মূল্যস্ফিতির সাথে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাসের বিরুপ প্রভাব কোরবানির বাজারে মূল্যস্ফিতির সাথে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাসের বিরুপ প্রভাব কোরবানির বাজারে - ajkerparibartan.com
মূল্যস্ফিতির সাথে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাসের বিরুপ প্রভাব কোরবানির বাজারে

3:59 pm , June 24, 2023

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল অঞ্চলজুড়ে গত তিন বছরের করোনা মহামারী সংকটের সাথে নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির হাত ধরে অর্থনৈতিক টানাপোড়নের বিরুপ প্রভাব পড়ছে ঈদুল আযহার বাজারে। ঈদের মাত্র ৪ দিন বাকি থাকলেও এ অঞ্চলে পশু কোরবানির হাট এখনো জমজমাট নয়। অথচ এ অঞ্চলের ৪০ লক্ষাধিক গাবাদি পশুর বিশাল ভান্ডারের মধ্যে এবার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ কোরবানির পশু মজুদ রয়েছে । প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের মতে, এবার ঈদুল আযহায় বরিশাল বিভাগে সম্ভাব্য পশু কোরবানির হিসেব ধরা হয়েছে ৪ লাখের কিছু বেশি। এর পরেও অর্ধ লক্ষাধিক কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। তবে কোরবানির সব ধরনের পশুর দাম এবার ২৫-৩৫ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খামারি সহ গরুর বেপারীরা। ফলে কোরবানির পশু কেনার ক্ষমতা হারাচ্ছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। এমনকি খামারিরা সারাবছর ধরে লালন পালন করে গরু মোটা তাজা করে অনেক আশা নিয়ে কোরবানির হাটে নিলেও এবার বড় গরুর ক্রেতা খুবই কম।  বড় মাপের পশুর ক্রেতা না থাকায় হতাশ খামারিরা এবার বরিশাল থেকে অনেক গরু ঢাকায়ও পাঠাচ্ছেন। মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবীদরা।
গত কয়েকদিন বরিশালের কোরবানির পশুর হাটগুলো ঘুরে ক্রেতার খরা লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলের পশুর হাটগুলো খুব একটা জমে উঠতে দেখা যায়নি। তবে গরুর বেপারীরা যথেষ্ট আশাবাদী। তাদের মতে ক্রেতারা এখনো দাম দেখছেন। অনেকে দরদামও করছেন। তবে কোরবানির পশু বিক্রি জমজমাট না হলেও মঙ্গল ও বুধবার এ অঞ্চলে জমজমাট বেচাকেনা চলবে।
কয়েক বছরের অর্থনৈতিক সংকটের সাথে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বরিশাল অঞ্চলের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা অনেকটা হ্রাস পাওয়ায় এবার কোরবানি করার সক্ষমতা হারিয়েছেন অনেকেই। ফলে এবার কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে এক ধরনের চাপা অনিশ্চয়তা রয়েছে গরুর খামারি সহ বেপারীদের মাঝে।
নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নি¤œ মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সব চাওয়া পাওয়া ও হিসেব নিকেশ ওলট পালট করে দিয়েছে। অনেকেই বলেছেন, ‘আগে পরিবার পরিজন নিয়ে তিনবেলা খেয়ে বাঁচি, পরে কোরবানির চিন্তা করা যাবে’। গত বছর এ সময়ে বরিশালে যে চিনির কেজি ছিলো ৭০-৭৫ টাকা তা এখন ১৩০ টাকা। ৩৫ টাকার দেশী পেয়াজের কেজি শনিবারে ছিলো ৭০-৭৫ টাকা। ৮০ টাকার দেশী রসুন এখন ১৪০ টাকা, একশ টাকার দেশী আদা শনিবারে বিক্রি হয়েছে ২৮০ টাকায়।  গত বছর এসময়ে ২০ টাকার গোল আলু এখন ৪০ টাকা কেজি। দেড়শ টাকার সয়াবিন তেলের লিটার এখন ১৯৫ টাকা।
মসলার বাজারেও আগুন লেগেছে। দারুচিনি, এলাচ, জিরা, লবঙ্গ থেকে শুরু করে প্রতিটি মসলা জাতীয় পণ্যের দাম গত এক মাসে বেড়েছে ২৫Ñ৪০ ভাগ পর্যন্ত। এমনকি এ অঞ্চলের মানুষের পোলাও খাবার আশা অনেকটাই দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়েছে। গত বছর যে চিনিগুড়া চালের কেজি ছিলো ১২০ টাকা এবার তা ১৬০ টাকার কম নয়। ফলে নি¤œ থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারে সন্তান-সন্ততির মুখে বছরে যে দুটি ঈদে একটু পোলাও-গোশত তুলে দেয়ার প্রবনতা ছিলো এবার তা সম্ভব নাও হতে পারে। যদিও গত এক মাসে সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
এবার ভাল মানের ঘি প্রায় দেড় হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  যা গত বছর একই সময়ে ছিলো ১১শ থেকে ১২শ টাকা কেজি। অথচ মৎস্য ও প্রানি সম্পদ অধিদপ্তর বরিশালকে গোশত, ডিম ও দুধে উদ্বৃত্ত বলে দাবী করে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT