2:43 pm , June 27, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশু ক্রয়ের পর এবার মাংস কাটার জন্য দা, ছুরি, চাকুর পাশাপাশি শেষ মুহূর্তে মাংস ভাল থাকার জন্য গাছের গুঁড়ি বিক্রির ধুম পড়েছে। পশু জবাইয়ের পর পরিচ্ছন্নভাবে মাংস ভাগ-বাটোয়ারা টুকরা করতে গাছের গুঁড়ি বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সর্বত্রই এর কদর বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্যে তেঁতুল গাছের গুঁড়ির কদর রয়েছে সবচেয়ে বেশি। ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে বরিশালে সর্বত্র গাছের গুঁড়ির চাহিদা বাড়ছে। হাট বাজারে কিংবা নগরীর বিভিন্ন রাস্তার পাশে এসব গাছের গুঁড়ির পসরা সাজিয়ে বসে বিক্রি করছেন মৌসুমি বিক্রেতারা। নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে এসব গুঁড়ি ক্রয় করছেন। গাছের গুঁড়ি মূলত তেঁতুল, নিম, করইসহ বিভিন্ন গাছের হয়। এরমধ্যে ক্রেতাদের কাছে তেঁতুল গাছের গুঁড়ি রয়েছে সবার উপরে। এক একটি গাছের গুঁড়ি ১ফুট বা সোয়া ফুট লম্বা রাখা হয়। প্রতিটি গাছের গুঁড়ি ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরিশালের একাধিক ‘স’মিল মালিক জানান, সব গাছ দিয়ে গুঁড়ি তৈরি করা যায় না। তেঁতুল গাছের গুঁড়ি সব চেয়ে ভালো হয়। আর তেতুঁল গাছ ছাড়া অন্য গাছ দিয়ে খাটিয়া তৈরি করলে মাংসের সঙ্গে গাছের গুঁড়ি উঠে মাংসের মান নষ্ট হয়ে যায়।
আর এই গাছের গুঁড়ি সহজে নষ্ট হয় না। কাজ শেষে পরিষ্কার করে যতœ করে রাখলে বহুদিন থাকে। তাই ঈদুল আজহা আসলেই সবার কাছে তেঁতুল গাছের গুঁড়ির চাহিদা বেড়ে যায়।তারা আরো জানান, এখন আর আগের মতো তেমন বেশি তেঁতুল গাছ পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও অতিরিক্ত দামে ক্রয় করতে হয়। তারপর ‘স’মিলে নিয়ে খন্ড খন্ড করে গুঁড়ি তৈরি করে বিক্রি করা হয়।
মৌসুমি তেঁতুল গাছের গুঁড়ি বিক্রেতা নগরীর হাটখোলা এলাকার বাসিন্দা রাজা মিয়া বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে গুঁড়ির কদর বেড়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ছোট, মাঝারি ও বড় তিন ধরনের গুঁড়ি তিনি তৈরি করে বিক্রি করছেন। তার কাছে বেশি বিক্রি হচ্ছে তেঁতুল গাছের গুঁড়ি। এক একটি গুঁড়ি ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
বরিশাল নগরীর ৫নং ওয়ার্ড এলাকার বাবুল নামের এক যুবক বলেন, গরু কেনা শেষ। শুধু বাকি ছিল গাছের গুঁড়ি কেনার। তেঁতুল গাছের গুঁড়ি ভালো হওয়ায় ২৫০ টাকায় একটি ক্রয় করা হয়।
আরো জানান, কোরবানির পশু জবাইয়ের পর চামড়া ছাড়ানোর পর পরিচ্ছন্নভাবে গোশত কাটার জন্য গাছের গুঁড়ি ভালো হয়। তাই বড় আকারের একটি তেঁতুল গাছের গুঁড়ি ৩০০ টাকায় কেনা হয়েছে।
স্বরুপকাঠী থেকে আসা কাঠ ব্যবসায়ী জলিল বলেন, গত কয়েক বছর ধরে তেঁতুল গাছ পাওয়া বড়ই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। ফলে তেঁতুল গাছের তৈরি গুঁড়ির দাম একটু বেশি নেয়া হচ্ছে। এখন মানুষ খুবই সচেতন। সবাই চায় পরিচ্ছন্নভাবে মাংস বানাতে।
অপর দিকে নগরীর স্বরোড ও নাজিরপুলে পরিমল বসেছেন হোগলা নিয়ে এবার নাকি হোগলার দাম একটু বেশি। বিভিন্ন চরাঞ্চলে তেমন হোগলা না জন্মানোর কারনে ঠিকমত হোগল পাতা পাওয়া যাচ্ছে না।
তাই তারা বিভিন্ন উপকুলীয় এলাকা থেকে হোগলপাতা ক্রয় করে আনা ও বোনা পর্যন্ত খরচের পরিমান বেড়ে গেয়ে ফলে বড় সাইজের একটি হোগলা বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। আর মাঝারি সাইজেরটা বিক্রি করতে হচ্ছে ২০০টাকা।