2:42 pm , June 27, 2023
আরিফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিবেদক ॥ জমে উঠেছে বরিশাল নগরীর প্রায় সবকটি গরুর হাট। প্রচুর গরু এসেছে বাজারে। কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ অঞ্চল থেকেও গরু এসেছে। কিন্তু সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে জবুথবু অবস্থা সব গরুর হাটে। বৃষ্টিতে ক্রেতাও অনেক কম দেখা গেছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের তিনটি হাটেই। যে কয়েকজন ক্রেতা আছেন, তারাও ঘুরে দেখছেন শুধু। দর যাচাই করছেন। তাদের অভিযোগ, গরুর দাম অনেক বেশি। স্থায়ী হাট বাঘিয়ার বিক্রেতা সুমন বলেন, দাম বেশি আমরাও স্বীকার করি। এ বছর কুষ্টিয়া থেকে ১১ টি গরু এনেছি গত বছরের তিনগুণ বেশি দাম দিয়ে। ৩৫ টাকার ভূষি এখন ৬৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কি করবো আপনারাই বলুন?
এ প্রশ্নের উত্তর নেই ক্রেতা বা প্রশাসনের কারো কাছে। তবে বাঘিয়া বাজারে গরুর আসিলও বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতার। এদিকে নগরীর রুপাতলীর দপদপিয়া ব্রীজের নীচেও মোটামুটি গরু দেখা গেছে মঙ্গলবার বিকেলে। তবে টেক্সটাইল বালুর মাঠের তুলনায় তা অনেক কম। সিটি করপোরেশনের তিনটি হাটেই ছোট গরুর দাম তুলনামূলক বেশি বলে জানালেন ক্রেতাদের অনেকে। একটি লাল সাদা সোপের স্বাস্থ্যবান গরু নিয়ে ঘরে ফিরতে ফিরতে নবগ্রাম রোড সংলগ্ন সার্কুলার রোডের ফকির বাড়ির বাসিন্দা মুরাদ হোসেন জানালেন, তিনি সিটি করপোরেশনের তিনটি ও সদর উপজেলার চরমোনাই হাটে ঘুরে এসেছেন। চরমোনাই থেকে এই গরুটি এক লাখ আশি হাজার টাকায় কিনেছেন। সেখানে কোনো হাসিল দিতে হয়নি। অথচ সিটি করপোরেশনের হাট থেকে কিনলে এই গরুর জন্য এক্সট্রা ছয় হাজার টাকা হাসিল দিতে হতো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সিটি করপোরেশনের তিনটি হাটে ছাগল ৫০০ টাকা আর গরু লাখের নীচে হলে ১৫০০ টাকা ও লাখে তিন হাজার টাকা হাসিল দিতে হয়। বাঘিয়া, টেক্সটাইল ও ব্রীজ তিনটি হাটেই গরুর দাম লাখের উপরে। কোথাও লাখের নীচে কোনো গরু দেখা যায়নি। ছোট আকৃতির হৃষ্টপুষ্ট (৩/৪ মন) গরুর দাম এক লাখ বিশ হাজার সর্বনি¤œ। আর বড় সাইজের হৃষ্টপুষ্ট ( ৮/১০ মন) গরুর দাম সর্বোচ্চ দুই লাখ চল্লিশ হাজার টাকা। ভাগীদার ক্রেতাদের তাই বড় গরুই পছন্দ। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বরিশাল জেলার স্থায়ী ২২টিসহ প্রায় ৬৫টি বাজারেই ক্রেতার উপস্থিতি কম বলে জানালেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল আমিন। বাঘিয়া বাজারে গরুর অবস্থা পরিদর্শনরত অবস্থায় তিনি জানান, জেলার সব পশুর হাটেই ভাসমান পশু চিকিৎসক রাখা হয়েছে। বৃষ্টিতে কাঁদা হওয়ার কারণে পশুদের পায়ে সমস্যা হতে পারে। তাই তারা সচেতন অবস্থানে রয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, বৃষ্টির কারনে ক্রেতা কম হলেও আজ রাত ও আগামীকালের মধ্যেই সব পশু বিক্রি হয়ে যাবে। চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট বেশী গরু রয়েছে জেলায়, তবে পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরুর দামও বৃদ্ধি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নগরীসহ জেলায় ৯৯ হাজার ৩৮৪টি চাহিদার বিপরীতে পশু রয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৭০৪টি। এর মধ্যে গরু ৮৬ হাজার ৫৯২টি, মহিষ ৬৪৪, ছাগল ২১ হাজার ৪১৮টি এবং ভেড়া ৬০টি।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ঈদের দিনও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বৃষ্টি হলে জেলা প্রশাসকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মডেল মসজিদে ঈদের নামাজের জামাত আদায় করবেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল মারুফ।