4:11 pm , June 25, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ যানজট আর ভাঙা সড়কের কাঁদা পানিতে এই মুহূর্তে ভয়ংকর দূর্বিসহ জীবনযাপন করছেন নগরীর বাসিন্দারা। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়কে যানবাহনের চাপ যেমন বেড়েছে তেমনি পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ইজিবাইক ও অটোরিকশার সংখ্যা। নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘ যানজট এখন প্রতিদিনের সহনীয় চিত্র। কিন্তু এই সহনীয় চিত্রকে আরো বেশি দূর্বিষহ করে অভ্যন্তরীণ সড়কের আধাআধি কাজ। নগরীর প্রায় ১০/১২টি সড়কের কাজ শুরু করেছিলো সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ গত ঈদুল ফিতরের আগে। এখন পর্যন্ত সেসব সড়কে আধাআধি কাজ হয়ে পড়ে আছে। বৃষ্টির আগমনে এই কাজ এখন অনিশ্চিত। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছেন আগামী মাসের মধ্যেই শেষ হবে সব কাজ। তবে বেশিরভাগ রাস্তার কাজ দু’মাস ধরে বন্ধ আছে। এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে সিএনজি, অটোরিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা এখন প্রায় পাঁচগুন বেড়েছে। জেলখানা মোড়, বটতলা, নতুন বাজার ও বাংলা বাজার এলাকা এখন সার্বক্ষনিক যানজটে আটকে থাকে। কোথাও কোথাও ট্রাফিক পুলিশ শত চেষ্টা করেও যানজট কমাতে পাড়ছে না। সদর রোডের লুকাস এবং জেলখানা মোড়ে তিনজন করে ট্রাফিক দিয়ে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না বলে স্বীকার করলেন স্বয়ং ট্রাফিক কর্মকর্তাই। ট্রাফিক পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত বললেন, এই যানজট নিরসনে মহাসড়ক ট্রাফিক সফল হলেও সিটিতে আমরা সফল নই। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। সিটি করপোরেশনকে এটা আগে ঠিক করতে হবে। নগরীতে কতগুলো ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলবে। একমাস আগেও যেখানে বারো হাজার ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচল করতো এখন তা পনেরো হাজারে ছাড়িয়েছে ও প্রতিদিনই নতুন নতুন গাড়ি য্ক্তু হচ্ছে সড়কে । এ সময় দুজন ট্রাফিক কনস্টেবল নগরীর চৌমাথা এলাকায় যানজট সামলাতে হিমসিম খেতে খেতে বলেন, এজন্য ডা. মনীষা চক্রবর্তীও দায়ী। তার প্রশ্রয়ে ইজিবাইক ও অটোরিকশার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। কোনোটাকে আটকালেই তিনি ছুটে আসছেন। একইসাথে তারা সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স প্রলোভনকেও দায়ী করেন। বলেন, লাইসেন্স দেয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে দিলে আমরা নিশ্চিত হতে পারতাম কারা নগরীতে চলতে পারবে। এখন যাকেই আটকাই সে একটা রিসিট দেখিয়ে বলে আমিতো লাইসেন্সের জন্য টাকা জমা দিয়েছি।
ট্রাফিক কনস্টেবল আরো বলেন, আবার আপনাদের সাংবাদিকরাও ছুটে আসছেন। শ খানেক ইজিবাইক ও অটোরিকশা আপনাদের সাংবাদিকদেরই বলে জানান এই ট্রাফিক কনস্টেবল।
এসময় অবৈধ চলাচলের অভিযোগে বেশ কয়েকটি ইজিবাইককে মামলাও দিতে দেখা যায়।
তবে ইজিবাইকের চেয়ে নগরবাসীর আতঙ্ক অটোরিকশাগুলো নিয়ে। এগুলো বন্ধ করে দেয়ার দাবী তোলেন নগরীর ১০ জন বাসিন্দার ১০ জনই। এজন্য প্রয়োজনে ডা. মনীষার বিরুদ্ধে মামলা করারও কথা বলেন তারা। এদিকে সিটি করপোরেশন আওতাধীন প্রায় সব সড়কের বেহাল দশায় ভোগান্তিতে নগরবাসী। এই বর্ষা মৌসুমে সড়কে আধাআধি কাজ হয়ে পড়ে থাকায় তাদের ভোগান্তির শেষ নেই বলে অভিযোগ জানিয়েছেন নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ড খালপাড় সড়ক, ২০ নং ওয়ার্ড বৌদ্ধপাড়া সড়ক, ২৮ নং ওয়ার্ড এম রহমতুল্লাহ সড়ক, ১ নং ওয়ার্ড খালপাড় সড়ক, ২০ নং ওয়ার্ড বিএম কলেজ সংলগ্ন প্রফেসর গলি ও কলেজ এভিনিউ, ২১ নং ওয়ার্ড অক্সফোর্ড মিশন সড়ক, গোরস্থান রোড, ১০ নং ওয়ার্ড জর্ডান রোড (২য় লেন) এর বাসিন্দারা। এসব সড়কের প্রতিটি এখন রাতে চলাচলের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, সিটি নির্বাচন উপলক্ষে কয়েকটি সড়কে কাজ বন্ধ ছিলো, এখনতো সবগুলোই চলমান থাকার কথা। খুব ভালো হবে এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার বাসারের সাথে কথা বললে। তিনিই এখন এ বিষয়গুলো দেখছেন বলে জানান লিটু।
সিটি করপোরেশন ভবনে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাসারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, তিনি একজন সহকারী প্রকৌশলী। তবে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসাবে পরিচিত পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী স্বপন কুমার দাস জানান, সব কাজ চলমান রয়েছে। অল্পদিনেই সব কাজ শেষ করা হবে। অটোরিকশা সম্পর্কে বলেন, সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স পাবে শুধু পাঁচ হাজার ইজিবাইক। অটোরিকশা এ তালিকায় নেই বলে জানান স্বপন।