালতে দাখিলের পর নিরীহ সিরাজকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আব্দুর রাজ্জাক জানান, আসল আসামী সিরাজুল ইসলাম এলাকার জামাই। গ্রামে তার পরিচিতি নেই। রাজ্জাক বলেন, তিন বছর যাবত বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ তার কাছে যৌতুক মামলার ওয়ারেন্ট আসামী সিরাজের সন্ধান চাচ্ছিল। তিনি আসামীর পিতার নাম ও বংশের মিল অনুযায়ী একমাত্র ঢাকায় মসজিদে চাকুরীরত সিরাজের সন্ধান পান। গত শুক্রবার তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে আসল সিরাজের সন্ধানে নামেন। গ্রাম পুলিশ জানান, মামলার অপর আসামী ফারুকের সন্ধান পাওয়ার পর রহস্য উদঘাটন হয়। ফারুক জানিয়েছেন, তার ভগ্নিপতি সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাসানের স্ত্রী সোনিয়া ওই মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার অন্য আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। একমাত্র সিরাজুল ইসলাম জামিন নেননি। দুই সিরাজের বাড়ির দুরত্ব ২কিলোমিটার।
নির্দোষ সিরাজকে গ্রেপ্তার করা উপ পরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি প্রকৃত আসামী সিরাজকেই গ্রেপ্তার করেছেন। আদালত কিসের ভিত্তিতে তাকে মুক্তি দিয়েছেন তা তার জানা নেই।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি এসএম মাকসুদুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারী পরোয়ানা অনুযায়ী সিরাজ নামক এক আসামীকে এসআই কিবরিয়া গ্রেপ্তার করেছিলেন। তাকে আদালতের প্রেরনের পর জানা যায় ওই গ্রামে একই পিতার নামে আরেকজন সিরাজ আছেন। গ্রেপ্তার সিরাজ জামিন পেয়ে থানায় এসেছিল। তিনি জানিয়েছেন, সে আসামী সিরাজ নয়। বোয়ালিয়া গ্রামে অপর সিরাজের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।